সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের বার্তা এল ব্রিকস মঞ্চ থেকে। ছবি: এএফপি।
অপ্রত্যাশিত ধাক্কা পাকিস্তানের জন্য। পাকিস্তানের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র চিনের মাটিতে আয়োজিত হয়েছে এ বছরের ব্রিকস শিখর সম্মেলন। আর এ বছরই ব্রিকসের ইতিহাসে প্রথম বার পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনগুলির নাম করে সন্ত্রাসের কঠোর নিন্দা করা হল ব্রিকসের যৌথ বিবৃতিতে। লস্কর-ই-তৈবা, জইশ-ই-মহম্মদ, হাক্কানি নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হল।
ব্রিকস বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘আমরা সেই সব জঙ্গি হামলার কঠোর নিন্দা করছি, যাতে নিরীহ আফগান নাগরিকদের মৃত্যু হচ্ছে। এই অঞ্চলের নিরপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে এবং তালিবান, আইএসআইএল/ দয়েশ, আল কায়দা ও তার শাখা ইস্টার্ন তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্ট, ইসলামিক মুভমেন্ট অব উজবেকিস্তান, হাক্কানি নেটওয়ার্ক, লস্কর-ই-তৈবা, জইশ-ই-মহম্মদ, টিটিপি এবং হিজব উত-তাহরির সৃষ্ট হিংসা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।’’
বিবৃতিতে পাকিস্তানের নাম নেই ঠিকই। কিন্তু, লস্কর, জইশ, হাক্কানির মতো সংগঠন যে পাকিস্তানের মাটি থেকেই তাদের কার্যকলাপ চালায়, তা গোটা বিশ্বে কারও অজানা নয়। তাই ব্রিকসের এই যৌথ বিবৃতি ইসলামাবাদের উপর চাপ নিঃসন্দেহে বাড়াল। যে সব দেশ সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয় দিচ্ছে, তাদের প্রত্যেককে সতর্ক করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘আমরা জোর দিয়ে বলছি, সন্ত্রাস যারা চালাচ্ছে, সংগঠিত করছে বা সমর্থন করছে, তাদের ফল ভুগতেই হবে।’’
এ বারের ব্রিকস সম্মেলন এখনও পর্যন্ত স্বস্তিদায়ক মোদীর পক্ষে। ছবি: পিটিআই।
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে গঠিত ব্রিকস সম্মেলনে সন্ত্রাস প্রশ্নে আগেও সরব হয়েছে ভারত। ব্রিকসের মঞ্চ থেকে পাকিস্তানকে কঠোর বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু যৌথ বিবৃতিতে কখনও সন্ত্রাস প্রশ্নে পাকিস্তানকে কাঠগড়ায় তোলা হয়নি। গত বছর ভারতেই আয়োজিত হয়েছিল ব্রিকস শিখর সম্মেলন। গোয়ায় আয়োজিত সেই সম্মেলনের যৌথ বিবৃতিতে যাতে সন্ত্রাস প্রশ্নে পাকিস্তানকে বার্তা দেওয়া হয়, ভারত সে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু মূলত চিন এবং রাশিয়ার বাধায় ভারতের সে চেষ্টা ভেস্তে গিয়ছিল। কিন্তু এ বার চিনের মাটিতে আয়োজিত সম্মেলনের যৌথ বিবৃতিতেই পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেওয়া হল।
আরও পড়ুন: লাইভ: পাক জঙ্গি সংগঠনগুলিকে কড়া বার্তা ব্রিকস থেকে
ব্রিকস সম্মেলন শুরুর আগে চিনের তরফে ভারতকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছিল, পাক সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ যেন এ বার আর তোলা না হয়। শেষ পর্যন্ত সন্ত্রাস প্রশ্নে সরাসরি পাকিস্তানের নাম উচ্চারণ করা হল না। কিন্তু সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের পাশাপাশি চিনও কড়া বার্তা দিল। যৌথ বিবৃতিতেও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দেওয়া হল। ব্রিকস ভুক্ত দেশগুলির উপর যে কোনও ধরনের সন্ত্রাসবাদী হামলার নিন্দা করা হল আলাদা করে। এবং এই প্রথম বার পাক জঙ্গি সংগঠনগুলির নাম করে কঠোর বার্তা দেওয়া হল। কূটনীতিকদের একাংশ বলছেন, এতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের বক্তব্য আরও জোর তো পেলই। একইসঙ্গে চাপ বেড়ে গেল পাকিস্তানের উপরেও।