Buddha Diplomacy

বুদ্ধ কূটনীতিতে পাক টক্কর, পিছনে কি চিন

দক্ষিণ এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় বুদ্ধ-কূটনীতিতে প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করে এসেছে ভারত। নিকটতম প্রতিপক্ষ অবশ্যই চিন এবং নেপাল। এ বার সেই দৌড়ে যো‌গ দিল পাকিস্তানও।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৮ ০৩:৫৪
Share:

উপমহাদেশের কূটনীতিতে কোণঠাসা ইসলামাবাদ এ বার গৌতম বুদ্ধর শরণে!

Advertisement

দক্ষিণ এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় বুদ্ধ-কূটনীতিতে প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করে এসেছে ভারত। নিকটতম প্রতিপক্ষ অবশ্যই চিন এবং নেপাল। এ বার সেই দৌড়ে যো‌গ দিল পাকিস্তানও। সম্প্রতি নেপালে গিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খাকান আব্বাসি প্রস্তাব দিয়েছেন, যৌথ ভাবে ইসলামাবাদের সঙ্গে বুদ্ধকে নিয়ে কিছু প্রকল্পের জন্য উদ্যোগী হতে। নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলি-ও তাঁকে জানিয়েছেন বিষয়টি নিয়ে তিনি গুরুত্ব দিয়ে ভাববেন। পাশাপাশি বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে শ্রীলঙ্কার ‘বেশাখ’ উৎসবে গৌতম বুদ্ধের একটি দেহাবশেষ প্রদর্শনের জন্য পাঠিয়েছে পাকিস্তান। এই প্রথম বার নিজের দেশের বাইরে এ’টি পাঠালো পাক সরকার। ওই উৎসবে সারনাথে সংরক্ষিত বুদ্ধের দেহাবশেষ পাঠিয়েছে ভারতও।

১৯১২ সালে প্রত্নতত্ত্ববিদ জন মার্শালের নেতৃত্বে একটি খনন প্রকল্পে ধর্মরাজিকা স্তূপ উদ্ধার হয় তক্ষশিলা থেকে। সেখানেই পাওয়া গিয়েছিল ওই দেহাবশেষ। পাকিস্তান সেটি সংরক্ষণ করে রেখেছে। তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধের দেহাবশেষ ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সম্রাট অশোক। তার উপরেই চৈত্যগুলি নির্মাণ করা হয়েছিল। ভারত থেকে বুদ্ধের যে দেহাবশেষ কলম্বোয় পাঠানো হয়েছে, তা পাওয়া গিয়েছিল ১৯২৯ সালে তৎকালীন মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত গুন্টুরের নাগার্জুনাকোন্ডা স্তূপে। পরে তা সারনাথে সংরক্ষিত হয়।এ’টি খুঁজে পেয়েছিলেন প্রত্নতত্ত্ববিদ এ এইচ লংহার্স্ট।

Advertisement

কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এশিয়ায় সাংস্কৃতিক আধিপত্য বজায় রাখতে ভারত ও চিনের অন্যতম প্রিয় হাতিয়ার বুদ্ধ। বিভিন্ন সম্মেলনে অর্থ দেওয়া, ধর্মস্থানগুলি সাজিয়ে তোলা, বৌদ্ধপ্রধান দেশগুলিতে দেহাবশেষের প্রদর্শনী করার ব্যাপারে বরাবরই এগিয়ে থেকেছে ভারত। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে ইয়াঙ্গনে ভারত এবং মায়ানমার যৌথ ভাবে তিন দিনের বৌদ্ধ সম্মেলনের আয়োজন করে। চিনের সঙ্গে টক্কর দিতে এবং মায়ানমারকে কাছে টানতেই ছিল এই পদক্ষেপ।

এই মতও রয়েছে যে বৌদ্ধধর্মকে নিয়ে ভারত এবং চিনের মল্লযুদ্ধ একটি ভিন্ন ঠান্ডা যুদ্ধের জন্ম দিতে পারে, যার সঙ্গে রাজনৈতিক ও বানিজ্যিক স্বার্থও জড়িত। বেজিংয়ের অভিযোগ, চিনের উপর চাপ বাড়াতে ভারত দীর্ঘদিন ধরে নির্বাসিত তিব্বতি সরকারকে উস্কানি দিয়ে আসছে। তবে পাকিস্তান এর আগে কখনওই তাদের বৌদ্ধ-ঐতিহ্য নিয়ে কোনও আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ করেনি, প্রদর্শনের জন্য বিদেশে পাঠানো তো দূরস্থান। তাই পাকিস্তান যে বুদ্ধের দেহাবশেষ শ্রীলঙ্কায় পাঠালো, এর পিছনে বেজিংয়ের ভূমিকা রয়েছে বলেও মনে করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন