‘ফাস্ট ট্র্যাক’ পরীক্ষা চিনে, আরও শিথিল ব্রিটেন, ছাড় দূরত্ববিধিতেও

সংক্রমণের নিরিখে ব্রিটেন এখন তালিকার পঞ্চমে। তবু এরই মধ্যে হাউস অব কমন্সে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী পাব খোলার কথা ঘোষণা করতেই উৎসাহের মাত্রাটা স্পষ্ট বোঝা গেল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২০ ০৪:৩৪
Share:

বরিস জনসন। ছবি: এএফপি

করোনা ঠেকাতে এত দিন দু’মিটারের পারস্পরিক দূরত্ববিধি মেনে চলার কথা বলা হচ্ছিল। এ বার থেকে এক মিটারের নিয়ম মানলেই হবে বলে আজ জানালেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সংক্রমণে রাশ নেই। তবু অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে মরিয়া ব্রিটেন। ধাপে ধাপে লকডাউন তোলার আগামী পর্বে তাই ৪ জুলাই থেকে দেশে পাব-রেস্তরাঁ-হোটেল খোলা যাবে বলে জানালেন বরিস। পার্লারে গিয়ে শুধু চুল কাটানো যাবে। ট্যাটু, মাসাজ, স্পা আপাতত বন্ধই থাকছে। এখনই খুলছে না নাইটক্লাব, ক্যাসিনোও।

Advertisement

সংক্রমণের নিরিখে ব্রিটেন এখন তালিকার পঞ্চমে। তবু এরই মধ্যে হাউস অব কমন্সে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী পাব খোলার কথা ঘোষণা করতেই উৎসাহের মাত্রাটা স্পষ্ট বোঝা গেল। সূত্রের খবর, পাব এবং বিনোদন দুনিয়ায় লকডাউন তোলা নিয়ে ক্রমশই চাপ বাড়ছিল বরিসের উপরে। ৪ জুলাই থেকে সামাজিক মেলামেশার ক্ষেত্রেও কিছু বিধিনিষেধ তুলে নিচ্ছে তাঁর প্রশাসন। তবে দূরত্ববিধি মানতেই হবে। এর অন্যথায় কিংবা সংক্রমণ ফের চাগাড় দিলে ফের সব ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা চালু হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন বরিস। তাঁর প্রশাসনের দাবি, ২৪ ঘণ্টায় মাত্র ১৫ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। গত কয়েক দিনের হিসেবে যা নাকি সবচেয়ে কম।

এ দিকে মাঝখানে বেশ কিছু দিন স্বস্তিতে থাকার পরে ক্রমশ চিন্তা বাড়ছে চিনের। ১১ জুন দ্বিতীয় দফার প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল বেজিংয়ে। তার পর গত ১২ দিনে সংক্রমণ ছড়িয়েছে আরও ২৫০ জনের শরীরে। পরিস্থিতির সামাল দিতে এই ক’দিনে প্রসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের প্রশাসন শুধু বেজিং থেকেই প্রায় ৩০ লক্ষ নাগরিকের নমুনা সংগ্রহ করেছে। এ বার বেজিং ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ পরীক্ষার পথে। মার্চে এক দিনে ৪০ হাজারের করোনা-পরীক্ষা হচ্ছিল। এখন সেখানে দিনে তিন লক্ষের পরীক্ষা হবে বলে জানিয়েছে বেজিং। চিনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের দাবি, শুধু সোমবারই ২৯ জন আক্রান্তের খোঁজ মিেলছে। গত কাল পর্যন্ত উপসর্গহীন প্রায় ১০০ জনকে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। চিনে সাম্প্রতিক গুচ্ছ সংক্রমণের পিছনে একটি রেস্তরাঁ-চেনের এক ডেলিভারি বয় দায়ী বলে মনে করছে প্রশাসনের একাংশ।

Advertisement

বিশ্বে করোনা

মৃত

৪,৭৬,৬০১

আক্রান্ত

৯২,৭১,৮৫৮

সুস্থ

৪৯,৯৪,৩০০

সংক্রমণের দ্বিতীয় ঝড় দেখা দেওয়ায় পরীক্ষা বাড়ানোর কথা ভাবছে দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানিও।আমেরিকায় সম্প্রতি এই করোনা-পরীক্ষা নিয়েই বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার রাতে ওকলাহোমার টালসায় নির্বাচনী প্রচারসভায় প্রেসিডন্ট বলেছিলেন, সংক্রমণ বাড়ছে দেখে তিনিই প্রশাসনকে পরীক্ষা কমানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এ নিয়ে হইচই শুরু হওয়ায় হোয়াইট হাউস দাবি করেছিল, ট্রাম্প মজা করেই এমন মন্তব্য করেছিলেন। কাল অ্যারিজোনায় প্রচার আগে প্রেসিডেন্ট কিন্তু নিজেই জানিয়ে গেলেন, তিনি ‘সিরিয়াস’-ই।

সংক্রমণের নিরিখে তালিকার শীর্ষে থাকা আমেরিকায় ইদানীং তরুণ প্রজন্মই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বলে দাবি প্রশাসনের। আর তাতেই নাকি মৃত্যুর হার অনেকটা কমেছে। আমেরিকা কি তা হলে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিসের স্বপ্ন ‘হার্ড ইমিউনিটি’ অর্জন করে ফেলল? আমেরিকার প্রথম সারির লেখক-বৈজ্ঞানিক উইলিয়াম হ্যাসেল্টিন যদিও সরাসরি সেই জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘‘এই জটিল ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে হার্ড ইমিউনিটির এখনও কোনও প্রমাণ মেলেনি। এত তাড়াতাড়ি তা পাওয়ার কথাও নয়।’’

আরও পড়ুন: ভোটে জিততেই কি ভিসায় কোপ ট্রাম্পের

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন