যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন-মুজাহিদের মৃত্যু পরোয়ানা জারি

’৭১-এ সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, দেশান্তর ও ধর্মান্তর-সহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিএনপি নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং জামাতে ইসলামির মহাসচিব ও প্রাক্তন মন্ত্রী আলি আহসান মহম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির রায়ের পূর্ণাঙ্গ দলিল (অনুলিপি) প্রকাশের এক দিনের মাথায় তাঁদের দণ্ড কার্যকর করার পদক্ষেপ শুরু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঢাকা শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৫ ২২:৫৫
Share:

’৭১-এ সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, দেশান্তর ও ধর্মান্তর-সহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিএনপি নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং জামাতে ইসলামির মহাসচিব ও প্রাক্তন মন্ত্রী আলি আহসান মহম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির রায়ের পূর্ণাঙ্গ দলিল (অনুলিপি) প্রকাশের এক দিনের মাথায় তাঁদের দণ্ড কার্যকর করার পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের হাত ঘুরে আজ বিকালে প্রাণদণ্ড কার্যকরের আদেশ কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছনোর পরেই কাশিমপুর জেলে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও ঢাকা জেলে বন্দি জামাতে ইসলামির মহাসচিব আলি আহসান মহম্মদ মুজাহিদকে তা পড়ে শোনানও হয়। এ সময় তাঁরা দু'জনেই নির্লিপ্ত ছিলেন বলে জেল কর্তারা জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে লাল কাগজে মুড়ে এই মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে যাওয়া হয় জেল কর্তৃপক্ষের কাছে। সালাউদ্দিন ও মুজাহিদকে দেওয়া প্রাণদণ্ডের আদেশের বিস্তারিত দলিল বুধবার প্রকাশ করে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা-সহ আপিল বিভাগের চার বিচারপতি ওই দলিলে সই করেন।

Advertisement

দণ্ডিত এই দুই আসামি ছিলেন ’৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী। মুজাহিদ ছিলেন রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা। খুন-লুঠ-ধর্ষণের একাধিক আভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে তাঁদের উভয়ের বিরুদ্ধেই ।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের আদেশ পড়ে শোনানোর মধ্য দিয়ে দণ্ডিত দু’জনের বিরুদ্ধে রায় কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল। তবে ১৫ দিনের মধ্যে আসামীরা রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করার সুযোগ পাবেন। তিনি আরও জানান, আসামিপক্ষের রিভিউ আবেদনের জন্য রাষ্ট্র বসে থাকবে না। দণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেবে রাষ্ট্র। আসামিরা পুনর্বিবেচনার আর্জি জানালে তখন দণ্ড কার্যকর প্রক্রিয়া স্থগিত থাকবে। পুনর্বিবেচনা করা হলে সর্বোচ্চ আদালতে ফের দ্রুততম সময়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। রিভিউ আবেদনের নিষ্পত্তির পর সর্বোচ্চ দণ্ড বহাল থাকলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন আসামিরা। প্রাণভিক্ষা না চাইলে সুবিধামতো সময়ে দণ্ড কার্যকর করবে রাষ্ট্র।

Advertisement

বুধবার সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ২১৭ পৃষ্ঠার এবং মুজাহিদের ১৯১ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। যা বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটেও রয়েছে। রায়ে স্বাক্ষর করেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা-সহ আপিল মামলার রায় প্রদানকারী চার বিচারপতি। অন্য বিচারপতিরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

সালাউদ্দিন চৌধুরী হলেন পঞ্চম ও মুজাহিদ হলেন চতুর্থ ব্যক্তি যাঁদের মামলায় আনা আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হল। বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির জমানায় দণ্ডিতরা বাংলাদেশের মন্ত্রিসভায় বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন