International News

আমার মেয়ের মৃত্যু নিয়ে খেলবেন না, ট্রাম্পকে খোলা চিঠি মায়ের

নিজের মেয়ের মৃত্যুর ফায়দা তুলতে দেবেন না ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। এমনটাই হুঁশিয়ারি দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে খোলা চিঠি দিলেন ব্রিটিশ নাগরিক রোজি আয়লিফ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১৬:৫৫
Share:

মিয়ার সঙ্গে রোজি আয়লিফ। ছবি: ফেসবুক।

নিজের মেয়ের মৃত্যুর ফায়দা তুলতে দেবেন না ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। এমনটাই হুঁশিয়ারি দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে খোলা চিঠি দিলেন ব্রিটিশ নাগরিক রোজি আয়লিফ। গত অগস্টে আততায়ীর ছুরিকাঘাতে মারা যান রোজির মেয়ে মিয়া আয়লিফ-চুং। আততায়ীর হাত থেকে মিয়াকে বাঁচাতে গিয়ে মারা যান টম জ্যাকসন নামে এক ছাত্র। ঘটনাচক্রে জানা যায়, ওই আততায়ী মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত। ওই ঘটনাকে মুসলিম সন্ত্রাসের উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরতে উঠেপড়ে লেগেছে ট্রাম্প সরকার। কিন্তু, ধর্মের সঙ্গে সন্ত্রাসকে মিশিয়ে দেওয়ার ডোনান্ড ট্রাম্পের এই ‘প্রচেষ্টা’কে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন রোজি। রোজির সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন টমের পরিবারের সদস্যরাও।

Advertisement

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে গিয়ে সেখানকার স্থানীয় এক হস্টেলে উঠেছিলেন রোজির ২১ বছরের মেয়ে মিয়া। সেখানেই মাস কয়েক ধরে বসবাস করছিলেন ইংল্যান্ডের আর এক ছাত্র টম জ্যাকসনও। একই হস্টেলে ছিল আততায়ী স্মেইল আয়াদও। ফেসবুকে আয়াদের বিভিন্ন পোস্ট দেখে পুলিশের দাবি, মিয়ার প্রতি আকৃষ্ট ছিল আয়াদ। এমনকী, তাঁকে বিয়ে করার কথাও হস্টেলের আবাসিকদের জানিয়েছিল সে। পুলিশকে আবাসিকেরা জানিয়েছে, গত ২৩ অগস্ট মিয়াকে হস্টেলের বিছানা থেকে জোর করে তুলে নিয়ে আক্রমণ করে আয়াদ। আয়াদের হাত থেকে বাঁচতে পালাতে যায় মিয়া। কিন্তু, মিয়াকে ধরে ফেলে ফের তাঁর উপর বার বার ছুরি চালায় আয়াদ। মিয়ার চিৎকারে ছুটে আসে টম। তাঁকে বাঁচাতে গেলে টমের উপরও ঝাঁপিয়ে পড়ে আয়াদ। ঘটনাস্থলেই মারা যান মিয়া। গুরুতর জখম অবস্থায় টমকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে মারা যান তিনি। স্থানীয় তথা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে চলে আসে সেই ঘটনা। মাস পাঁচেক কেটে গেলেও মিয়ার কথা ভাবলেই এখনও মন ভার হয়ে ওঠে রোজির। তিনি লিখেছেন, “বছরখানেক হল মিয়াকে দেখিনি। কিন্তু, আমার কাছে সে এখনও বেঁচে আছে, ভাল আছে, অস্ট্রেলিয়া ঘুরে বেড়াচ্ছে।” তবে নিজের মেয়েকে নিয়ে আবেগপ্রবণ হলেও তাঁর আততায়ীকে নিয়ে ততটাই সতর্ক মন্তব্য রোজির। ওই ঘটনাকে মুসলিম সন্ত্রাসের তকমা দিতে নারাজ তিনি। খোলা চিঠিতে তাঁর দাবি, “ওই অভিযুক্ত আততায়ীর বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে অনেক আজেবাজে কথা বলা হয়েছে। সে মুসলিম মৌলবাদী নয়। এমনকী, কখনও মসজিদেও পা রাখেনি।”

আরও পড়ুন

Advertisement

মাসুদ নিয়ে ট্রাম্পের চাপে ভেটো চিনের

রোজির মতোই কুইন্সল্যান্ডের পুলিশও একে নাশকতামূলক হামলা বলে মানতে চাইছে না। আয়াদের স্কিৎজোফ্রেনিয়া ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওই মামলাটি মেন্টাল হেলথ কোর্টে পাঠানো হয়। এর পর কেটে গিয়েছে বেশ কয়েক মাস। কিন্তু ফের ফিরে এসেছে মিয়ার স্মৃতি। তবে এ বার হোয়াইট হাউসের অলিন্দে। ট্রাম্প সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের ‘মিথ্যেবাদী’ তকমা দিয়েছিলেন। ট্রাম্পের অভিযোগ, বিশ্ব জুড়ে জঙ্গি হামলার বহু ঘটনাকে ধামাচাপা দিচ্ছে ‘অসৎ’ সংবাদমাধ্যম। গত সোমবার এ ধরনের হামলায় নিহতদের এক তালিকা প্রকাশ করার প্রতিশ্রুতি দেয় হোয়াইট হাউস। গতকাল সেই প্রকাশিত তালিকায় ছিল মিয়া ও টমের হত্যাকারী আয়াদের নামও। আর এতেই ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে মিয়া ও টমের পরিবারের। সঙ্গে সঙ্গে প্রেসি়ডেন্ট ট্রাম্পকে খোলা চিঠি লেখার সিদ্ধান্ত নেন রোজি। তিনি লিখেছেন, “আমার মেয়ের মৃত্যু নিয়ে আর কোনও নিরীহ মানুষকে নিপীড়িত হতে দেব না।” একই মত টমের পরিবারেরও। ট্রাম্পের অভিবাসন নীতিকে তুলোধোনা করে রোজি বলেন, “শরণার্থীদের সঙ্গে এমন ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে যেন ভোগ্যপণ্যের মতো তাঁদের যখন খুশি ছুড়ে ফেলে দেওয়া যায়। তাঁদের সুরক্ষা নিয়েও ছেলেখেলা হচ্ছে বলেই আমাদের তথাকথিত সভ্য সমাজে মৃত্যুমিছিল শুরু হয়েছে।”

আরও পড়ুন

খারাপ কিছু হলে দায় বিচারপতিরই, ফুঁসছেন ট্রাম্প

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন