ভিডিও নিয়ে তদন্তের দাবি রাজপরিবারের

আশি বছর পুরনো অতীত এ ভাবে সামনে এসে দাঁড়াবে, ভাবতে পারেনি বাকিংহাম প্যালেস। নাৎসি ভাবাবেগ নিয়ে নরম মনোভাব রাখেন বলে বহু বার অভিযোগ উঠেছিল রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাকা অষ্টম এডওয়ার্ডের বিরুদ্ধে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লন্ডন শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৫ ০২:২২
Share:

এই ছবিই সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে। ছবিতে মায়ের ঠিক পাশেই হাত তুলে দাঁড়িয়ে খুদে এলিজাবেথ।

আশি বছর পুরনো অতীত এ ভাবে সামনে এসে দাঁড়াবে, ভাবতে পারেনি বাকিংহাম প্যালেস।

Advertisement

নাৎসি ভাবাবেগ নিয়ে নরম মনোভাব রাখেন বলে বহু বার অভিযোগ উঠেছিল রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাকা অষ্টম এডওয়ার্ডের বিরুদ্ধে। অ্যাডল্ফ হিটলারের নেতৃত্বে জার্মানি যে ভয়াবহ সময় দেখেছে, তার সঙ্গে যুক্ত বলেও ইতিহাসের পাতায় নানা বিতর্ক রয়েছে বাকিংহাম প্যালেস নিয়ে। ইতিহাসের পাতা থেকে প্রায় আশি বছর পুরনো সেই অতীত শনিবার ফের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে রাজপরিবারের।

ব্রিটেনের একটি সংবাদপত্রে প্রকাশ করা কয়েকটি ছবি ও তার ইন্টারনেট সংস্কারণে দেওয়া ১৭ সেকেন্ডের একটি সাদা-কালো ভিডিওতে স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদের লনে ৭ বছরের রানি এলিজাবেথকে তাঁর বছর তিনেকের বোন মার্গারেট, মা ও কাকা অষ্টম এডওয়ার্ডের সঙ্গে নাৎসি স্যালুট করতে দেখা গিয়েছে। যে সময়ের ভিডিও, সেই ১৯৩৩-এ জার্মানির চ্যান্সেলর হিসেবে রাজত্ব করছেন অ্যাডল্ফ হিটলার। সেই সময়কার বাকিংহাম প্যালেসের এমন চিত্র সামনে আসায় স্বাভাবিক ভাবেই নতুন করে শুরু হয়েছে বিতর্ক। রানির মা ১০১ বছর বয়সে ২০০২ সালে প্রয়াত হন। ভিডিওতে উপস্থিত ছিলেন তিনিও। এ নিয়ে রবিবার দুঃখপ্রকাশ করলেও পুরো ঘটনায় ক্ষুব্ধ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।

Advertisement

বাকিংহাম প্যালেস সূত্রের খবর, ইংল্যান্ডের উইন্ডসর কাসলে পরিবারের ব্যক্তিগত সংগ্রহশালার অতি সংরক্ষিত বিভাগে রাখা আছে ওই ভিডিও। ফলে, তা যে কারও হাতে পৌঁছনো প্রায় অসম্ভব। এই অবস্থায় ব্রিটেনের ওই সংবাদপত্র কী ভাবে ভিডিওটি হাতে পেল, তা নিয়ে তদন্তের দাবি করেছে রাজপরিবার।

রাজ পরিবারের এক সূত্রের কথায়, ‘‘রানি জানতে চান এই ফিল্মটি কে বাইরে এনেছে, কী ভাবে এনেছে এবং কেন এনেছে।’’ এই ঘটনার তদন্তভার পুলিশের হাতে তুলে দিতে ইতিমধ্যেই সব রকম ব্যবস্থা নিয়ে ফেলেছে বাকিংহাম প্যালেস। তদন্ত করে এ-ও দেখা হচ্ছে, ছবি বানানোর জন্য তথ্যচিত্র নির্মাতাদের রাজপরিবারের ভিডিও দিতে গিয়ে ভুলবশত ওই বিতর্কিত ভিডিওটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে কি না।

রাজপরিবারের আসল ভিডিওটি সংরক্ষিতই রয়েছে দাবি করে আজ সংবাদপত্রের তরফে জানানো হয়, ১৯৩৩ সালে তোলা ওই ভিডিওটির বেশ কয়েকটি নকল বাইরে ছড়িয়ে রয়েছে। তারই একটি সম্প্রতি হাতে পেয়েছে তাঁরা। এ কথা মানতে নারাজ রাজপরিবারের সন্দেহ, ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। সংবাদপত্র কোনও সূত্র উল্লেখ না করলেও ইতিমধ্যেই তাঁরা আইনি সাহায্যে জানার চেষ্টা করছেন, ওই আশি বছর আগের পুরনো ভিডিও প্রকাশের সঙ্গে কোনও অপরাধমূলক কাজের যোগসূত্র রয়েছে কি না।

তবে, সংবাদপত্রটির বিরুদ্ধে আজ সকাল থেকে টুইটারে নানা বিরূপ মন্তব্য উপচে পড়েছে। কারও অভিযোগ, সংবাদপত্রটি নিজের সীমা ভুলে গিয়েছে, আবার কারও মন্তব্য ওই সংবাদপত্রের মালিকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক। তবে ভিডিও সামনে এনে ভুল করেছে স্বীকার করতে নারাজ সংবাদপত্রের বক্তব্য, নাৎসি ভাবাবেগ নিয়ে নরম মনোভাবাপন্ন অষ্টম এডওয়ার্ড ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। এই ভিডিওটি অষ্টম এডওয়ার্ডের ব্যক্তিগত মুহূর্ত হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করেই তাঁরা তা প্রকাশ করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন