International News

ডোকলাম থেকে বাহিনী সরিয়ে নিচ্ছে চিন? মন্তব্য এড়িয়ে গেল বেজিং

মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের মুখোমুখি হন চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লু ক্যাং। কিন্তু সরাসরি জবাব তিনি দেননি। বরং এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন প্রসঙ্গটি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেজিং শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৮ ২২:১৩
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

ডোকলামে চিনা বাহিনীর উপস্থিতি অনেকটাই কমে গিয়েছে বলে যে দাবি ভারতের সেনাপ্রধান করেছেন, সে সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গেল চিন। শুধু পুরনো অবস্থানে অনড় থেকে চিন জানাল, ডোকলাম চিনেরই অংশ।

Advertisement

সোমবারই ভারতের সেনাপ্রধান বলেছেন, ডোকলাম থেকে নিজেদের বাহিনীর অনেকটাই প্রত্যাহার করে নিয়েছে চিন। ২০১৭-র জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে অগাস্টের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত ডোকলামে মুখোমুখি অবস্থানে ছিল ভারতীয় ও চিনা সেনা। চিন-ভারত-ভুটান সীমান্তে অবস্থিত ডোকলামে দু’দেশের বাহিনীর সেই মুখোমুখি অবস্থান ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিহাসে বেশ বেনজির ঘটনা। ভুটানের এলাকায় ঢুকে চিন রাস্তা তৈরি করতে শুরু করেছিল বলে দিল্লি এবং থিম্পুর অভিযোগ ছিল। বেজিং অবশ্য দাবি করেছিল, তারা নিজেদের এলাকাতেই রাস্তা তৈরি করছে। ভারতীয় সেনার হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত রাস্তা তৈরি বন্ধ রাখার প্রতিশ্রুতি দেয় বেজিং। তার পরে ভারত ওই এলাকা থেকে বাহিনী প্রত্যাহার করতে শুরু করে। চিন নিজেদের অংশে সেনা মোতায়েন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু সেই বাহিনীও এ বার অনেকটাই প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে বলে ভারতের সেনাপ্রধান জানিয়েছেন। সে প্রসঙ্গেই মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের মুখোমুখি হন চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লু ক্যাং। কিন্তু সরাসরি জবাব তিনি দেননি। বরং এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন প্রসঙ্গটি।

লু ক্যাং এ দিন শুধু বলেন, ডোকলামে মোতায়েন বাহিনী চিনের সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্ব পালন করছিল। কিন্তু চিনা বাহিনী এখনও সেখানে রয়েছে কি না, এখনও সার্বভৌমত্ব রক্ষার কাজ তারা চালিয়ে যাচ্ছে কি না, সে প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য তিনি করতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, “ডং ল্যাং (ডোকলাম) এলাকা বরাবরই চিনের অন্তর্ভুক্ত ছিল।”

Advertisement

আরও পড়ুন: জিওয়ানিতে সামরিক ঘাঁটি তৈরির জল্পনা নস্যাৎ করল চিন

ত্রিদেশীয় সীমান্তের কাছে অবস্থিত ডোকলাম অঞ্চলকে নিজেদের দেশের অঙ্গ বলেই দাবি করে ভুটান। ভারতও সেই দাবিরই সমর্থক। কিন্তু চিন ভুটানের দাবিকে স্বীকৃতি দিতে রাজি নয়। সেই কারণেই ডোকলামে একতরফা আগ্রাসন দেখিয়ে রাস্তা তৈরির চেষ্টা করেছিল চিন। ভারত যে সশস্ত্র বাহিনী পাঠিয়ে হস্তক্ষেপ করবে, তা সম্ভবত চিন আন্দাজ করেনি।

আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কা নৌসেনার হামলা, আক্রান্ত সাড়ে তিন হাজার ভারতীয় মৎস্যজীবী

ডোকলামকে কেন্দ্র করে বেনজির সঙ্কট ঘনালেও, চিন যে এখনও পুরোপুরি সতর্ক হয়নি, তা ফের স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে গত ডিসেম্বরে। অরুণাচল প্রদেশের টুটিং এলাকায় ঢুকে রাস্তা তৈরি শুরু করেছিল চিন। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ভারতীয় বাহিনী। রাস্তা তৈরি রুখে দেয়, বাজেয়াপ্ত করা হয় চিনা কনস্ট্রাকশন পার্টির নির্মাণ সরঞ্জামগুলিও। তা নিয়ে ফের ভারত-চিন সীমান্ত উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ডোকলামের মতো প্রলম্বিত জটিলতা সম্ভবত আর চাইছে না বেজিংও। তাই অরুণাচল সীমান্তে আয়োজিত ব্রিগেডিয়ার স্তরের বৈঠকে চিনা বাহিনী প্রতিশ্রুতি দেয়, এলএসি লঙ্ঘন না করার বিষয়ে সতর্ক থাকবেন তাঁরা। ভারতও চিনের নির্মাণ সরঞ্জাম ফিরিয়ে দিতে রাজি হয়ে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন