তাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে সীমান্ত সংঘর্ষ চলছেই। ছবি: সংগৃহীত।
খুব শীঘ্রই যুদ্ধবিরতির পথে হাঁটবে তাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে শনিবার এমনই ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল ট্রাম্পের ঘোষণাই সার। এখনও পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত সংঘর্ষ থামার কোনও ইঙ্গিত নেই। বরং দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে গোলাবর্ষণ করার অভিযোগ তুলেছে।
চার দিন ধরে সামরিক সংঘাত চলছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দুই পড়শি দেশের মধ্যে। এখনও পর্যন্ত দুই তরফে মোট ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৩০ জনের মধ্যে রয়েছেন তাইল্যান্ডের ১৩ জন এবং কম্বোডিয়ার আট জন সাধারণ মানুষ। দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় বাস করা দু’লক্ষ মানুষ ইতিমধ্যেই অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত ঘোষণার পরেই তাকে স্বাগত জানিয়েছিল কম্বোডিয়া। তাইল্যান্ড ট্রাম্পের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেও জানায় যে, কম্বোডিয়া তাদের নিরীহ নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো বন্ধ না-করলে তারা আলোচনার টেবিলে বসবে না। তাইল্যান্ডের এই অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দেয় কম্বোডিয়া।
শনিবার ট্রাম্পের ঘোষণার পরেই দু’পক্ষের মধ্যে গোলাবর্ষণ শুরু হয়। তবে এখনও পর্যন্ত নতুন করে কারও হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স তাইল্যান্ড সরকারকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, সোমবার মালয়েশিয়ায় আলোচনায় বসবে যুযুধান দুই দেশ। ভারতীয় সময় সাড়ে ১২টা নাগাদ বৈঠকটি হওয়ার কথা। বৈঠকে থাকার কথা দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর।
ভারতের পূর্বের প্রতিবেশী মায়ানমার। তার ঠিক পূর্ব সীমান্তে রয়েছে তাইল্যান্ড এবং তাইল্যান্ডের পূর্বে কম্বোডিয়া। তাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্কক জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। ভারত থেকে প্রতি বছর প্রচুর মানুষ ব্যাঙ্ককে ঘুরতে যান। বাঙালি পর্যটকের সংখ্যাও কম নয়। কিন্তু সেই তাইল্যান্ডই দীর্ঘস্থায়ী দ্বন্দ্বে জড়িয়ে আছে তার পড়শি কম্বোডিয়ার সঙ্গে। দুই প্রতিবেশীর সংঘাত শতাব্দীপ্রাচীন এবং মূলত সীমান্ত নিয়েই। ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত কম্বোডিয়ায় ফ্রান্সের সাম্রাজ্য ছিল। তারাই কম্বোডিয়ার স্থলসীমান্ত নির্ধারিত করে দিয়েছিল। সংঘাতের জন্মও সেই সীমান্তরেখায়। বছরের পর বছর ধরে সেই সংঘাত আরও গভীর হয়েছে।