Guru Nanak Palace

পাকিস্তানে গুরু নানক প্যালেসের একাংশ ভেঙে জানলা-দরজা খুলে নিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা

পাক সংবাদমাধ্যম ‘ডন’ জানিয়েছে, প্রায় চার শতাব্দী আগে রাজধানী লাহৌর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে নরোয়ালে চারতলা ওই গুরুদ্বারটি নির্মিত হয়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লাহৌর শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৯ ১৪:৪৯
Share:

এ ভাবেই গুঁড়িেয়ে দেওয়া হয়েছে ঐতিহাসিক গুরুদ্বারটিকে। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

পারস্পরিক সহযোগিতায় করতারপুর করিডর নির্মাণে যখন ব্যস্ত ভারত-পাকিস্তান, ঠিক সেই সময়ই পাকিস্তানের লাহৌরে শতাব্দী প্রাচীন গুরু নানক প্যালেসে হামলা চালাল একদল দুষ্কৃতী। ঐতিহাসিক ওই গুরুদ্বারটি আংশিক ভাবে গুঁড়িয়ে দিয়েছে তারা। খুলে নিয়ে গিয়েছে মূল্যবান কাঠ দিয়ে তৈরি জানলা-দরজাও। সেগুলি বাজারে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।

Advertisement

পাক সংবাদমাধ্যম ‘ডন’ জানিয়েছে, প্রায় চার শতাব্দী আগে রাজধানী লাহৌর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে নরোয়ালে চারতলা ওই গুরুদ্বারটি নির্মিত হয়। সবমিলিয়ে ১৬টি ঘর ছিল সেখানে। প্রত্যেকটি ঘরে আবার তিনটি করে কারুকার্য করা দরজা এবং চারটি করে ভেন্টিলেটর ছিল। শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গুরু নানক-সহ বিভিন্ন হিন্দু শাসক এবং যুবরাজের ছবি টাঙানো ছিল দেওয়ালে, যা দেখতে ভারত-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকেও পর্যটকরা ভিড় করতেন। সম্প্রতি সেখানেই হানা দেয় একদল স্থানীয় দুষ্কৃতী। দেদার ভাঙচুর চালিয়ে জানলা-দরজা খুলে নিয়ে যায় তারা।

মুসলিম ধর্মীয় স্থানগুলির সম্পত্তি দেখভালের দায়িত্ব থাকে ওয়াকফ বোর্ডের হাতে। তাদের প্রচ্ছন্ন সম্মতিতেই গুরুদ্বারে হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। মহম্মদ আসলাম নামের এক ব্যক্তি সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘‘পুরনো ওই বিল্ডিংটিকে প্যালেস অব বাবা গুরু নানক বলা হয়। আমরা নাম দিয়েছি মহলান। ভারত তো বটেই, অন্য অনেক দেশ থেকেও শিখ ধর্মাবলম্বীদের আনাগোনা লেগে থাকত।’’ কানাডা থেকে ছ’জনের একটি প্রতিনিধি দলও একবার সেখানে এসে সবকিছু দেখে শুনে যান বলে জানান তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুন: অঙ্ক হেরেছে, ভোটে জয় হয়েছে রসায়নের, নিজের কেন্দ্র বারাণসী সফরে গিয়ে বললেন মোদী​

মহম্মদ আশরফ নামের অপর এক ব্যক্তির দাবি, ‘‘ওয়াকফ বোর্ডের সম্মতিতে প্রভাবশালীরাই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। বিল্ডিং ভেঙে ইতিমধ্যেই নতুন নির্মাণকাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।’’ ওয়াকফ বোর্ডকে গুরুদ্বার ভাঙার খবর দেওয়া সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া তো দূর, কোনও অফিসার ঘটনাস্থলে আসার প্রয়োজন বোধ করেননি বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ইতিমধ্যেই বিশেষ ভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

আরও পড়ুন: ব্যক্তিগত কাজে উত্তরপ্রদেশে, বাড়তি সময় চাইলেন রাজীব, ফের সমন পাঠানোর প্রস্তুতি সিবিআইয়ের​

দেশভাগের সময় পাকিস্তান থেকে হিন্দু ও শিখরা ভারতে চলে এলে, তাদের ফেলে আসা সম্পত্তির তদারকির জন্য বিশেষ ইভাকুই ট্রাস্ট প্রপার্টি বোর্ড (ইটিপিবি) রয়েছে পাকিস্তানে। বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ‘ডন’। কিন্তু কাদের হাতে গুরুদ্বারটির পরিচালনার ভার ছিল, তার কোনও রেকর্ড মেলেনি। রাজস্ব বিভাগের কাছেও গুরুদ্বারটি সম্পর্কে কোনও তথ্য নেই বলে জানান নরোয়ালের ডেপুটি কমিশনার ওয়াহিদ আসগর। তবে পুরসভার রেকর্ড খতিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। ইটিপিবি-র সিয়ালকোট জোনের আর এক আধিকারিক রানা ওয়াহিদ জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই গুরুদ্বারটি ইটিপিবি-র সম্পত্তি হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন