হংকং বিমানবন্দরের পাশে সমুদ্রে পড়ে বিমানের ধ্বংসাবশেষ। ছবি: রয়টার্স।
অবতরণের সময়ে রানওয়ে থেকে পিছলে গেল পণ্যবাহী বিমান। সোজা গিয়ে পড়ল পাশের সমুদ্রে! তার আগে বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাড়িতেও সজোরে ধাক্কা মারে বিমানটি। তবে যাত্রিবাহী বিমান না-হওয়ায় বড়সড় দুর্ঘটনা এড়ানো গিয়েছে। যদিও এই ঘটনায় দু’জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
সোমবার হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভোর ৩টে ৫০ মিনিটে অবতরণের কথা ছিল দুবাইফেরত এমিরেট্স এয়ারলাইন্সের পণ্যবাহী বিমানটির। ভিতরে পাইলট-সহ চার জন বিমানকর্মী ছিলেন। সমুদ্র থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের বিবৃতি অনুযায়ী, ভোরে আবহাওয়া কিছুটা প্রতিকূল ছিল। বিমানটি সঠিক ভাবে অবতরণ করতে পারেনি। রানওয়েতে পিছলে যাওয়ায় বিমানের নিয়ন্ত্রণ হারান পাইলট। বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাড়ির সঙ্গে তার সংঘর্ষ হয়। গাড়িটি নিয়েই বিমান সমুদ্রে পড়ে। গাড়িতে থাকা দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। হংকং পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে অন্তত এক জন বিমানবন্দরের কর্মী ছিলেন। অন্য জনের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।
ঘটনাস্থল থেকে যে সমস্ত ছবি পাওয়া গিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, বিমান সমুদ্রে অর্ধেক ডুবে রয়েছে। সামনের দিকের কিছুটা অংশ জলের উপরে থাকলেও পিছনের অংশ জলের নীচে। মাঝের অংশ ভেঙে জলে ঢুকে গিয়েছে। নৌকায় চড়ে বিমানের কাছে পৌঁছেছেন উদ্ধারকারীরা। উদ্ধারকাজ চলছে।
এমিরেট্স এয়ারলাইন্সের তরফে বিবিসি-কে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ইকে৯৭৮৮ বিমানটিতে কোনও পণ্য ছিল না। বিমানকর্মী যাঁরা ছিলেন, তাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কারও বড় কোনও আঘাত লাগেনি। এমিরেট্স আরও জানিয়েছে, যে বোয়িং৭৪৭ বিমান পণ্য পরিবহণের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল, তা আসলে অন্য একটি বিমান সংস্থার কাছ থেকে নেওয়া। সাধারণ ভাবে এটি যাত্রী পরিবহণে ব্যবহার করা হত। সম্প্রতি পণ্য পরিবহণের প্রয়োজনে বিমানটিকে নেওয়া হয়েছিল। বিমানটির বয়স অন্তত ৩২ বছর।
১৯৯৯ সালের পর হংকং বিমানবন্দরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা বলা হচ্ছে সোমবারের ঘটনাকে। ১৯৯৯ সালে চিন এয়ারলাইন্সের একটি যাত্রিবাহী বিমান টাইফুন চলাকালীন এই বিমানবন্দরে অবতরণের চেষ্টা করেছিল। অবতরণ সফল হয়নি। হাওয়ার ধাক্কায় বিমানটি উল্টে গিয়েছিল। মৃত্যু হয়েছিল তিন জনের। সোমবারের ঘটনার পর আপাতত বিমানবন্দরটি বন্ধ রাখা হয়েছে।