(বাঁ দিকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভ্লাদিমির পুতিন (ডান দিকে)। ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
ফের রাশিয়াকে হুঁশিয়ারি দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। রবিবারই ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, রাশিয়ার উপর দ্বিতীয় দফায় নিষেধাজ্ঞা চাপানোর জন্য তিনি প্রস্তুত। এ বার রাশিয়াকে জব্দ করার পরিকল্পনাও প্রকাশ্যে আনলেন তিনি। হোয়াইট হাউসের বাইরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “রাশিয়ার অর্থনীতি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে। আর এর ফলে আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য হবেন (ভ্লাদিমির) পুতিন।” কী উপায়ে এগুলি হবে, তা-ও জানিয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
রবিবার ইউক্রেনের রাজধানী কিভে সরকারি সচিবালয়ে (ক্যাবিনেট বিল্ডিং) হামলা চালিয়েছে রুশ সেনা। কিভের সচিবালয়ে রুশ হানার পরেই মস্কোর উপর চটেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, “আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এই বিষয়ে এক সঙ্গে কাজ করতে পারে। যে সমস্ত দেশ রাশিয়ার তেল কিনছে, তাদের উপর আরও আর্থিক নিষেধাজ্ঞা এবং অতিরিক্ত শুল্ক চাপানো হবে।” এর ফলেই রুশ অর্থনীতি ভেঙে পড়বে বলে মনে করছেন ট্রাম্প।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই পরিকল্পনা কার্যকর করলে ভারতীয় পণ্যে শুল্কের পরিমাণ আরও বাড়বে কিনা, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। রাশিয়া থেকে তেল আমদানির জন্য ইতিমধ্যেই ভারতের অধিকাংশ পণ্যে আরও ২৫ শতাংশ (মোট ৫০ শতাংশ) শুল্ক আরোপ করেছে আমেরিকা। তবে ভারতের তুলনায় চিন রাশিয়া থেকে আরও বেশি পরিমাণ তেল আমদানি করলেও বেজিঙের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়নি। এ বার চিনের উদ্দেশেও ট্রাম্প শুল্কবাণ নিক্ষেপ করতে চলেছেন কিনা, তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে ভারত এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে আলোচনা চলছে। এই আবহে ট্রাম্প যে ভাবে তাঁর পরিকল্পনায় ইইউ-কে শামিল করতে চাইছেন, তাতে অন্য ইঙ্গিত দেখছেন কেউ কেউ।
আমেরিকার রাজস্বসচিব স্কট বেসেন্টও রবিবার ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। রাশিয়ার উপর আরও নিষেধাজ্ঞা চাপানোর আভাস দিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিকেও আমেরিকার সঙ্গে টানার চেষ্টা করেছেন বেসেন্ট। রবিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি ভারত কিংবা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম না-করেই নয়াদিল্লির উপর অতিরিক্ত মার্কিন শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেন। ট্রাম্পকে সমর্থন করে তিনি বলেন, “আমি মনে করি যে সমস্ত দেশ রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা করে চলেছে, সেই সমস্ত দেশের উপর শুল্ক আরোপ সঠিক সিদ্ধান্ত।”
প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে চলে আসা রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে মধ্যস্থতার চেষ্টা চালাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কির সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠক সেরে ফেলেছেন তিনি। শোনা যাচ্ছিল, দু’দেশের রাষ্ট্রনেতাকে মুখোমুখি আলোচনার টেবিলে বসানোর জন্য রাজিও করিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে এখনও পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। কিছু দিন আগেই পুতিন দাবি করেছেন, তিনি জ়েলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের জন্য প্রস্তুত। তবে বৈঠকের জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কিকে যেতে হবে মস্কোয়। শনিবার পুতিনের এই প্রস্তাব খারিজ করে দেন জ়েলেনস্কি।