Russia Ukraine War

Russia-Ukraine War: যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনকে সমর্থন করে ‘দেশবিরোধী’ হলেন চিনা যুবক! প্রতিবাদে মুখে আঁটলেন ব্ল্যাক টেপ

চিনা নাগরিকের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডল নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে। এমনকি ইউক্রেন থেকে বাড়ির লোকের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারছেন না বলে অভিযোগ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওডেসা শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২২ ১৫:৩৮
Share:

মুখে ব্ল্যাকটেপ লাগিয়ে ভিডিয়ো পোস্ট চিনা ভ্লগারের। ছবি- সংগৃহিত

বছর কয়েক আগে ইউক্রেনের তৃতীয় সর্বাধিক জনবহুল শহর ওডেসায় এসেছিলেন ওয়াং জিজিয়ান। যুদ্ধবিধ্বস্ত শহরের ছবি পোস্ট করে বাবা-মাকে বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, তিনি সুস্থ আছেন। অক্ষত আছেন। কিন্তু সেই ভিডিয়োই হল কাল। তাঁকে 'দেশবিরোধী' বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে, অভিযোগ করলেন বছর ছত্রিশের ওয়াং। চিনা যুবকের দাবি, বারবার ইউক্রেনের চিনা দূতাবাসের কর্মীরা এসে তাঁর কাছে জানতে চাইছেন ভিডিয়ো পোস্ট করার জন্য ঠিক কত টাকা নিয়েছেন তিনি। প্রতিবাদে মুখে ব্ল্যাকটেপ এঁটে ভিডিয়ো করেছেন ইউক্রেনে থাকা এই চিনা নাগরিক। যদিও তাতেই থেমে নেই বিতর্ক।

Advertisement

ওয়াংয়ের সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্ট থেকে জানা যাচ্ছে, আর্ট কলেজের পড়ুয়া ছিলেন তিনি। নাচ-গান, আঁকাআঁকিতে সমান পারদর্শী। তাই কাজের সূত্রে যখন তিনি ওডেসায় যান, সেখানকার শৈল্পিক পরিবেশ তাঁকে মুগ্ধ করে। ভ্লগার ওয়াং সে সব নিয়মিত সামাজিক মাধ্যমে ‘পোস্ট’ করতেন।

কিন্তু পরিস্থিতি বদলে গেল গত মাসে। চোখের সামনে সাধারণ মানুষের উপর রুশ সেনার আক্রমণ দেখে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন তিনি। তার পর তাঁর একের পর এক ভিডিয়ো বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হতে শুরু করে। সেই থেকে শুরু বিড়ম্বনারও।

Advertisement

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে চিন কোনও অবস্থান না নিলেও প্রচ্ছন্ন ভাবে তারা রাশিয়ার পাশে আছে বলে মনে করেন কূটনীতিবিদদের একাংশ। অন্য দিকে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের যে সব খবর চিনের সংবাদমাধ্যম দেখাচ্ছে, ওয়াংয়ের ভিডিয়ো ঠিক তার বিপরীত বার্তা দিচ্ছে। বিভিন্ন ভিডিয়োয় তাঁকে রুশ সেনার সমালোচনা করতে শোনা গিয়েছে। তাতেই চটেছে চিনা নেটাগরিক থেকে দূতাবাস। ওয়াংকে ‘দেশবিরোধী’ আখ্যা দিয়েছেন কেউ কেউ। তাঁর অভিযোগ, ক্রমাগত হুমকি পাচ্ছেন তিনি। কেউ কেউ জানাচ্ছেন তিনি যেন আর চিনে না ফেরেন। এমনকি ইউক্রেন দূতাবাসের যে কর্মীর সঙ্গে ওডেসায় আসার পর থেকেই তাঁর ভাল সম্পর্ক, তিনিও বিরক্ত বলে জানাচ্ছেন ওয়াং। তাঁর কথায়, তিনি আমায় বলেছেন, ‘‘আপনার এখনকার আচার-ব্যবহার দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে। আপনার সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করছি।’’

যদিও এই চিনা ভ্লগারের দাবি, তিনি দেশবিরোধী কী কাজ করেছেন, নিজেই জানেন না। শুধু যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের ছবি তুলে ধরেছেন। কারও পক্ষই নেননি। কেবল তাঁর মতো সাধারণ মানুষের দুর্দশার ছবি তুলে ধরেছেন।

যুবকের অভিযোগ, তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডল নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে। এমনকি বাড়ির লোকের সঙ্গে তিনি আর যোগাযোগ করতে পারছেন না বলে একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেছেন। এ সবের পরেও নিজের অবস্থানে অবশ্য অনড় চিনা নাগরিক। তিনি জানান, ইউক্রেন ছেড়ে যাওয়ার কোনও বাসনা নেই তাঁর। অন্তত যত দিন না যুদ্ধ শেষ হবে এবং ইউক্রেনের জয় দেখবেন, তত দিন তো নয়ই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন