অভিযোগ ছিল ১৩ জন সন্তানকে আটকে রাখার। ২ থেকে ২৯-এর মধ্যে অপুষ্ট সেই সন্তানদের ছবি দেখে শিউরে উঠেছিল বিশ্ব।
লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরে পেরিস-এর ওই বাড়িতে ঢুকে স্তম্ভিত হয়ে যায় পুলিশও। কিন্তু ক্যালিফোর্নিয়ার সেই দম্পতি অভিযোগ মানতে নারাজ। সন্তানদের বাবা-মা ধৃত ৫৭ বছরের ডেভিড টার্পিন এবং ৪৯ বছরের লুইসে টার্পিনের বিরুদ্ধে নির্যাতন, নিগ্রহ এবং আটক করে রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁরা সেখানে অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এই দম্পতিকে আজ কোর্টে তোলা হয়েছিল। রিভারসাইড কান্ট্রি অ্যাটর্নি মাইক হেস্ট্রিন আদালতে জানিয়েছেন, কী ভাবে টার্পিন দম্পতি সন্তানদের উপরে নির্যাতন চালাতেন। কখনও দড়ি, কখনও চেন দিয়ে জড়িয়ে বিছানায় ফেলে তালা বন্ধ করে দিতেন তাঁরা। সরকারি আইনজীবী বলেছেন, পারিপার্শ্বিক প্রমাণ দেখে বোঝা যাচ্ছে, শৌচাগারে যাওয়ার জন্যও তাদের চেন খুলে দেওয়া হত না।
পাশাপাশি তিনি বলেছেন, প্রায়শই সন্তানদের মারধর করতেন ওঁরা। বছরে মাত্র এক বার স্নান। সারা রাত জাগিয়ে রেখে ভোর পাঁচটায় ঘুমোতে দেওয়া হত। ছোট শিশুরা খেলনা নিয়ে খেলতে পারত না, অথচ ঘরভর্তি প্যাকেটবন্দি খেলনা পড়ে রয়েছে। বাচ্চারা হাত ধুলে তাদের শাস্তি দেওয়া হত। দিনে এক বারই খেতে পেত ওরা। টার্পিনরা যথেষ্ট খাবার কিনলেও এমন জায়গায় সেগুলো রাখতেন, যাতে বাচ্চারা দেখতে পেত, অথচ খেতে পেত না। চার বছর কোনও চিকিৎসকও দেখানো হয়নি তাদের।
এই মামলা নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহ তৈরি হয়েছে জনমানসে। আজ ভরা কোর্টরুমে হাজির হন ডেভিড ও লুইস টার্পিন। ডেভিডের কোমরে চেন বাঁধা। স্ত্রী লুইসের মুখ গম্ভীর। আইনজীবীদের মতে, তাঁরা যে অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছেন, তা অত্যন্ত গুরুতর। নিজেদের সন্তানদের বিশ্বাসভঙ্গ করেছেন তাঁরা। এবং এই বিশ্বাসভঙ্গ করার কাজটি চলেছে বেশ কয়েক বছর ধরে। এই অমানুষিক অত্যাচারের জন্য টার্পিন দম্পতির ৯৪
বছরের জেল হতে পারে বলে জানান সরকারপক্ষের আইনজীবী।