ছবি: এএফপি।
করোনা-আতঙ্কের জেরে সাময়িক ভাবে হলেও বদলে গিয়েছে কূটনৈতিক সম্পর্কগুলির টানাপড়েন। এই ভাইরাস ছাড়ানোর কারণ হিসেবে আমেরিকা তথা পশ্চিমিরা যখন চিনের দিকে আঙুল তুলছে, তখন ভারতকে পাশে চেয়ে দরবার করল বেজিং। কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, সম্প্রতি চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই ফোনে দীর্ঘ ক্ষণ কথা বলেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে। সূত্রের খবর, ওয়াংয়ের আর্জি— বিশ্বের একাংশ করোনাকে ‘চিনা ভাইরাস’ বলে দাগিয়ে দেওয়ার যে ‘সঙ্কীর্ণ মানসিকতা’ দেখাচ্ছে, তার বিরোধিতা করুক দিল্লি। পাশাপাশি জানানো হয়েছে, যে পদ্ধতিতে তারা উহানে এই ভাইরাসকে কাবু করতে পেরেছে, তা নিয়ে সবিস্তার আলোচনা করতে রাজি ভারতের সঙ্গে। করোনা মোকাবিলায় নয়াদিল্লিকে সব রকম সহায়তা করবে চিন।
ডিসেম্বরে চিনের উহানে প্রথম করোনা-সংক্রমণ দেখা যায়। সে দেশের সরকারের বক্তব্য, উহানে প্রথম ধরা পড়ালেও অকাট্য ভাবে বলা যায় না ভাইরাসের উৎপত্তি চিনেই। বিশ্ব জুড়েই এখন চিন প্রচার করছে, চিনা ভাইরাস বলে যেন একে দাগিয়ে দেওয়া না-হয়। নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত সুন উইদং টুইট করে বলেছেন, “এই ভাইরাসকে চিনা ভাইরাস নামকরণের চেষ্টা মেনে নেওয়া যায় না। এই সঙ্কীর্ণ মনোভাবের বিরোধিতা করতে আমাদের বিদেশমন্ত্রী ভারতীয় বিদেশমন্ত্রীকে আহ্বান জানিয়েছেন। জয়শঙ্কর এ ব্যাপারে আশ্বাসও দিয়েছেন।”
বিষয়টি নিয়ে আমেরিকার ভূমিকারও কড়া নিন্দা করেছে চিন। উইদং-য়ের কথায়, “বার বার বলা সত্ত্বেও আমেরিকার কিছু লোক একই কাজ করে চলেছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সমুদয় কিন্তু কোনও একটি দেশের সঙ্গে কোনও ভাইরাসকে এক করে দেখার বিরোধী।”
চিনের দিক থেকে এই অনুরোধ এলেও বর্তমানে অত্যন্ত ঘোরালো এবং সঙ্কটজনক বিশ্ব পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লি কিন্তু এ নিয়ে আগ বাড়িয়ে কিছু মন্তব্য করতে চাইছে না। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, চিনের কাছ থেকে সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেটা আমেরিকা বা পশ্চিমের বিরুদ্ধে গিয়ে নয়। বরং চিন কিছুটা চাপে থাকলে সুবিধাই ভারতের।