শনিবার দুপুরে আগুন লেগে যায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। ছবি: রয়টার্স।
বিমানবন্দরের অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেল বাংলাদেশের পরমাণুকেন্দ্রের সরঞ্জাম। শনিবার ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগুন ধরে যায়। ওই অগ্নিকাণ্ডের নেপথ্যে নাশকতার ছক ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এরই মধ্যে জানা গেল, পরমাণুকেন্দ্রের জন্য রাশিয়া থেকে আমদানি করা ১৮ টন সামগ্রীও পুড়ে গিয়েছে বিমানবন্দরের অগ্নিকাণ্ডে।
পাবনা জেলার ঈশ্বরদীর রূপপুরে দুই ইউনিটের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। প্রথম ইউনিটটিতে চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকেই বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত ওই সময়ের মধ্যে তা চালু করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বাংলাদেশের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ এবং মূল্যায়ন বিভাগের। এরই মধ্যে শনিবারের অগ্নিকাণ্ডে ফের হোঁচট খেল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ।
শনিবার বিমানবন্দরের যে অংশে আগুন লেগেছিল, সেখানেই রাখা ছিল আমদানি করা পণ্যগুলি। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ অনুসারে, রূপপুর পরমাণুকেন্দ্রের জন্য রাশিয়া থেকে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম আনা হয়েছিল ঢাকায়। যে সংস্থা বিমানবন্দরে আমদানি হওয়া পণ্য খালাসের কাজ করে, তার আধিকারিক বিপ্লব হোসেন জানান, ছ’দিন আগে রাশিয়া থেকে আনা প্রায় ১৮ টন বৈদ্যুতিক সামগ্রী এসেছিল ঢাকা বিমানবন্দরে।
তিনি আরও জানান, এই পণ্যগুলি খালাস হওয়ার জন্য পরমাণু শক্তি কমিশন থেকে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ (এনওসি) নিতে হয়। ওই প্রক্রিয়ায় দেরি হওয়ার কারণে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পণ্য খালাস করা যায়নি। রবিবার সেগুলি খালাস হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই সব আগুনে পুড়ে যায়।
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ডেইলি স্টার’ অনুসারে, শনিবারের অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১০০ কোটি ডলারের পণ্য নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছে সে দেশের বস্ত্র রফতানিকারকদের সংগঠন। যদিও সরকারি ভাবে এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি।
স্থানীয় সময় শনিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ আগুন লাগে ঢাকা বিমানবন্দরের ‘কার্গো হোল্ড’ এলাকায়। দ্রুত সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশে। আগুন লাগার ঘটনার পরেই ওই বিমানবন্দরে সাময়িক ভাবে উড়ান পরিষেবা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে নামাতে হয় সেনাও। একই সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত বাহিনীও কাজ করে। সে দেশের দমকলের ৩৭টি ইঞ্জিনকে আগুন নেবানোর কাজে লাগানো হয়। রাত ৯টার (স্থানীয় সময়) কিছু পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে খবর ‘প্রথম আলো’ সূত্রে। তার পরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পর আবার ঢাকা বিমানবন্দরে বিমান পরিষেবা শুরু হয়।