Heatwave in Europe

ফের তাপপ্রবাহে পুড়ছে ইউরোপ! ফ্রান্স, ক্রোয়েশিয়া, ইটালিতে হাঁসফাঁস গরম, আগের রেকর্ড ভেঙে গিয়েছে হাঙ্গেরিতেও

গরমের মরসুমে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার তাপপ্রবাহে পুড়ছে ফ্রান্স। দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশে প্রচণ্ড গরমের সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২৫ ১২:৩৫
Share:

গরমে নাজেহাল ইউরোপ। ছবি: রয়টার্স।

দ্বিতীয় দফার তাপপ্রবাহে পুড়ছে ইউরোপ! শেষ কবে এত গরমে কষ্ট পেয়েছে ইটালি, ফ্রান্স, স্পেনের মতো দেশগুলি, তা মনে করতে পারছেন না অনেকেই। এ বছরের জুনের শেষ ভাগ থেকে জুলাইয়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময়ে পশ্চিম ইউরোপের বেশ কিছু অংশে তাপমাত্রা ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। তার সঙ্গে তাপপ্রবাহ এবং দাবানলের দাপট। এক দিকে ফ্রান্স, স্পেন, ইটালির মতো দেশ যখন তাপপ্রবাহের সঙ্গে যুঝছে, তখন গ্রিস আবার লড়াই চালিয়েছে দাবানলের সঙ্গে। ইউরোপে পর পর দু’টি তাপপ্রবাহ হয়েছে ১৭ জুন থেকে ২ জুলাইয়ের মধ্যে। প্রথম তাপপ্রবাহ চলে ১৭-২২ জুন পর্যন্ত। দ্বিতীয়টি চলে ৩০ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত। এই সময়ে ইউরোপের কোনও কোনও দেশে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যায়। কোনও দেশে সেই তাপমাত্রা ছুঁয়েছে ৪৬ ডিগ্রিও।

Advertisement

গরমের মরসুমে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার তাপপ্রবাহে পুড়ছে ফ্রান্স। দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশে প্রচণ্ড গরমের সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। আর এই পরিস্থিতি দেখে প্যারিসের ডেপুটি মেয়র পেনিলোপ কোমাইটস আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, সেই দিন আর বেশি দূরে নেই, যে দিন প্যারিসে তাপমাত্রা ছোঁবে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে আবহবিদেরা বলছেন, গরমের এই পরিস্থিতি প্যারিসে নতুন নয় । ১৯০০ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে দেশের সবচেয়ে উষ্ণ ১০টি দিনের মধ্যে আটটির রেকর্ড রয়েছে প্যারিসের।

২০১৯ সালে প্যারিসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গিয়েছিল। সেই সময় তাপমাত্রা ছিল ৪২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০২২ সালেও প্যারিস প্রশাসন আবহবিজ্ঞানীদের কাছে জানতে চেয়েছিল, আগামী দিনে কি ৫০ ডিগ্রিতে পৌঁছোবে শহরের তাপমাত্রা? সেই সময় বিজ্ঞানীদের উত্তর ছিল, হ্যাঁ। একই সঙ্গে তাঁরা জানিয়েছিলেন, এই পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে এই শতাব্দীর শেষে অথবা ২০৫০-এর আশপাশেই। তাঁরা এ বিষয়েও সতর্ক করেছিলেন যে, গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন যদি এখনই নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তা হলে এই পরিস্থিতি দেখার জন্য খুব বেশি দিনও অপেক্ষা করতে হবে না।

Advertisement

সেই সময়ে বিজ্ঞানীরা আরও সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন, যেহেতু ইউরোপ জুড়ে জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে, পৃথিবীর গড় উষ্ণতার চেয়ে ইউরোপের উষ্ণতা দ্বিগুণ হবে। ফলে আগামী দিনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। বিজ্ঞানীদের সেই সতর্কবার্তার প্রতিফলনই দেখা যাচ্ছে এ বছরে। তাপপ্রবাহে পুড়ছে ইউরোপ। তার মধ্যে ফ্রান্সে দ্বিতীয় বার তাপপ্রবাহ শুরু হওয়ায় অশনিসঙ্কেত দেখছেন আবহবিজ্ঞানীরা। আর সে কারণেই ওই পরিস্থিতির সঙ্গে যুঝতে কোমর বাঁধছে ফ্রান্স। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পরিকল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে।

ক্রোয়েশিয়াতে সম্প্রতি তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছেছে। শুধু গরমের দাপট নয়, দাবানলের সঙ্গেও যুঝতে হচ্ছে ক্রোটসদের। হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টেও তাপমাত্রার আগের সব রেকর্ড ভেঙে গিয়েছে। সোমবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস ও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার মুখপাত্র ক্লেয়ার নালিসের মতে, বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধির গড়ের দ্বিগুণ গতিতে গরম বাড়ছে ইউরোপে। এই রকম ভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে মহাদেশটির লক্ষ লক্ষ মানুষ ঝুঁকির মুখে পড়ছেন। উত্তর গোলার্ধের দেশগুলিতে এই সময় তাপপ্রবাহের ঘটনা অস্বাভাবিক নয়, তবে তাপমাত্রার এই ঊর্ধ্বগতি আগে দেখা যায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement