যুদ্ধ-পরবর্তী সিরিয়া।
অগ্নিগর্ভ সিরিয়ায় অবশেষে ১ মাসের যুদ্ধবিরতি। দীর্ঘ টালবাহানার পরে গত কাল রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের ১৫টি স্থায়ী সদস্য দেশ সর্বসম্মতিক্রমে এই প্রস্তাবে সায় দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বাহিনীর লাগাতার অভিযানে পূর্ব গুটা-সহ বিভিন্ন এলাকায় আটকে পড়া সাধারণ নাগরিকদের জরুরি চিকিৎসা এবং সব রকমের সাহায্য পৌঁছে দিতেই এই যুদ্ধবিরতি বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। যদিও এই ঘোষণার মধ্যেই বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় আজ ফের হামলার খবর মিলেছে।
এই মুহূর্তে সিরিয়ায় একমাত্র পূর্ব গুটাই এখনও বিদ্রোহীদের দখলে রয়েছে। আর রাশিয়ার সাহায্য নিয়ে এই এলাকা দখলে মরিয়া বাশার আল আসাদের বাহিনী। গত রবিবার থেকে দামাস্কাসের অদূরে ওই এলাকায় নাগা়ড়ে বোমাবর্ষণ করে চলেছে সিরিয়া। স্থানীয়দের দাবি, এই এক সপ্তাহে মিনিটে ১০ থেকে ২০ বার পর্যম্তও বিমান হানা হয়েছে গুটায়। বৃষ্টির মতো ধেয়ে এসেছে ক্ষেপণাস্ত্র। যার জেরে নিহত হয়েছেন অন্তত ৫০০ জন। যার মধ্যে ১২৭টি শিশু।
সিরিয়ার হাল ফেরাতে গত বৃহস্পতিবার, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির খসড়া প্রস্তাব পেশ করে কুয়েত ও সুইডেন। চাপ আসে আমেরিকা-সহ আরও কয়েকটি দেশের তরফে। পূর্ব গুটাকে ‘পৃথিবীর বুকে নরক’ বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও। কিন্তু আসাদ সরকারের বন্ধু হিসেবে পরিচিত রাশিয়ার আপত্তিতেই প্রস্তাব পাশ করানো যায়নি। নিরাপত্তা পরিষদের ভোটগ্রহণ আটকে যায় শুক্রবারও। অগত্যা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সম্মতি আদায়ে আলাদা চিঠি লেখেন ফরাসি প্রেসি়ডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ এবং জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল। শনিবার তারই ফল মিলেছে বলে দাবি করেছে নিরাপত্তা পরিষদের এক সূত্র। তবে রাশিয়ার চাপেই আল কায়দা, আল নুসরা ফ্রন্ট বা আইএসের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীকে এই যুদ্ধবিরতি আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। এদের উপরে হামলাকে কোনও ভাবেই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন বলতে নারাজ সিরিয়া ও রাশিয়া।