Corona virus

কোথাও আকাল, কোথাও নষ্ট টিকা

দক্ষিণ সুদান জানিয়েছে, অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার ৫৯ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৯১ হাজার ডোজ় নষ্ট করে দিতে হবে তাদের।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২১ ০৫:৩২
Share:

— ছবি সংগৃহীত

এক দিকে প্রতিষেধকের জন্য হাহাকার, অন্য দিকে নষ্ট হচ্ছে টিকা। এই দুই চিত্রই ধরা পড়েছে আফ্রিকার একাধিক দেশে। পরিস্থিতি কী ভাবে সামলানো সম্ভব, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।

Advertisement

দক্ষিণ সুদান জানিয়েছে, অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার ৫৯ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৯১ হাজার ডোজ় নষ্ট করে দিতে হবে তাদের। কারণ টিকা ব্যবহারের জন্য ধার্য সময়সীমা চলে গিয়েছে। হু-র কোভ্যাক্স প্রকল্পের আওতায় ওই ডোজ়গুলি পেয়েছিল দেশটি। মালাওয়ি সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার অন্তত ১৯ হাজার ডোজ়ের মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে। তাই প্রকাশ্যে নষ্ট করে দেওয়া হবে সেগুলি। ও দিকে, কোভ্যাক্স প্রকল্পে পাওয়া ১০ লক্ষ ডোজ় ফিরিয়ে দিয়েছে কঙ্গো। নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থেকেই তারা ফিরিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছে।

কোভ্যাক্স প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত এক আধিকারিক জানান, ভ্যাকসিন শুধুমাত্র সেই দেশগুলোকেই দেওয়া হচ্ছে, যারা টিকাকরণের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। নয়তো দেওয়া হচ্ছে না। ভ্যাকসিনের মেয়াদ শেষের সময়সীমাও জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে সব দেশকে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, আফ্রিকার বেশির ভাগে দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর হাল খারাপ। গ্রামীণ অঞ্চলে ভ্যাকসিন সময়মতো পৌঁছে দেওয়ার মতো ব্যবস্থা নেই। তার মধ্যে প্রতিষেধক নেওয়া নিয়ে মানুষের মধ্যে অনিচ্ছা কাজ করছে। ফলে যদি বা ভ্যাকসিন পৌঁছয়, লোকে নিতে আসছেন না।

Advertisement

হু-র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘‘এ ভাবে মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার জন্য ভ্যাকসিন নষ্ট করে দেওয়ার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। বিশেষ করে যখন ডোজ়ের আকাল।’’ কিন্তু এই ঘটনার পরেও ‘কোভ্যাক্স’ প্রকল্প মারফত টিকা পাঠানোর কাজ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জোর দিচ্ছে হু। তাদের বক্তব্য, এতে অন্তত মানুষের মনোবল বাড়বে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র ভারতীয় বিশেষজ্ঞ সৌম্যা স্বামীনাথনের মতে, ভাইরাস সংক্রমণের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত সকলের। তাঁর কথায়, ‘‘এইচআইভি-র চিকিৎসা প্রথম বাজারে এসেছিল নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি। কিন্তু বছরে খরচ পড়ত ১০ হাজার ডলারেরও বেশি। প্রায় এক দশক লেগে গিয়েছিল গরিব মানুষের কাছে চিকিৎসা পৌঁছতে। কত মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যান। আমাদের এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। কিন্তু তা হচ্ছে না।’’ সৌম্যার বক্তব্য, কোভিডের ক্ষেত্রেও টিকার সমবণ্টন হচ্ছে না। এখনও পর্যন্ত বিশ্বের গরিব দেশগুলি মাত্র ০.৩ শতাংশ কোভিড টিকা পেয়েছে। অথচ বিশ্বের জনসংখ্যার ১০ শতাংশের বাস এই দেশগুলিতে। ভারতীয় বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘‘চোখের সামনে এ সব দেখা কঠিন। নৈতিক ভাবে এটা কিন্তু অন্যায়।’’ সৌম্যা আরও জানান, কোভ্যাক্স প্রকল্প তৈরি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু কাজ আশা মতো এগোচ্ছে না। টিকার সরবরাহ নেই, কোনও অর্থসাহায্য নেই, গরিব দেশগুলোতে টিকা পাঠানোর কাজে গতিও নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন