ছবি: এএফপি।
করমর্দনের জন্য দেশের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রীর দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। কিন্তু সেই বাড়ানো হাত সযত্নে এড়িয়ে গেলেন মন্ত্রী।
ঘটনাস্থল বার্লিন। শরণার্থী সংক্রান্ত একটি বৈঠকে যোগ দিতে সেখানে গিয়েছিলেন আঙ্গেলা। মন্ত্রী করমর্দন প্রত্যাখ্যান করায় হেসে ফেললেন চ্যান্সেলর। কোভিড-১৯-এর আতঙ্ক এখন এ ভাবেই চেপে বসেছে ইউরোপীয়দের মনে।
করোনা-আতঙ্কে কার্যত কাঁপছে গোটা ইউরোপ। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এর রোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আজই এই ভাইরাসে সংক্রমণের আশঙ্কা মাঝারি থেকে বেশি বলে ঘোষণা করেছে। ইটালিতে সোমবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৫২। আক্রান্তের সংখ্যা দু’হাজার পেরিয়েছে। জার্মানিতে আক্রান্ত ১৫০ জন। অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে জার্মানির সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া। শুধু সেখানেই আক্রান্তের সংখ্যা ৭৪। ব্রিটেনে এখনও পর্যন্ত ৩৪ জন নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আজ জানিয়েছেন, যে ভাবে দেশে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তাতে আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। তাঁর কথায়, ‘‘আগামী কয়েক দিনে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। সব রকম ভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।’’ জরুরি পরিষেবার আওতায় পড়েন না, এমন সব কর্মীকে ইরানের দূতাবাস থেকে দ্রুত সরানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছে বরিসের সরকার।
আমেরিকাতেও ফের মৃত্যু হয়েছে সংক্রমিত এক ব্যক্তির। নিউ ইয়র্ক থেকে ফ্লরিডা নতুন সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে বিভিন্ন প্রদেশ থেকে। গত শুক্রবার আমেরিকায় প্রথম মৃত্যু হয় করোনা আক্রান্ত এক জনের। দ্বিতীয় মৃত্যুটি হয়েছে কার্কল্যান্ডে। ৭০ বছরের এক ব্যক্তি শনিবার মারা যান। নিউ ইয়র্কের এক মধ্যবয়সি মহিলা সম্প্রতি ইটালি থেকে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরীক্ষায় তাঁর ভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। আপাতত তাঁকে ম্যানহাটনের একটি হাসপাতালে আলাদা করে রাখা হয়েছে। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। ক্যালিফর্নিয়ায় গত কাল একসঙ্গে পাঁচ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ কোরিয়া ও ইটালি যাওয়া নিয়ে নতুন করে নির্দেশিকা জারি করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।
মস্কো থেকেও প্রথম সংক্রমণের খবর মিলেছে আজ। গত মাসের শেষের দিকে ইটালি থেকে ফিরেছিলেন ওই রুশ যুবক। প্রথম সংক্রমণের খবর মিলেছে সেনেগাল থেকেও। এই দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক ফরাসি নাগরিক। গত মাসেই ফ্রান্সে গিয়েছিলেন তিনি।
আজই প্রকাশ্যে হাঁটু মুড়ে বসে ক্ষমা চেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ধর্মগুরু লি ম্যান হি। দায়েগু প্রদেশের একটি গির্জা থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় হু হু করে সংক্রমণ ছড়িয়েছিল বলে অভিযোগ ছিল। হি জানান, অনিচ্ছাকৃত ভাবে হলেও তাঁদের ধর্মস্থান থেকেই বহু মানুষের মধ্যে ওই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে।
কালই বিশ্বে মৃত্যু তিন হাজার ছাড়িয়েছে। চিনে মৃত ২,৯১২। বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৯০ হাজারের কাছাকাছি। চিনে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কম। কমেছে মৃত্যুর হারও। গত দু’মাসে যেখানে এক দিনে শুধু হুবেই প্রদেশেই সাড়ে পাঁচশো মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছিলেন, কাল সেই সংখ্যাটাই ছিল দু’শোর নীচে। আক্রান্তদের চিকিৎসায় উহানে যে ১৬টি অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি হয়েছিল, রোগীর সংখ্যা কম থাকায় একটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।