Mohammad Javad Zarif

রাইসিনা মঞ্চে বিমান ধ্বংসের ব্যাখ্যা ইরানের

রাইসিনা সংলাপের মঞ্চকে ব্যবহার করে আজ মূলত আমেরিকার উদ্দেশ্যে তোপ দেগেছেন জারিফ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২০ ০৫:৫৭
Share:

রাইসিনা সম্মেলনে ইরানের বিদেশমন্ত্রী জাভেদ জারিফ।—ছবি পিটিআই।

ইউক্রেনের যাত্রিবাহী বিমান ধ্বংস নিয়ে নয়াদিল্লির রাইসিনা সম্মেলনে প্রবল চাপ তৈরি হল তেহরানের উপর। ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের নেতৃত্বের সঙ্গে দফায় দফায় আজ ইরান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন সে দেশের বিদেশমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সর্বত্রই তাঁকে বিমান ধ্বংস নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। তবে ইরানি বিদেশমন্ত্রীর যুক্তি, আমেরিকার তৈরি করা আতঙ্কের পরিবেশের জন্যই এই ‘অনিচ্ছাকৃত’, ‘ক্ষমাহীন ভুল’টি হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘সঙ্কটজনক পরিস্থিতির কারণেই এই দুর্ঘটনা।’’

Advertisement

রাইসিনা সংলাপের মঞ্চকে ব্যবহার করে আজ মূলত আমেরিকার উদ্দেশ্যে তোপ দেগেছেন জারিফ। সেই সংঘাতে আজ সম্মেলনের আয়োজক দেশ ভারতকেও পাশে টানার চেষ্টা করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘গোটা ঘটনাটির দায় স্বীকার আমাদের সামরিক বাহিনীর যথেষ্ট সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। কেন এমন ঘটল? কারণ, তখন সঙ্কট ছিল। সঙ্কটের সময় মানুষ ভুল করে। ক্ষমাহীন ভুল করে। ওই দুর্ঘটনার কারণ আমেরিকার তৈরি করা আতঙ্কের পরিবেশ।’’

ইউক্রেনের বিমানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দায় স্বীকারের পরেই ইরান জুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়েছে। সে সম্পর্কে তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘কয়েক দিনের জন্য মিথ্যে বলা হয়েছিল, তাই দেশের মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। যদিও আমাদের সামরিক বাহিনী দ্রুতই দায় স্বীকার করেছিল কিন্তু ওই দু’দিনেই ইরানের মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। কারণ, সরকারের কাছে মানুষের এমন প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, যে তাঁরা মনে করছেন দু’দিন আগেই সরকারের তথ্য জানিয়ে দেওয়া উচিত ছিল।’’ ইরানের বিদেশমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরে আমেরিকার সংবাদমাধ্যমে এই ‘মিথ্যা নিয়ে’ প্রচার শুরু করেছে। জারিফের এই মন্তব্যে নতুন বিতর্কে সূত্রপাত হল বলে মনে করছেন কূটনীতিকেরা।

Advertisement

ইরানের কাছে আজ দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটির ব্ল্যাকবক্স ইউক্রেন চেয়ে পাঠিয়েছে। ইউক্রেনের প্রসিকিউটার জেনারেলের দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, ব্ল্যাকবক্সটির মাধ্যমে তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করে সঠিক তদন্ত করা হবে। আজই নয়াদিল্লিতে উপসাগরীয় পরিস্থিতি নিয়ে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী এফ এম ল্যাভরভের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন জারিফ।

ইরানের সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলেমানির হত্যার বিষয়টি তুলে ধরে জারিফ ভারতকে পাশে পেতে চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমেরিকার বক্তব্য, সোলেমানি এক জন সন্ত্রাসবাদী। কিন্তু তাঁকে হত্যার পরে ভারতের ৪৩০টি শহরে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ হয়েছে।’’ কূটনৈতিক শিবিরের একাংশের বক্তব্য, সেলেমানি-হত্যার পরে ভারতের কিছু জায়গায় প্রতিবাদ হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু ৪৩০টি শহরের হিসেব কোথা থেকে জারিফ পেলেন তা স্পষ্ট নয়। এই নিয়ে ভারতও কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। জারিফের কথায়, ‘‘উপসাগরীয় অঞ্চলে উত্তেজনা কমাতে ভারত মুখ্য ভূমিকা নিতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন