Donald Trump on BRICS

ব্রিক্‌সের ‘আমেরিকাবিরোধী’ নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলে আরও ১০ শতাংশ কর! মোদী ব্রাজ়িলে থাকাকালীনই ঘোষণা ট্রাম্পের

ব্রিক্‌স সম্মেলনের জন্য আপাতত ব্রাজ়িলে রয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখান থেকে পহেলগাঁও সন্ত্রাস এবং ইরানে হামলার বিরুদ্ধে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। শুল্কের বিরোধিতাও করা হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৫ ০৮:৫৭
Share:

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ব্রিক্‌স-এর আমেরিকাবিরোধী নীতির সঙ্গে যে সব দেশ যুক্ত থাকবে, তাদের বাড়তি আরও ১০ শতাংশ কর দিতে হবে মার্কিন পণ্যে। সোমবার সকালে (ভারতীয় সময়) এমনটাই ঘোষণা করলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার থেকেই বিভিন্ন দেশ আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তির কাগজ পেয়ে যাবে, জানিয়েছেন তিনি। আমেরিকার সময় অনুযায়ী সোমবার বেলা ১২টা থেকে ওই কাগজ দেওয়া হবে। কোনও দেশের ক্ষেত্রে তা হবে চুক্তির নথি, কোনও দেশের ক্ষেত্রে শুল্কের চিঠি। সমাজমাধ্যমের একটি পোস্টে এ কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প।

Advertisement

উল্লেখ্য, ব্রিক্‌স সম্মেলনের জন্য আপাতত ব্রাজ়িলে রয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ব্রাজ়িলের রিও ডি জেনেইরো শহরে চলছে দু’দিনের এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন। ব্রিক্‌স-এর প্রাথমিক সদস্য দেশগুলির মধ্যে ভারত ছাড়াও রয়েছে চিন, রাশিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। এ ছাড়াও পরে এই জোটে যোগ দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, ইরান, ইথিওপিয়া, মিশর এবং ইন্দোনেশিয়া। ইতিমধ্যে ব্রিক্‌স থেকে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা এবং ইরানে হামলার বিরুদ্ধে সম্মিলিত বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। যদিও সরাসরি আমেরিকা বা ইজ়রায়েলের নাম করা হয়নি। তবে বার্তা ছিল স্পষ্ট। তার পরেই ট্রাম্প ব্রিক্‌স-এ যুক্ত দেশগুলিকে নিয়ে এই ঘোষণা করলেন। সমাজমাধ্যমে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘‘ব্রিক্‌স-এর আমেরিকাবিরোধী নীতির সঙ্গে কোনও দেশ যুক্ত হলে তাদের উপর বাড়তি ১০ শতাংশ কর চাপানো হবে। এর কোনও ব্যতিক্রম হবে না।’’ আরও একটি পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘‘আমেরিকার শুল্ক-চিঠি বা চুক্তিপত্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হবে সোমবার বেলা ১২টা (ইস্টার্ন টাইম) থেকে।’’

ব্রিক্‌স-এর মঞ্চ থেকে সন্ত্রাস নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন মোদী। নাম করেই বার্তা দিয়েছেন পাকিস্তানকে। বলেছেন, ‘‘সন্ত্রাসের নিন্দা করা আমাদের নীতি হওয়া উচিত। নিজেদের সুবিধা দেখে সন্ত্রাসের নিন্দা করা উচিত নয়। ভারত সন্ত্রাসের শিকার। পাকিস্তান সন্ত্রাসের মদতদাতা। তাই দু’দেশকে একই মাপকাঠিতে ফেলা ঠিক নয়।’’ অনেকেই নিজের ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক সুবিধের জন্য সন্ত্রাস নিয়ে চুপ করে থাকেন বলে জানিয়েছেন মোদী। এর পরেই সন্ত্রাস নিয়ে ব্রিক্‌স-এর যৌথ বিবৃতি আসে, যাতে ছিল পহেলগাঁওকাণ্ডের প্রসঙ্গ। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘আমরা ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরে হওয়া জঙ্গি হামলার কড়া নিন্দা করছি। আমরা সন্ত্রাস প্রসঙ্গে শূন্য সহনশীলতার নীতি নেওয়ার আর্জি জানাচ্ছি। আমাদের মতে, সন্ত্রাসের মোকাবিলায় দ্বিচারিতা করা উচিত নয়। আন্তর্জাতিক আইন মেনে রাষ্ট্রগুলির সন্ত্রাসের মোকাবিলা করা উচিত।’’ রাষ্ট্রপুঞ্জের তালিকায় থাকা সব জঙ্গি ও জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার আহ্বান জানানো হয়েছে ওই বিবৃতিতে।

Advertisement

ব্রিক্‌স থেকে রিও ডি জেনেইরো ঘোষণাপত্রে ইরানে হামলার নিন্দাও করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘‘ইরানের উপর গত ১৩ জুন যে সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে, আমরা তার নিন্দা করছি। এটা আন্তর্জাতিক আইনের এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদের বিরোধী। বিবৃতিতে এসেছে শুল্কের প্রসঙ্গও। বলা হয়েছে, ‘‘বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞামূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ, তা সে নির্বিচারে শুল্ক বৃদ্ধি করাই হোক বা অন্য কোনও ঘোষণা, এগুলি বিশ্ব বাণিজ্যকে আরও পিছিয়ে দেয়। বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করে।’’ আমেরিকার নাম না করা হলেও শুল্ক নিয়ে এই বার্তা যে ট্রাম্পকেই, তা স্পষ্ট। আমেরিকায় দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প ভারত-সহ একাধিক দেশের উপর বাড়তি শুল্ক ঘোষণা করেছেন। ভারতের উপর চাপানো হয়েছে ২৬ শতাংশ কর। তার পর এই শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত তিন মাস স্থগিত রাখা হয়। যে সময়সীমা শেষ হচ্ছে ৯ জুলাই। এই সময়ের মধ্যে বিভিন্ন দেশ আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা চালিয়েছে। কথা চলছে নয়াদিল্লির সঙ্গেও। তবে এখনও ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত হয়নি। তার মাঝেই ব্রিক্‌স নিয়ে বাড়তি শুল্কের এই ঘোষণা করলেন ট্রাম্প। চুক্তিপত্র দেওয়ার কথাও জানিয়ে দিলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement