Georgia

সংক্রমণ বাড়ুক, চুল কাটা এখন যে খুব জরুরি!

সরকারের যুক্তি, জর্জিয়ার ১ কোটি বাসিন্দার মধ্যে তেত্রিশ হাজার আটশো মানুষ চাকরি হারিয়ে বেকার ভাতার আবেদন করেছেন।

Advertisement

শুভশ্রী নন্দী

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২০ ০৫:৩৫
Share:

ছবি: সংগৃহীত

আগামিকাল সকালে, আমরা যে প্রদেশে থাকি সেই জর্জিয়া, খোদ গভর্নরের নির্দেশে, বলবে— ‘চিচিং ফাঁক’। এই প্রদেশে প্রায় ২০ হাজার করোনা-আক্রান্ত থাকলেও কাল সকাল থেকেই খুলে যাবে সেলুন, জিম, বোলিং ও ট্যাটু করানোর দোকান। আর সামনের সপ্তাহে খুলবে রেস্তরাঁ ও সিনেমা হল। ‘জরুরি পরিষেবা’র মধ্যে পড়ে বলে বন্দুকের দোকান তো আগাগোড়া খোলাই ছিল!

Advertisement

শুধু জর্জিয়া নয়। একই পদক্ষেপ করছেন টেনেসি, সাউথ ক্যারোলাইনার গভর্নরেরাও। এই তিনটি প্রদেশের কোনওটিতেই সংক্রমণের গ্রাফটি সুবিধাজনক নয়। আমি যে শহরে থাকি, সেই আটলান্টায় একটি বিশাল ‘কনভেনশন সেন্টার’ আছে। বঙ্গ সম্মেলনে সেখানে দশ হাজার মানুষ আসেন। অন্যান্য জরুরি বৈঠক ও সম্মেলনও হয় সেখানে। সেই কনভেনশন সেন্টারে ‘ইমার্জেন্সি হাসপাতাল’ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এ দিকে, আস্তিন গুটিয়ে সরকার বলছে, ‘খোলো খোলো দ্বার’। আমরা নিরুপায়। শোচনীয় পরিণতির জন্য তৈরি হচ্ছি। নিউ ইয়র্কের ‘গণকবর’ আমাদের কিছুই শেখাতে পারল না!

সরকারের যুক্তি, জর্জিয়ার ১ কোটি বাসিন্দার মধ্যে তেত্রিশ হাজার আটশো মানুষ চাকরি হারিয়ে বেকার ভাতার আবেদন করেছেন। এই অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়েই উত্তর আমেরিকার বারোটি প্রদেশে লকডাউন-বিরোধী মিছিল ও সমাবেশ হচ্ছে। পারস্পরিক দূরত্ব না রেখেই, মাস্ক-গ্লাভস না পরেই, লোকজন প্রতিবাদে পথে নামছেন। তাঁদের হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘পারস্পরিক দূরত্ব মানে কমিউনিজ়ম’, ‘আমরা আবার আমেরিকাকে চালু করব’, ‘স্বাধীনতা বিক্রি হতে দেব না’ আর ‘করোনা ভাইরাস পুরোটাই ভুয়ো’। এর বিরোধিতায় নার্সেরা নীরবে মাস্ক পরে প্রতিবাদে দাঁড়ালে তাঁদের শুনতে হচ্ছে—‘তোমরা নার্স নও, অভিনেতা, তোমরাই ভাইরাল, কমিউনিজ়ম চাইলে চিনে ফিরে যাও’-এর মতো মন্তব্য।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘জীবাণুনাশক ইঞ্জেকশন নিন’, ফের বেফাঁস ডোনাল্ড ট্রাম্প

সব মেঘের এক চিলতে রুপোলি রেখা থাকে।

অক্লান্ত পরিশ্রমে রোগীদের সুস্থ করে তোলার জন্য কানেক্টিকাটের দক্ষিণ উইন্ডসর হাসপাতালে ভারতীয় বংশোদ্ভূত চিকিৎসক উমা মধুসূদনকে তাঁর বাড়ির সামনে সেনাদের কায়দায় কুর্নিশ জানিয়ে গেল সাধারণ জনগণের গাড়ি, পুলিশের গাড়ি, অ্যাম্বুল্যান্স ও অগ্নিনির্বাপক গাড়ির এক ধীর মিছিল। নিয়ম ভেঙে সুনসান রাস্তায় হর্ন বাজিয়ে, জানলা দিয়ে পোস্টার নাচিয়ে, গাড়ির ‘মুন রুফ’ ও ‘হুড’ খুলে, এই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ— এমন শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের দৃশ্য আমেরিকা কি আগে কখনও দেখেছে!

(লেখক বাচিকশিল্পী, সমাজসেবী)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement