(বাঁ দিকে) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ এবং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও মসৃণ করতে চাইছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। দু’দেশের মধ্যে ভিসা ব্যবস্থাকে আরও সহজ করতে উদ্যোগী হয়েছে ঢাকা এবং ইসলামাবাদ। কাজ চলছে ‘ভিসা অন অ্যারাইভাল’ (বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পরে ভিসার সুবিধা) নিয়েও।
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্কের শীতলতা অনেকটা কেটেছে। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই মধ্যে বুধবার ইউনূস প্রশাসনের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, ঢাকা এবং ইসলামাবাদের মধ্যে ‘ভিসা অন অ্যারাইভাল’ নিয়ে কাজ চলছে। তিনি বলেন, “দুই দেশের কূটনৈতিক এবং অফিশিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অন অ্যারাইভাল সংক্রান্ত মউ (সমঝোতা স্মারক) চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।”
বর্তমানে বাংলাদেশ সফরে গিয়েছেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন রেজা নকভি। বুধবার ঢাকায় বাংলাদেশের সচিবালয়ে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন নকভি। পরে বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘ভিসা অন অ্যারাইভাল’ নিয়ে কথা হয়েছে জাহাঙ্গীর এবং নকভির মধ্যে। পাশাপাশি সন্ত্রাস দমন, দু’দেশের পুলিশ অ্যাকাডেমির মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, বাণিজ্য বৃদ্ধি-সহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয় উভয়ের মধ্যে। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো অনুসারে, নকভিকে স্বাগত জানিয়ে জাহাঙ্গীর বলেন, “বাংলাদেশ ও পাকিস্তান অভিন্ন ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশীদার। দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে।”
১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয় সাবেক পূর্ব পাকিস্তান। তৈরি হয় স্বাধীন বাংলাদেশ। তার পর থেকে দীর্ঘ সময় ধরে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি বাণিজ্য প্রায় বন্ধই ছিল। সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দু’দেশের মধ্যে ফের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চালু করতে পদক্ষেপ করেছে ইউনূসের প্রশাসন। দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ককে ‘স্বাভাবিক’ করতে ইতিমধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে ঢাকা এবং ইসলামাবাদের। বস্তুত, গত বছরের ডিসেম্বরেই ইউনূসের প্রশাসন জানিয়েছিল, বাংলাদেশের ভিসা সহজে পেয়ে যাবেন পাকিস্তানিরা। বিশ্বের যে কোনও প্রান্ত থেকে কোনও পাকিস্তানের নাগরিক যদি বাংলাদেশে যেতে চান, তাঁদের ভিসা সংক্রান্ত সমস্যা হবে না। সব দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস এবং উপদূতাবাসে এমনটাই নির্দেশ পাঠিয়েছিল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।