ফের দ্বৈরথে চিন-আমেরিকা। সিঙ্গাপুর সফররত চিনা নৌসেনা-প্রধান অ্যাডমিরাল সান জিয়াংগুয়ো কঠোর শব্দে হুঁশিয়ারি দিলেন পেন্টাগনকে। বললেন, চিন কোনও দেশকে ভয় পায় না। জলসীমান দখল নিয়ে চিনের সঙ্গে ফিলিপিন্সের যে বিরোধ, তাতে অন্য কোনও দেশ নাক গলালে ফল খুব খারাপ হবে বলেও প্রকারান্তরে হুঁশিয়ারি দিল চিন।
দক্ষিণ চিন সাগরের যে অংশকে ফিলিপিন্স নিজেদের জলসীমা বলে দাবি করছে, সেখানে ঢুকেও কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করেছে চিন। ওই দ্বীপ চিন নিজে থেকে ছেড়ে না দিলে আমেরিকাই পদক্ষেপ করতে বাধ্য হবে বলে সম্প্রতি হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব অ্যাশটন কার্টার। তার প্রতিক্রিয়ায় চিনা নৌসেনার প্রধান বলেছেন, ‘চিন কারও জন্য সমস্যা তৈরি করে না। কিন্তু চিন সমস্যাকে ভয়ও পায় না।’’
ফিলিপিন্স এবং চিনের মধ্যে যে বিরোধ, তা আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল পর্যন্ত গড়িয়েছে। ট্রাইব্যুনাল যে রায় দেবে, তা চিনকে মানতেই হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে আমেরিকা। সিঙ্গাপুরে ভাষণ দিতে গিয়ে রবিবার সেই প্রসঙ্গ টেনে আনেন অ্যাডমিরাল জিয়াংগুয়ো। তিনি জানান, আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের রুলিং মেনে নেওয়ার চিনের উপর চাপ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কোনও রুলিংকেই চিন মান্যতা দেবে না।
আরও পড়ুন:
বেনজির অভিযানে দিল্লি, দঃ চিন সাগরে ঢুকল চার ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ
চিনা নৌসেনা-প্রধানের এই মন্তব্যে দক্ষিণ চিন সাগরের উত্তাপ আবার বাড়িয়ে দিয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব আগেই বলেছিলেন, রুলিং না মানলে চিনের বিরুদ্ধে আমেরিকা এবং অন্যান্য দেশ ব্যবস্থা নেবে। পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে চিন বলছে, কোনও ব্যবস্থার পরোয়া তারা করে না। চিনা নৌসেনা কর্তার কথায়, দক্ষিণ চিন সাগরে আদৌ কোনও সমস্যা নেই। কয়েকটি দেশ নিজেদের সঙ্কীর্ণ স্বার্থে দক্ষিণ চিন সাগরকে উত্তপ্ত করতে চাইছে। অ্যাডমিরাল জিয়ংগুয়ো এ দিন বলেছেন, ‘‘ফ্রিডম অফ নেভিগেশন পেট্রোলিং নাম দিয়ে যে টহলদারি চলছে তা আসলে সামরিক পেশী দেখানোর কৌশল।’’ এর পরই কড়া ভাষায় আমেরিকাকে হুমকি চিনা নৌসেনা কর্তার। তিনি বলেন, ‘‘চিন এই আচরণের কঠোর বিরোধিতা করছে। আমরা সমস্যা তৈরি করি না। কিন্তু কেউ যদি সমস্যা তৈরি করতে চায়, তা হলে আমরা ভয়ও পাই না।’’
বেজিং-এর তরফে এমন কঠোর বার্তা সঙ্ঘাতেরই ইঙ্গিত, বলছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। আমেরিকা আরও অনেক দেশকে নিয়ে চিনের বিরুদ্ধে ‘ব্যবস্থা নেওয়া’র যে হুমকি দিয়েছে, তা স্নায়ুর চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে চিনের। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, চাপে পড়েই চিনের এই হুঙ্কার। আমেরিকা সামরিক পদক্ষেপ নিলে চিন যুদ্ধ করতে প্রস্তুত, এমনটাই বোঝাতে চেয়েছে বেজিং।