গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
উত্তরের সেমনান এলাকার পরে এ বার দক্ষিণের কেরমান। দেড় মাসের ব্যবধানে আবার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ইরানের একাংশ। আর তা ঘিরেই শুরু হল জল্পনা। আমেরিকা ও জার্মানির ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ সংস্থার দেওয়া তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, রিখটার স্কেলে মঙ্গলবারের ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫.৭-এরও বেশি।
ভূতাত্ত্বিক কারণে ইরানে ভূমিকম্প প্রায়ই হয়। কিন্তু পরমাণু কর্মসূচি ঘিরে ইজ়রায়েল এবং আমেরিকার সঙ্গে সংঘাতের আবহে এই ভূমিকম্প নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। প্রশ্ন উঠেছে আয়াতোল্লা আলি খামেনেই, মাসুদ পেজ়েকশিয়ানের দেশের পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার কারণেই কি কেঁপে উঠেছে মাটি! ‘জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিয়োসায়েন্সেস’ জানিয়েছে, ভূমিকম্পের ‘উৎসস্থল’ ছিল ভূপৃষ্ঠের প্রায় ১০ কিলোমিটার গভীরে।
প্রসঙ্গত, কেরমানের বাম শহরের প্রায় ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণের ওই জনহীন এলাকায় ইরান ফৌজের রেভলিউশনারি গার্ড বাহিনীর একটি শিবির রয়েছে। রয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র মজুত কেন্দ্র। ঠিক যেমন গত জুন মাসে ভূকম্পনের শিকার সেমনানে ইরান ফৌজের ক্ষেপণাস্ত্র কমপ্লেক্স এবং স্পেস সেন্টার রয়েছে। প্রসঙ্গত, আরব এবং ইউরেশীয় টেকটনিক পাতের সংযোগস্থলে রয়েছে ইরান। সে কারণে সেখানে বছরে গড়ে ২,১০০টি ভূমিকম্প হয়। তার মধ্যে ১৫ থেকে ১৬টির কম্পনমাত্রা পাঁচ বা তার বেশি হয়। ১৯৬৬ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ইরানে ৯৬ হাজার ভূমিকম্প হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, পরমাণু পরীক্ষার সময়ে মাটির নীচে বিস্ফোরণ হয়। সেখান থেকে টেকটনিক শক্তি নির্গত হয়। এর ফলে ভূমিকম্প হতে পারে। তবে পরমাণু বিস্ফোরণজনিত কম্পন এবং ভূমিকম্পের মধ্যে ফারাক করতে পারেন ভূবিজ্ঞানীরা। এখনও পর্যন্ত কোনও দেশ বা আন্তর্জাতিক সংগঠন তেহরানের বিরুদ্ধে পরমাণু পরীক্ষার অভিযোগ তোলেনি। প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন ইরানের বিভিন্ন পরমাণুকেন্দ্র এবং সামরিক ঠিকানায় বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল ইজ়রায়েল। সেই অভিযানের পোশাকি নাম ছিল অপারেশন রাইজ়িং লায়ন। এর পরে ২২ জুন ভোরে (ভারতীয় সময়) ইরানের তিন পরমাণুকেন্দ্রে বোমাবর্ষণ করেছিল আমেরিকার ‘বি-২’ বোমারু বিমানগুলি।