Durga Puja 2020

কোলাকুলি না-হয় এ বার তোলা থাক

কিন্তু এই অতিমারি যে জিনিসগুলো নিতে পারেনি তার মধ্যে একটি হল ‘বে-বাসী’ সদস্যদের উৎসাহ আর নতুন কিছু করার ইচ্ছে। প্রাথমিক হতাশা কাটিয়ে তাই আমরা লেগে পড়েছিলাম কী করা যায় ভেবে দেখতে।

Advertisement

রজত দাশ

ফস্টার সিটি (ক্যালিফর্নিয়া) শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২০ ০৩:০৭
Share:

প্রতীকী চিত্র।

আমেরিকার পশ্চিম উপকূলে ক্যালিফর্নিয়া রাজ্যের ছোট্ট শহর ফস্টার সিটি। নামে ‘সিটি’ থাকলেও আয়তনে পানিহাটির দ্বিগুণ, জনসংখ্যা দশ ভাগের এক ভাগ। কর্মসূত্রে শ’দুয়েক বাঙালি পরিবারের বাস। সবাই মিলে সরস্বতী পুজো আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে শতাব্দির শুরুতে প্রতিষ্ঠা করা হয় একটি সংগঠন, নাম ‘বে বাসী’। আস্তে আস্তে প্রসার বাড়ে, সদস্য-ও। ২০০৮ সালে ঠিক হয় দুর্গাপুজো হবে। সপ্তাহের মাঝে বৈঠক, আর সপ্তাহান্তে প্যান্ডেলের জন্য কাঠ কাটা, রং করা, অনুষ্ঠানের রিহার্সাল, আর একসঙ্গে খাওয়া, আড্ডা আর গল্প। দেখতে দেখতে কবে যে পুজো আসত আর চলে যেত বোঝাও যেতো না। প্রতিবার কিছু নতুন মুখ আসে, কিছু অন্য শহরে চলে যায়। এ ভাবেই কাটল ১২ বছর।

Advertisement

কিন্তু ২০২০ বদলে দিল সব কিছুই। মে মাস থেকে পরিকল্পনা করা নেই, জুন থেকে কাঠ কাটা নেই, জুলাই থেকে নাটকের সংলাপ মুখস্ত করার তাগিদ নেই। করোনা নামের এই অদৃশ্য শত্রু এসে বদলে দিল সব। একসঙ্গে পুজোর প্রস্তুতি দূরে থাক, শেষ কবে ভিডিয়ো কলের বাইরে কাউকে দেখেছি, মনে পড়ছে না। এই ‘নেই’ আর ‘হবে না’র তালিকায় সব কিছুর সঙ্গে ঢুকে গিয়েছে আমাদের সাধের পুজোটিও ।

ভাবনা-চিন্তা শুরু হল, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেও পুজোটা করা যায় কি না। কিন্তু দেখা গেল, আমেরিকার বর্তমান যা পরিস্থিতি, কোনও ভাবেই তা সম্ভব নয়। তবে একই সঙ্গে আমরা এ-ও ঠিক করলাম যে, পুজো বন্ধ বলে সৃজনশীলতা বন্ধ থাকতে পারে না। বন্ধ থাকবে না গল্প, আড্ডা, বিজয়া সম্মিলনী, এমনকি পুজোর কেনাকাটাও। সবই হবে ‘ভার্চুয়াল’। দ্বিগুণ উৎসাহে শুরু হল বিচিত্রানুষ্ঠানের আয়োজন। নভেম্বর মাসের ৭-৮-এর সপ্তাহান্তে দু’দিন ব্যাপী শারদীয়া উৎসব। ছোটদের ও বড়দের অনুষ্ঠান, স্টেজের বদলে প্রত্যেকের বাড়ির বৈঠকখানা থেকে। শোনা যাবে স্থানীয় ও স্বনামধন্য শিল্পীদের গান, সামনের সারির চেয়ারের বদলে ড্রয়িংরুমের সোফা থেকে। থাকছেন কলকাতার শিল্পীরাও। অন্য বছর তাঁরা স্বশরীর উপস্থিত থাকেন, এ বার থাকবেন কলকাতা থেকে তাঁদের বাসস্থান থেকে। সমস্ত অনুষ্ঠানের ই-সভাঘরে সবারই অবাধ প্রবেশাধিকার, শুধু কম্পিউটারের সামনে বসার অপেক্ষা। যে সব ব্যবসায়ী প্রতি বছর আমাদের সঙ্গে থাকেন, চলছে তাঁদের নিয়ে অনলাইন পুজোর কেনাকাটার পোর্টাল তৈরির প্রচেষ্ঠা। হবে অনলাইন বিজয়া সম্মিলনী, কম্পিউটারের সামনে বসেই মিষ্টি খাওয়া আর সিঁদুর খেলা। প্রণাম আর কোলাকুলি না হয় এক বছর মুলতুবি রইল।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন