ব্রাজিলে কার্নিভাল, জিকার ভয়ে বারণ চুমুতেও

জিকার আতঙ্ক ভুলে পাঁচ দিনের জন্য কার্নিভালে মেতে উঠতে চলেছে ব্রাজিল। তবে প্রেসিডেন্টের আর্জি, ‘দয়া করে অন্তঃসত্ত্বারা কাউকে চুমু খাবেন না।’ গবেষকেরা আগেই জানিয়েছিলেন শুধুমাত্র মশার কামড়ই নয়, যৌন মিলন এবং রক্তের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে জিকা ভাইরাস।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

রিও ডি জেনেইরো শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০২:১০
Share:

সাম্বার সাজে। শনিবার সাও পাওলোতে।—এএফপি

জিকার আতঙ্ক ভুলে পাঁচ দিনের জন্য কার্নিভালে মেতে উঠতে চলেছে ব্রাজিল। তবে প্রেসিডেন্টের আর্জি, ‘দয়া করে অন্তঃসত্ত্বারা কাউকে চুমু খাবেন না।’

Advertisement

গবেষকেরা আগেই জানিয়েছিলেন শুধুমাত্র মশার কামড়ই নয়, যৌন মিলন এবং রক্তের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে জিকা ভাইরাস। সম্প্রতি দু’জন রোগীর লালা এবং মূত্র পরীক্ষা করে পাওয়া গিয়েছে ওই ভাইরাস। আর তাতেই কপালে ভাঁজ পড়ে গিয়েছে গবেষকদের। কারণ, লালার মাধ্যমে সংক্রমণ হলে চুমু খেলেও ছড়াবে জিকা। আর ব্রাজিলের কার্নিভাল তো নাচগানের পাশাপাশি চুমু খাওয়ারও উৎসব। শুধু প্রেমিক-প্রেমিকাই নয়, এই উৎসবে অচেনা লোককেও চুমু খাওয়া যায়। তাই চিন্তায় পড়ে গিয়েছে ব্রাজিল সরকার। অচেনা জিকা রোগীকে চুমু খেয়ে অন্তঃসত্ত্বা মহিলারা ওই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে। তাই দেশের প্রেসিডেন্টের আবেদন, ‘‘অন্তঃসত্ত্বা মহিলারা পারতপক্ষে ভিড়ে বেরোবেন না। আর কাউকে চুমু খাবেন না।’’

আরও পড়ুন- ভয়ঙ্কর জিকাকে চিনতেই লেগে গিয়েছিল দু’বছর

Advertisement

এই ভয়ঙ্কর রোগটি অবশ্য শুধু ব্রাজিলে আটকে নেই। শনিবার স্পেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, কলম্বিয়া থেকে সদ্য দেশে ফেরা এক মহিলার দেহে জিকা ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। তিনি অন্তঃসত্ত্বা। কলম্বিয়ায় থাকাকালীনই ওই রোগে মহিলা আক্রান্ত হন বলে মনে করছেন স্পেনের চিকিৎসকেরা। ইউরোপে এই প্রথম জিকা-আক্রান্তের খোঁজ মিলল। স্পেনের আরও সাত জন জিকায় আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। শনিবারই জিকায় আক্রান্ত তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে কলম্বিয়া প্রশাসন। সে দেশের ‘ন্যাশনাল হেলথ ইনস্টিটিউট’-এর তরফে জানানো হয়েছে, জিকায় আক্রান্ত হওয়ার পরে ওই তিন জন ‘গুলেন-বার সিনড্রোম’ নামের এক বিরল স্নায়ুরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এই রোগে স্নায়ুতন্ত্র এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে রোগী পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হতে পারে। এমনকী ব্রেন ডেথ হওয়াও অস্বাভাবিক নয়। যেমনটা ঘটেছে ওই তিন জনের ক্ষেত্রে। তাই জিকা কেবল অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের ক্ষেত্রে ভয়ঙ্কর, আর বাকিদের ক্ষেত্রে নিরীহ সর্দি-জ্বর— এই তত্ত্ব মিথ্যা প্রমাণিত হতে চলেছে বলেই মনে করছেন কলম্বিয়ার ‘ন্যাশনাল হেলথ ইনস্টিটিউট’-এর চিকিৎসকেরা।

দক্ষিণ আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশে গর্ভপাত আইনত নিষিদ্ধ। তাই জিকায় আক্রান্ত অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের গর্ভপাত করানোর যে নিদান ‘হু’ দিয়েছে তা মেনে নিতে পারছে না এল সালভাডরের মতো দেশ। সেখানে মায়ের জীবন সংশয়ের আশঙ্কা ছা়ড়া গর্ভপাত করালে ৪০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। কিন্তু শিশুর জীবনের সংশয় হলে গর্ভপাত করানোর আইনি স্বীকৃতি নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন