Coronavirus

সংক্রমণে রোজই রেকর্ড আমেরিকায়, অগত্যা মাস্কে ট্রাম্প

আমেরিকায় প্রতি দিন রেকর্ড হারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতি দিন সংক্রমিত হচ্ছেন ৬০ হাজারের বেশি মানুষ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২০ ০৪:৫৫
Share:

মুখ-বন্ধ: ওয়াল্টার রিড ন্যাশনাল মিলিটারি মেডিক্যাল সেন্টারে সপার্ষদ ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এপি

শেষমেশ মাস্ক পরে প্রকাশ্যে দেখা গেল তাঁকে।

Advertisement

আমেরিকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৩৩ লক্ষ ছাড়িয়ে যাওয়ার পরে এই প্রথম জনসমক্ষে মাস্ক পরলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার মেরিল্যান্ডে এক সামরিক হাসপাতালে আহত সেনাকর্মী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময়ে মাস্ক পরেন ট্রাম্প। এর আগে মে মাসে মিশিগান সফরের সময়ে মাস্ক পরা ট্রাম্পের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ পায়। তবে সেই সময়ে সাংবাদিকদের ছবি তুলতে দিতে বিস্তর আপত্তি ছিল প্রেসিডেন্টের। শনিবার হোয়াইট হাউস ছাড়ার সময়ে খানিক বার্তা দেওয়ার ঢঙেই তিনি বলেন, ‘‘আমি কখনওই মাস্কের বিরোধী ছিলাম না। তবে আমি মনে করি ওটা সময় ও জায়গা বুঝে পরা উচিত।’’ স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী সচিব কিন্তু আজ বলেন, মাস্ক এ বার পরতেই হবে সবাইকে। হটস্পটে অন্তত ৯০ শতাংশ মানুষের মুখে মাস্ক দেখতে চান তিনি।

আমেরিকায় প্রতি দিন রেকর্ড হারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতি দিন সংক্রমিত হচ্ছেন ৬০ হাজারের বেশি মানুষ। সূত্রের খবর, এই অবস্থায় ট্রাম্পকে প্রকাশ্যে মাস্ক পরার জন্য রীতিমতো অনুরোধ করছিলেন উপদেষ্টারা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আমেরিকায় অতিমারির সামাল দিতে না পারায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন ট্রাম্প। তার উপরে মাস্ক না-পরার মতো দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজের প্রভাব পড়তে পারে নভেম্বরের নির্বাচনে। এই আশঙ্কাতেই ঘনিষ্ঠদের পরামর্শে মাস্কে রাজি হয়েছেন প্রেসিডেন্ট। এ দিন ওয়াল্টার রিড মিলিটারি হাসপাতালের করিডরে গাঢ় রঙের মাস্ক পরে হাঁটতে দেখা যায় ট্রাম্পকে। না-থেমেই সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতালে এলে আপনাকে মাস্ক পরতেই হবে। বিশেষ করে এখানে বহু মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: চিনের বিরুদ্ধে ভারতের পাশে না-ও দাঁড়াতে পারে আমেরিকা, সন্দিহান বোল্টন

আরও পড়ুন: ভারত-আমেরিকার এই সম্পর্ক গড়ে উঠতে ছ’দশক লেগেছে: জয়শঙ্কর

মে মাসেই ইউএস সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোলের তরফে মাস্ক পরে বাড়ির বাইরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তাতে অবশ্য কর্ণপাত করেননি ট্রাম্প। সাংবাদিকদের সেই সময়ে সাফ বলেছিলেন, ‘‘আমি এ নিয়ম মানতে পারব না। অন্য দেশের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, রাজা, রানিকে মুখে মাস্ক পরে স্বাগত জানাচ্ছি— এমনটা আমি ভাবতেও পারছি না।’’ কথা মতোই রাজনৈতিক সভা, সাংবাদিক সম্মেলন সর্বত্র বিনা-মাস্কে দেখা যায় ট্রাম্পকে। এমনকি হোয়াইট হাউসের অন্দরে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স-সহ বেশ কয়েকজন সহযোগী আক্রান্ত হওয়ার পরেও নির্বিকার ছিলেন তিনি। প্রকাশ্যে মাস্ক পরার জন্য মে মাসে তাঁর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনকে নিয়ে যথেচ্ছ ঠাট্টা-তামাশাও করেন। ট্রাম্প ঘনিষ্ঠরা বলছেন, প্রেসিডেন্টের ধারণা তিনি যদি মাস্ক পরেন তবে দেশের মানুষ মনে করবেন, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি আতঙ্কিত। পাশাপাশি অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের চেষ্টা থেকে সকলের নজর ঘুরে যাবে জনস্বাস্থ্য সঙ্কটের দিকে। তাই সরাসরি না বললেও, শনিবার হোয়াইট হাউস ছাড়ার সময়ে তাঁর গলার সুরে ধরা পড়েছে— নেহাত হাসপাতালে যাচ্ছেন বলেই নিমরাজি হয়ে মাস্ক পরেছেন তিনি।

বিশ্বে করোনা
মৃত - ৫,৬৯,৯০১
আক্রান্ত ১,২৯,৭৮,৪৫৪
সুস্থ - ৭৫,৫৯,১৮১

এ দিকে, মাস্ক পরা নিয়ে গড়িমসি রয়েছে ব্রিটেনের মানুষের। ন্যাশনাল অ্যামাডেমি অব সায়েন্সের এক কর্তার পরামর্শ, মাস্ক না-পরা যত দিন না অপরাধের তালিকায় আনা হবে, তত দিন হুঁশ ফিরবে না মানুষের। আজ গোটা বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১কোটি ৩০ লক্ষ ছুঁইছুঁই। এই অবস্থায় ফ্লরিডায় ওয়াল্ট ডিজ়নি ওয়ার্ল্ডের দু’টি পার্ক খুলতেই ভিড় জমিয়েছেন পর্যটকেরা। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, মাস্ক থেকে শুরু করে পারস্পরিক দূরত্ব রাখা-সহ যাবতীয় বিধিনিষেধ মানতে হচ্ছে পর্যটক ও কর্মীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন