(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
কাতারের রাজধানী দোহায় ইজ়রায়েলের হামলা নিয়ে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে সতর্ক করে দিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকার সঙ্গে কাতারের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা মনে করিয়ে দিলেন আরও এক বার। তবে সেই সঙ্গে প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের বাধ্যবাধকতা যে ইজ়রায়েলের রয়েছে, তা-ও মেনে নিয়েছেন।
নিউ জার্সি থেকে হোয়াইট হাউসে ফেরার পথে সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ট্রাম্প। গত সপ্তাহে দোহায় ইজ়রায়েলের হামলা প্রসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়। নেতানিয়াহুকে কি কোনও বিশেষ বার্তা দিতে চান? মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘আমি এটাই বলতে চাই যে, ওদের খুব সতর্ক থাকতে হবে। হামাসের বিরুদ্ধে ওদের পদক্ষেপ করতে হবে ঠিকই, কিন্তু কাতার আমেরিকার খুব ভাল বন্ধু।’’ কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল থানিকে ‘অসাধারণ মানুষ’ বলেও উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প।
গত কয়েক বছর ধরে ইজ়রায়েলের সঙ্গে হামাসের যে যুদ্ধ চলছে, তাতে মধ্যস্থতাকারী দেশের ভূমিকা প্রথম থেকে পালন করে আসছে কাতার। আমেরিকার সংঘর্ষবিরতির প্রস্তাব নিয়ে কাতারের একটি ভবনে হামাস নেতারা বৈঠকে বসেছিলেন গত সপ্তাহে। সেখানেই আচমকা হামলা চালায় নেতানিয়াহুর বাহিনী। সরাসরি কাতারের নাম না উল্লেখ করে ইজ়রায়েল বিবৃতি দিয়ে জানায়, হামাসের কিছু নেতাকে নিশানা করে হামলা চালানো হয়েছে। কাতার এই হামলার তীব্র নিন্দা করে। অভিযোগ, এ ভাবে নিরপেক্ষ দেশের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে আন্তর্জাতিক আইন ভেঙেছে ইজ়রায়েল। প্রথম দিকে আমেরিকা এই হামলা থেকে নিজেদের দূরে রেখেছিল। ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি এই হামলার বিষয়ে কিছুই জানতেন না। কাতারের বন্ধুত্ব স্বীকার করে নিয়ে ইজ়রায়েলি হামলার নিন্দা করেন তিনিও।
কিন্তু এ ক্ষেত্রে নেতানিয়াহুর যুক্তি ছিল ভিন্ন। আমেরিকার অতীতের পদক্ষেপের দৃষ্টান্ত টেনেই একটি বিবৃতি দেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী। তোলন ৯/১১ হামলার প্রসঙ্গ। ভিডিয়োবার্তায় তিনি বলেন, ‘‘৯/১১-র হামলার পর আমেরিকা কী করেছিল? এই জঘন্য ঘটনা যে সন্ত্রাসবাদীরা ঘটিয়েছে, তাদের খুঁজে বার করে খতম করার প্রতিজ্ঞা করেছিল আমেরিকা। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদেও একটি প্রস্তাব পাশ করা হয়েছিল এই মর্মে যে, কোনও দেশের সরকার সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয় দিতে পারে না। আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করেছি।’’
ট্রাম্প মেনে নিয়েছিলেন, কাতারে একতরফা ভাবে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। একে ইজ়রায়েলের ‘একার সিদ্ধান্ত’ বলেও উল্লেখ করেছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, আমেরিকার সঙ্গে মিলে কাতারও পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি ফেরানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দোহার ঘটনার পর গত শুক্রবার কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নিউ ইয়র্কে নৈশভোজ সেরেছেন ট্রাম্প। এ বার নেতানিয়াহুকে ফের সাবধান করে দিলেন।