US China Trade

কেন চিনের পণ্যে আচমকা এত চড়া শুল্ক? জিনপিঙের কোন কাজে হতাশ ট্রাম্প? দীর্ঘ পোস্টে দিলেন ১০০ শতাংশের ব্যাখ্যা

বর্তমানে চিনা পণ্যে মার্কিন শুল্কের পরিমাণ ৩০ শতাংশ। ১ নভেম্বর থেকে ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্ক কার্যকর হলে মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৩০ শতাংশ! কেন হঠাৎ চিনের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:৫২
Share:

(বাঁ দিকে) চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের নীতিতে ক্ষুব্ধ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১০০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছেন চিনের পণ্যের উপর। বর্তমানে চিনা পণ্যে মার্কিন শুল্কের পরিমাণ ৩০ শতাংশ। ১ নভেম্বর থেকে ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্ক কার্যকর হলে মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৩০ শতাংশ! কেন হঠাৎ চিনের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ? এত চড়া শুল্কের কারণ কী? সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে তা ব্যাখ্যা করেছেন ট্রাম্প নিজেই।

Advertisement

মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, আচমকা চিন সমস্ত দেশকে বাণিজ্য সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বিরল খনিজের রফতানি তারা নিয়ন্ত্রণ করতে চলেছে। বিশ্ব বাজারে বিরল খনিজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পণ্য। চাহিদাও বিপুল। স্মার্টফোন থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিক গাড়ি, যন্ত্রপাতি, সামরিক সরঞ্জাম— বিবিধ ক্ষেত্রে বিরল খনিজ প্রয়োজন হয়। এই পণ্যে চিন বরাবর সমৃদ্ধ। এ বার তাতেই নিয়ন্ত্রণের নীতি আরোপ করায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন ট্রাম্প। লিখেছেন, ‘‘চিনে খুব অদ্ভুত একটা ব্যাপার দেখা যাচ্ছে। ওরা সারা বিশ্বকে চিঠি পাঠিয়ে বলছে, বিরল খনিজের সঙ্গে সম্পর্কিত সকল পণ্যের রফতানি ওরা নিয়ন্ত্রণ করতে চায়! এমন জিনিস আগে কেউ কখনও দেখেনি। এতে বাজার আটকে যাবে। সব দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’’

অন্যান্য দেশও চিনের এই পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ, দাবি ট্রাম্পের। এমনকি, একাধিক দেশ থেকে চিনের চিঠি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ট্রাম্পের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, ‘‘গত ছ’মাসে চিনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুব ভাল ছিল। বাণিজ্যে ওদের এমন একটা পদক্ষেপ সেই কারণেই আরও বিস্ময়কর লাগছে। আমার অবশ্য বার বার মনে হয়েছে, ওরা মিথ্যা বলছে। সেই সন্দেহই সত্যি হল। মনে তো হচ্ছে, অনেক দিন ধরে ওরা এই পরিকল্পনা করেছে। কিন্তু চিনকে সারা বিশ্বের বাজারে এ ভাবে অচলাবস্থা তৈরি করতে দেওয়া যাবে না।’’

Advertisement

এর পর পাল্টা হুমকির সুরে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘‘ওরা একটা একচেটিয়া অবস্থান নিতে চাইছে। কিন্তু আমেরিকার অবস্থানও একচেটিয়া এবং চিনের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। এখনও পর্যন্ত আমি তা ব্যবহার করার প্রয়োজন মনে করিনি। এ বার করতে হবে।’’

চলতি মাসের শেষে দক্ষিণ কোরিয়ায় চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সঙ্গে ট্রাম্পের সাক্ষাতের কথা ছিল। সেই বৈঠক বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প লিখেছেন, ‘‘আমি প্রেসিডেন্ট জিনপিঙের সঙ্গে কথা বলিনি, কথা বলার প্রয়োজন নেই। দু’সপ্তাহের মধ্যে জিনপিঙের সঙ্গে আমার দেখা করার কথা ছিল। আর তার প্রয়োজন মনে করছি না। শুধু আমার কাছে নয়, সমস্ত রাষ্ট্রনেতার কাছে এটা খুব বিস্ময়কর।’’

সম্প্রতি ইজ়রায়েল এবং প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে শান্তি-সমঝোতা করতে পেরেছেন বলে দাবি করেছেন ট্রাম্প। তাঁর দেওয়া শান্তি প্রস্তাবের প্রথম দফায় যুযুধান দু’পক্ষই রাজি হয়েছে। পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি ফেরার এই সময়কেই কেন চিন বাণিজ্যিক পদক্ষেপের জন্য বেছে নিল? প্রশ্ন তুলেছেন ট্রাম্প। লিখেছেন, ‘‘সময়টা কি কাকতালীয়? ওদের বিরুদ্ধে আমাকে পদক্ষেপ করতেই হবে এ বার। চিন থেকে যে যে পণ্য আমেরিকায় আসে, তার উপর বিশাল শুল্ক আরোপ করা হবে।’’ এর কয়েক ঘণ্টা পরে চিনের উপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্কের কথা ঘোষণা করেন ট্রাম্প। এখনও পর্যন্ত বেজিঙের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement