ইতিহাসের একটি বাঁকের মুখে এসে দাঁড়াল ব্রিটেন।
প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের আবেদনে কাজ হল না। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছেড়ে ‘একলা চলা’র পক্ষেই সায় জানালেন ব্রিটেনের বেশির ভাগ মানুষ।‘ব্রেক্সিট’-এর পক্ষে ভোট পড়ল ৫২ শতাংশ। তার পর হু হু করে নামল পাউন্ডের দাম। সবাইকে অবাক করে দিয়ে তা পৌঁছে গেল ৩১ বছর আগেকার দামে! এই সব একের পর এক নাটকীয় ঘটনার জেরে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন ডেভিড ক্যামেরন। আর ইইউ-তে থাকা, না-থাকার প্রশ্নে শাসক দল কনজারভেটিভ পার্টিও (টোরি) যে মতবিরোধে জর্জরিত হয়ে ছিল এত দিন, সেই সত্যটাও আর ঢাকা-চাপা রইল না। জেরেমি করবিন, জন ম্যাকডোনেলের মতো লেবার পার্টির এমপি-রা সরাসরি সরব হয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘ক্যামেরন তাঁর মতামতটাকেই জোর করে মানুষের ওপর চাপিয়ে দিতে গিয়েছিলেন।’’
২৪ জুন দিনটি ব্রিটেনের ইতিহাসে আক্ষরিক অর্থেই, হয়ে রইল একটি ‘রে্ড লেটার্স ডে’!
ব্রিটিশ সরকার আগেই জানিয়েছিল, গণভোটের রায় যা-ই হোক, তা মেনে নেবে সরকার। শুক্রবার ফলাফল ঘোষণার পর দেখা যাচ্ছে, আশঙ্কাটাই সত্যি হয়েছে। ২৩টি দেশের ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়েই যাচ্ছে ব্রিটেন। বৃহস্পতিবার ৪০ হাজার কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, উত্তর আয়ারল্যান্ড এবং ওয়েলসে একই সঙ্গে ভোট নেওয়া শুরু হয়। ৩৮২টি আসনের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর দেখা গিয়েছে ৫১.৯ শতাংশ লোক ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার পক্ষে মত দিয়েছেন।
ইইউ-তে থাকা এবং বেরিয়ে যাওয়া নিয়ে প্রচার উঠেছিল তুঙ্গে। প্রথম থেকেই ডেভিড ক্যামেরন ইইউ-তে থাকার পক্ষে ছিলেন। ব্রিটেনের নাগরিকদের তিনি ইইউ-তে থেকে যাওয়ার পক্ষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। নিজের ভোটটি দিয়ে বেরিয়ে আসার পরেও বলেছিলেন, ‘‘ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে ভোট দিলে তা হবে একটি বিরাট ভুল।’’
কিন্তু গণভোটের ফলাফল ঘোষণার পর দেখা গেল, ক্যামেরনের দল কনজারভেটিভ পার্টির (টোরি) ‘শক্ত ঘাঁটি’ বলে পরিচিত সান্ডারল্যান্ডেও ৬১ শতাংশ ভোটার রায় দিয়েছেন ইইউ থেকে বেরিয়ে আসার পক্ষে। একটু পিছিয়ে পড়া এলাকা নানইটনও গোটা দেশের জনমতের থেকে পিছিয়ে থাকেনি। ইইউ থেকে বেরিয়ে আসার পক্ষে ভোট দিয়েছেন নানইটনের ৬৬ শতাংশ মানুষ।
আরও পড়ুন- ইস্তফার ঘোষণা ক্যামেরনের, চূড়ান্ত অব্যাহতি অক্টোবরে
ব্রেক্সিট:ভারতের কি ক্ষতি হয়ে গেল?
ব্রেক্সিট: এ বার কী কী হতে পারে ইউরোপীয় ইউনিয়নে?