সিরিয়া থেকে সেনা সরাতে সই ট্রাম্পের

সিরিয়া থেকে সেনা সরছেই। ঘোষণার চার দিনের মাথায় গত কাল এই সংক্রান্ত প্রশাসনিক নির্দেশে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সই করেছেন বলে হোয়াইট হাউস সূত্রের খবর। 

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:৪৭
Share:

ডোনাল্ড ট্রাম্প

সিরিয়া থেকে সেনা সরছেই। ঘোষণার চার দিনের মাথায় গত কাল এই সংক্রান্ত প্রশাসনিক নির্দেশে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সই করেছেন বলে হোয়াইট হাউস সূত্রের খবর।

Advertisement

সিরিয়া থেকে ২ হাজার মার্কিন সেনা তুলে নেওয়ার ঘোষণা করতে গিয়ে ট্রাম্প যুক্তি দিয়েছিলেন— আইএস জব্দ, তাই আর সেখানে সেনা রাখার কোনও যুক্তি নেই।

তাঁর এই ঘোষণায় গোড়াতেই ঝড় উঠেছিল ঘরে-বাইরে। বেঁকে বসেছিলেন খোদ প্রেসিডেন্টের ‘কাছের লোক’ হিসেবে পরিচিত প্রতিরক্ষা সচিব জিম ম্যাটিস। ম্যাটিসের পর-পরই ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন আইএস-বিরোধী আন্তর্জাতিক জোটের মার্কিন প্রতিনিধি ব্রেট ম্যাকগার্ক। ট্রাম্প তবু অনড়ই। এমনকি, আফগানিস্তান থেকেও অর্ধেক সেনা সরানোর কথা ঘোষণা করেছে তাঁর প্রশাসন।

Advertisement

অথচ আন্তর্জাতিক মহলের একটা বড় অংশ বলছে, সিরিয়া থেকে সেনা সরানোর সিদ্ধান্ত হটকারিতা। সে দেশের এখনও কয়েকটি ঘাঁটিতে বেশ সক্রিয় জঙ্গিরা। এই অবস্থায় মার্কিন সেনার না-থাকা মানে দু’টি সম্ভাবনার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রথমত, ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে আইএস। এবং দ্বিতীয়ত, হঠাৎ তৈরি হওয়া শূন্যস্থান দখলে মরণকামড় দিতে পারে রাশিয়া।

ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে আজ চূড়ান্ত অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ। সিরিয়া এবং ইরাকে আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মার্কিন সেনা জোটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ফ্রান্স। মাকরঁর কথায়, ‘‘একজোট হয়ে যুদ্ধ মানে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই। মাঝপথে ময়দান ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার কোনও অর্থ হয় না। এর প্রভাবটা মারাত্মক হতে পারে।’’

আইএস যে পুরোপুরি নির্মূল হয়নি, ট্রাম্প নিজেও সেটা মানছেন। তবু ফ্রান্সে নয়, বাকি যুদ্ধ জয়ে তিনি ভরসা রাখছেন তুরস্কের উপরে। গত কাল তিনি টুইট করে বলেন, ‘‘তুর্কি প্রেসি়ডেন্ট রিসেপ তায়িপ এর্দোয়ান নিজে আমায় কথা দিয়েছেন, আইএসের শেষ দেখে ছাড়বেন। এবং আমার মনে হয়, এই কাজটা শুধু তিনিই পারবেন।’’ তার পরেই তিনি এক লাইন লেখেন— ‘‘আমার সেনারা ঘরে ফিরছে।’’

ট্রাম্পের এই সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে অনেকে বারাক ওবামার পদাঙ্ক অনুসরণ বলছেন। মুসলিম দুনিয়ায় জর্জ ডব্লিউ বুশের সেনা মোতায়েনকে চ্যালেঞ্চ করেই হোয়াইট হাউসে এসেছিলেন ওবামা। সেই মতো ২০১১-তেই ইরাক থেকে সেনা তুলে নেন তিনি। কিন্তু ২০১৪-য় ফের মসুলের দখল নেয় জঙ্গিরা। আবারও নামে মার্কিন সেনা। ট্রাম্পের সিরিয়া-সিদ্ধান্তকেও কূটনীতিকদের অনেকে ‘রাজনৈতিক’ বলছেন। তাঁদের দাবি, সবটাই ভোটের কথা মাথায় রেখে। আইএস নিধন ছাড়া আমেরিকার কখনওই কোনও সুস্পষ্ট সিরিয়া-নীতি ছিল না বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।

ট্রাম্প তাঁর সিরিয়া-ফেরত সেনাকে অভ্যর্থনা জানানোর মেজাজে। এ দিকে তাঁর প্রশাসনেরই এক রিপোর্ট বলছে, সিরিয়ায় এখনও ১৪ হাজারেরও বেশি আইএস জঙ্গি রয়েছে। প্রতিবেশী ইরাকে আরও বেশি। কাঁটা তাই থাকছেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন