সীমান্ত বন্ধ হবে, দরকারে গুলি চলবে, শরনার্থী রুখতে হুঙ্কার ট্রাম্পের

মেক্সিকোর তিহুয়ানার এল শাপার‌্যালের শিবির থেকে এক সপ্তাহ হল ক্যালিফর্নিয়ার সান ডিয়েগো সীমান্ত বরাবর এগোচ্ছেন শরণার্থীদের একটি বড় দল। এ খবর মিলতেই ট্রাম্প ঘোষণা করে দিয়েছেন, ওঁদের ঢুকতে দেওয়া যাবে না।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৮ ০২:২০
Share:

ফের হুঙ্কার ট্রাম্পের।

মধ্য আমেরিকা থেকে কয়েকশো শরণার্থী জড়ো হয়েছেন দেশের দক্ষিণে, মেক্সিকো সীমান্ত ঘেঁষা শহরে। এ খবর হোয়াইট হাউসে পৌঁছতে বিশেষ সময় লাগেনি। ফের ফুঁসে উঠলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শরণার্থীদের ঢুকতে দেওয়া তো হবেই না, প্রয়োজনে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হবে, জানিয়ে দিলেন তিনি।

Advertisement

মেক্সিকোর তিহুয়ানার এল শাপার‌্যালের শিবির থেকে এক সপ্তাহ হল ক্যালিফর্নিয়ার সান ডিয়েগো সীমান্ত বরাবর এগোচ্ছেন শরণার্থীদের একটি বড় দল। এ খবর মিলতেই ট্রাম্প ঘোষণা করে দিয়েছেন, ওঁদের ঢুকতে দেওয়া যাবে না। প্রেসিডেন্টের নির্দেশে সীমান্তে আকাশপথে নজরদারি চালাচ্ছে মার্কিন হেলিকপ্টার। ছ’হাজার সেনার কড়া পাহারা বসানো হয়েছে সীমান্তে। সাংবাদিকদের কাছে ট্রাম্প আজ বলেন, ‘‘যদি দেখি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে, তা হলে একটা দীর্ঘ সময়ের জন্য এ দেশে প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হবে। যত দিন না আবার সব কিছু ঠিক হচ্ছে।’’ মেক্সিকোর উদ্দেশে বেশ হুমকির সুরেই তিনি যোগ করেন— ‘‘গোটা সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হবে। বাড়িয়ে বলছি না, গোটা সীমান্ত। আমেরিকায় মেক্সিকোর গাড়ি বিক্রিও বন্ধ করে দেওয়া হবে।’’ প্রয়োজনে সেনাকে গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হবে, তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প।

এ মাসের গোড়াতেও এমন হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। জানিয়ে দিয়েছিলেন, বৈধ কাগজ ছাড়া কাউকে আশ্রয় দেওয়ার প্রশ্নই নেই। তাঁর সেই নির্দেশনামা অনুযায়ী, মধ্য আমেরিকা থেকে মেক্সিকো দিয়ে যে ভাবে শরণার্থীবোঝাই ক্যারাভান আমেরিকায় ঢোকার চেষ্টা করছে, তা জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক। এ ভাবে আমেরিকায় ঢুকে পড়ে কেউ আশ্রয় চাইলে, পাবেন না। ট্রাম্পের সেই নির্দেশিকার নিন্দা করে সান ফ্রান্সিসকোর ফেডারেল বিচারক জন এস টাইগার বলেছিলেন, ‘‘প্রেসিডেন্টের এক্তিয়ারে থাকুক বা না থাকুক, নতুন একটা শর্ত চাপিয়ে তিনি অভিবাসন আইন সংস্কার করতে পারেন না।’’ এ-ও জানান, কেউ আমেরিকায় এসে আশ্রয় চাইলে, তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না। এতে সাময়িক ভাবে কোণঠাসা মনে করা হলেও, ট্রাম্প সেই পুরনো অবস্থানেই।

Advertisement

আরও পড়ুন: করাচির চিনা কনসুলেটে জঙ্গি হামলা, নিহত ৭

দারিদ্র, দুর্ভিক্ষ, কর্মসংস্থানের অভাবে ধুঁকছে মধ্য আমেরিকার তিন দেশ— এল সালভাডর, গুয়াতেমালা ও হন্ডুরাস। কাজের খোঁজে সেখান থেকে দলে দলে লোক মেক্সিকো হয়ে আমেরিকায় ঢোকার চেষ্টায়। এমনই একটি দল হাজির হয়েছে তিহুয়ানা সীমান্তে। মূলত হন্ডুরাস থেকে আসা এই দলে মহিলা ও বাচ্চাও রয়েছে। প্রায় ৪৪০০ কিলোমিটার পথ হেঁটে, পথচলতি গাড়িতে লিফ্‌ট নিয়ে তাঁরা এসে পৌঁছেছেন সীমান্তে। তিহুয়ানায় একটি কর্মসংস্থান সংক্রান্ত মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে শরণার্থীদেরও চাকরির আবেদন জানানোর সুযোগ দেওয়া হয়। স্থানীয় সংস্থাগুলোতে কাজ নিয়েছেন অনেকে। কিন্তু বেশির ভাগ লোকই আমেরিকায় ঢুকতে মরিয়া।

আরও পড়ুন: দুর্ঘটনা কমাতে ব্যর্থ হয়েছি: ক্ষমা চেয়ে স্বীকারোক্তি স্যামসাংয়ের

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এ দিন মার্কিন প্রশাসনের কিছু আধিকারিক এবং মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা শরণার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, এ ভাবে আমেরিকায় না ঢুকে বৈধ উপায়ে আসুন। কিন্তু শরণার্থীরা তাতে এল শাপার‌্যাল ব্রিজের উপরে দাঁড়িয়ে চিৎকার করতে থাকেন, ‘‘আমরা ফিরব না।’’ ভিড়ের মধ্যে এক জন চিৎকার করে বলেন, ‘‘আমাদের ঢুকতে দিন। আমরা ঢুকবোই। হন্ডুরাসে পরিবারকে ছেড়ে এসেছি। কাজ জোটাতেই হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন