International News

একসময়ের কুখ্যাত গ্যাংস্টার, এখন নুডলস বিলি করেন গরিবদের

নিউ তাইপেই শহরে একটি নুডলসের দোকান চালান ইয়েনের মা। নুডলস ছাড়াও সেই স্টলে পর্ক, চিংড়ি সঙ্গে বাঁধাকপিও মেলে।  আর এই সব কিছুই সাধারণ খরিদ্দারদের জন্য মেলে ন্যায্য দামে।  কিন্তু যাঁদের সামর্থ্য নেই?

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

তাইওয়ান শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৭:৫৩
Share:

খাবার তৈরি করতে ব্যস্ত ইয়েন।

এক সময় কুখ্যাত গ্যাংস্টার ছিলেন। আর এখন দিন গুজরান হচ্ছে গরিব মানুষজনের জন্য নুডলস বিলি করে।

Advertisement

সেই ছোট বেলাতেই অপরাধ জগতের সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাইওয়ানের নিউ তাইপেই শহরের ইয়েন ওয়েই-শানের। যখন তাঁর ১৫ বছর বয়স, একটি দলের সঙ্গে তীব্র গোলমালে জড়িয়ে পড়েন। হাতাহাতিও হয় তাঁদের সঙ্গে। আর সেখানেই মৃত্যু হয় একজনের।

সেই ১৫ বছর বয়সেই অনিচ্ছাকৃত খুনের দায়ে জেল হয় ইয়েনের। সাড়ে চার বছর কারাবন্দি থাকতে হয়। কিন্তু জেল থেকে বেরনোর পর এক্কেবারে অপরাধ জগতেরই লোক বনে যান। গড়ে ওঠে নিজের বাহিনী। দীর্ঘ দিন চলছিল এ ভাবেই। টার্গেট হয়ে পড়েন পুলিশের। বছর আটেক আগে ধরা পড়ে যান ইয়েন। তবে আদালত থেকে এটাই ‘শেষ সুযোগ’ বলে ক্ষমা করে দেওয়া হয় ইয়েনকে।

Advertisement

আরও পড়ুন: সুমো পালোয়ানরা কী খায় জানেন?

আরও পড়ুন: সিনেমা হলের মেঝে খুঁড়তেই বেরিয়ে এল রাশি রাশি স্বর্ণমুদ্রা!

আর তার পরেই যেন দিনে দিনে অন্য স্বাধীনতার স্বাদ পেতে থাকছিলেন ইয়েন। তাঁর কথায় ‘‘ওই সুযোগটাই যেন আমার ঘুম ভাঙিয়ে দিয়েছিল। তখন থেকেই আমার পরিবার আর স্বাধীনতাকে আগলে আগলে রাখি আমি।’’

নিউ তাইপেই শহরে একটি নুডলসের দোকান চালান ইয়েনের মা। নুডলস ছাড়াও সেই স্টলে পর্ক, চিংড়ি সঙ্গে বাঁধাকপিও মেলে। আর এই সব কিছুই সাধারণ খরিদ্দারদের জন্য মেলে ন্যায্য দামে। কিন্তু যাঁদের সামর্থ্য নেই?

মা’র সঙ্গে দোকানে ইয়েন।

তাঁদের জন্য বিনামূল্যেই এই সব খাবারের বন্দোবস্ত করে থাকেন ইয়েন এবং তাঁর মা। ইয়েন বলছিলেন, ‘‘মাসে প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ বাউল নুডলস ফ্রিতেই গরিব মানুষজনকে দেওয়া হয়।’’ চার বছর আগে মা’র সঙ্গে এই কাজে হাত দিয়েছিলেন ইয়েন। আর আজ পর্যন্ত প্রায় ৪০,০০০ বাউল নুডলস বিনামূল্যেই মানুষকে বিলি করেছেন বলে জানাচ্ছেন এক সময়ের গ্যাংস্টারের। ইয়েনের মতে, ‘‘মূলত বৃদ্ধ মানুষজন আর বেকার যুবকেরাই বিনামূল্যে খাবারের জন্য আবেদন করে থাকেন।’’

তবে শুধুমাত্র নুডলসের দোকানেই দিন কাটে না ইয়েনের। জেলে গিয়ে বন্দিদের সঙ্গে রীতিমতো আলাপচারিতাও জমাতে যান ইয়েন। ৬২ বছরের আর এক প্রাক্তন গ্যাংস্টার ইয়েনের দোকানের প্রতিদিনের খরিদ্দার। পরিবারের সঙ্গেও সমস্ত যোগাযোগ ছিন্ন করে ফেলেছেন সেই ব্যক্তি। ইয়েন বলছেন, ‘‘আমি অনেক গ্যাংস্টারকেই দেখেছি, নিজের জীবনটা এই ভাবে শেষ করে ফেলতে। মাঝেমধ্যে আমারও ভেবে কষ্ট হয় যে, আমিও জীবনের কতটা সময় এই সব করেই নষ্ট করেছি।’’

অপরাধ জগতের সঙ্গে যুক্ত থাকাকালীন সময়ে মনে হতো আমি যেন একটা দড়ির উপর দিয়ে হাঁটাচলা করছি। কারণ, যে কোনও মুহূর্তেই আমার জন্য একজন শত্রু অপেক্ষা করে রয়েছেন। আর এখন এমন মানুষের সঙ্গে দেখা হয়, যাঁরা আমাকে দেখে সত্যিই খুব খুশি।

ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া।

সারা বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা নিয়ে বাংলায় খবর পেতে চোখ রাখুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন