জুটির খোঁজে মাঠে ইমরান, থামবে সন্ত্রাস, আশা ভারতের

জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিও আজ বলেন, ‘‘ইমরান খান ভারতের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উচিত এই প্রস্তাব গ্রহণ করা।’’

Advertisement

ইসলামাবাদ

সংবাদ সংস্থা  শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৮ ০২:১৪
Share:

বৃহস্পতিবারই বক্তৃতায় ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চেয়েছিলেন ইমরান। আজ এ নিয়ে প্রথম বিবৃতি দিল ভারত। এক বিবৃতিতে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, ‘‘পাকিস্তানের মানুষ সাধারণ নির্বাচনে যোগদান করে গণতন্ত্রের প্রতি তাঁদের বিশ্বাসের পরিচয় দিয়েছেন। এতে আমরা খুশি। আমরা চাই প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে পাকিস্তান সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ দেশ হয়ে উঠুক। আমাদের আশা, সন্ত্রাসমুক্ত দক্ষিণ এশিয়া গড়তে নতুন পাক সরকার সহযোগিতা করবে।’’

Advertisement

জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিও আজ বলেন, ‘‘ইমরান খান ভারতের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উচিত এই প্রস্তাব গ্রহণ করা।’’

সরকার গড়তে চেয়ে ‘কাপ্তান’ ইমরান অবশ্য এখনও দোরে দোরে! এখনও পর্যন্ত ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ২৭০টি আসনের ফল ঘোষণা করেছে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন। তাতে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও কেন্দ্রে সরকার গড়াটা এখন ইমরান খানের দলের (পিটিআই) কাছে শুধু সময়ের অপেক্ষা। তবে সে ক্ষেত্রে জোট গড়তে হবে ইমরানকে। ইনিংস শুরুর আগে সেই ওপেনিং পার্টনারের খোঁজেই নেমে পড়েছেন ‘কাপ্তান’। ১৪ আগস্ট দেশের স্বাধীনতা দিবসের আগেই ইমরান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন বলে জানিয়েছে তাঁর দল।

Advertisement

কেন্দ্রে মন্ত্রিসভা কেমন হবে, গতকালই এ নিয়ে দলীয় নেতাদের সঙ্গে এক দফা বৈঠক করেছেন ইমরান। আজ দিনভর ছোট ছোট দল এবং বেশ কয়েক জন জয়ী নির্দল প্রার্থীর সঙ্গে দেখা করেন তিনি। পঞ্জাব প্রদেশে আবার সরকার গঠনের দৌড়ে এগিয়ে পিএমএল-এন। তাই সেখানেও সমীকরণ জটিল।

তাঁর দলের দাবি, কথাবার্তা ভালই এগোচ্ছে। কিন্তু নেতার মাথাব্যথা বা়ড়িয়ে আজই আবার বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে নতুন করে ভোটগণনা শুরু করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যার মধ্যে রয়েছে লাহৌরের ৯ নম্বর কেন্দ্রে ইমরানের জেতা আসনটিও। পিএমএল-এন নেতা সাদ রফিক মাত্র ৬৮০টি ভোটে হেরেছেন সেখানে। আর তার পরেই তিনি অভিযোগ করেন, ইমরানকে জেতাতেই ওই কেন্দ্রে বিনা কারণে কয়েকশো ভোট বাতিল করা হয়েছে। মুলতান, ফয়জ়লাবাদেও পিটিআই-এর কয়েকটি জেতা আসনের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে নওয়াজ় শরিফের দল। কেউ বলছেন, ‘এত নোংরা ভোট এর আগে কখনও হয়নি পাকিস্তানে।’ কাঁটার মুকুট মাথায় নিয়ে ইমরান শুধু একটা কথাই বলছেন— ভোটে কারচুপি নিয়ে তদন্ত হলে তাতে পূর্ণ সহযোগিতা করবে তাঁর দল।

৭১ বছরের ইতিহাসে অর্ধেকেরও বেশি সময় পাকিস্তানকে শাসন করেছে সেনাবাহিনী। সেখানে দাঁড়িয়ে গণতান্ত্রিক সরকার গঠন একটা বড় চ্যালেঞ্জ ইমরানের কাছে। তবে যে ভাবে তাঁর দল এ বার রাওয়ালপিন্ডিতে শরিফদের দুর্গ কার্যত ধসিয়ে দিয়েছে, তাতে ইমরানের নেতৃত্বকেই সাধুবাদ দিচ্ছেন কূটনীতিকদের একাংশ। খাইবার পাখতুনখোয়া প্রাদেশিক আইনসভায় জয় ধরে রাখাটাও পিটিআই-এর মাইলফলক ছোঁয়া বলছেন তাঁরা। সেখানকার ৯৭টি আসনের মধ্যে ৬৬টিই পেয়েছে পিটিআই। পাখতুনখোয়ায় খুব সম্ভবত বন্ধু পারভেজ় খট্টককেই ফের মুখ্যমন্ত্রী করবেন ইমরান।

৯০ দিনের মধ্যে দেশ থেকে সব দুর্নীতি মুছে ফেলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইমরান। ৫ বছরে ১ কোটি চাকরিও দেবেন বলেছেন। মসনদে যাওয়ার আগে কাপ্তান এখন সব চেয়ে বেশি জোর দিচ্ছেন কূটনীতিতে। কাল সৌদি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। পরে জানান, ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে রাজি রিয়াধ। পড়শি দেশ চিনের সঙ্গে সম্পর্ক পোক্ত করতে চাইছেন ইমরান। গত কাল রাতে সম্পূর্ণ চিনা ভাষায় তাঁর দল যে টুইট করেছে, তার মোদ্দা কথা— চিনের থেকে দারিদ্র দূরীকরণ শিখতে চাইছে পাকিস্তান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন