(বাঁ দিকে) বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক এবং বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
বাংলাদেশ প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে আটক করল ঢাকা পুলিশ। শেখ হাসিনার জমানায় বিভিন্ন ভাবে তিনি সুযোগসুবিধা পেয়েছেন বলে দাবি করা হয়। তাঁর বেশ কিছু রায় নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কও রয়েছে বাংলাদেশে। হাসিনার পতনের পরে প্রকাশ্যে খুব বেশি দেখা যায়নি তাঁকে। সেই প্রাক্তন বিচারপতি খায়রুলকে এ বার আটক করল ঢাকা পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার ধানমন্ডির একটি বাড়ি থেকে তাঁকে পাকড়াও করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। তাঁর বিরুদ্ধে মোট তিনটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে যে কোনও একটি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার দেখানো হবে বলে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ সূত্রে খবর।
ঢাকা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মুহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, খায়রুলকে আটক করা হয়েছে। তাঁকে রাজধানীর মিন্টো রোডে গোয়েন্দা বিভাগের দফতরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বস্তুত, বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল মামলার মূল রায়দানকারী ছিলেন তিনি। তা নিয়ে রাজনৈতিক ভাবে বেশ সমালোচনা হয়েছে তাঁকে নিয়ে। ঢাকার যাত্রাবাড়ি এবং নারায়ণগঞ্জে মোট তিনটি মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এর মধ্যে রয়েছে জালজালিয়াতি করে রায় দেওয়ার অভিযোগ। এ ছাড়া রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। কেন তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না, তা নিয়ে বার বার প্রশ্ন তুলছিল খালেদা জিয়ার দল বিএনপি।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে থাকাকালীন খায়রুলের কলমের খোঁচাতেই বাতিল হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা। ফতোয়া অবৈধ ঘোষণার রায়ও তিনিই দিয়েছিলেন। হাই কোর্টে থাকাকালীন শেখ মুজিবর রহমান হত্যা মামলার রায়ও দেন তিনি। জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক নন বলেও রায় দিয়েছিলেন তিনি।
পরবর্তী সময়ে ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হন খায়রুল। অবসর নেন ২০১১ সালের মে মাসে। এর পরে ২০১৩ সালে শেখ হাসিনার সরকারের জমানায় আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্ত হন তিনি। প্রাথমিক ভাবে তিন বছরের জন্য ওই নিয়োগ হলেও পরে বেশ কয়েক দফায় ওই মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। গত বছর হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পরে ওই বছরের ১৩ অগস্ট আইন কমিশনের চেয়ারম্যানের পদ ছাড়েন খায়রুল। আওয়ামী লীগের সরকারের আমলে তিনি বিভিন্ন ভাবে সুযোগসুবিধা পেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।