প্রাক্তন মার্কিন টেনিস তারকা মার্টিনা নাভরাতিলোভা। —ফাইল চিত্র।
আর যেখানেই হোক, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন আমেরিকায় তিনি কখনও আসতেন না। এই আমেরিকার জন্য তিনি কখনও নিজের ঘরবাড়ি ছাড়তেন না। এমনটাই মন্তব্য করেছেন প্রাক্তন মার্কিন টেনিস তারকা মার্টিনা নাভরাতিলোভা। চেকোস্লোভাকিয়ায় তাঁর জন্ম। ৫০ বছর আগে ১৯৭৫ সালে দেশ ছেড়ে তিনি চলে এসেছিলেন আমেরিকায়। সেই থেকে এই দেশই তাঁর ঠিকানা। আমেরিকার হয়ে টেনিসে অনেক পদক কুড়িয়েছেন। কিন্তু ট্রাম্পের আমেরিকা থেকে তাঁর মন উঠে গিয়েছে। এই আমেরিকাকে চিনতে পারছেন না নাভরাতিলোভা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি-কে একটি সাক্ষাৎকারে অকপটে সে কথা জানিয়েছেন।
কমিউনিস্ট চেকোস্লোভাকিয়া ছেড়ে নাভরাতিলোভা যে দিন আমেরিকার পথে পা বাড়িয়েছিলেন, সে দিন তাঁর বয়স সবে ১৮। হাই স্কুলের গণ্ডিও পার করেননি। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘এখন যদি আমি সেই পরিস্থিতিতে থাকতাম, আমাকে যদি দেশ ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে হত, আমি কখনওই আমেরিকাকে বেছে নিতাম না। এখানে তো এখন গণতন্ত্রই নেই!’’ ট্রাম্পকে সমর্থন করেন না, স্পষ্টই জানিয়েছেন নাভরাতিলোভা। তাঁর আশঙ্কা, এখন তিনি আসতে চাইলে ট্রাম্পের প্রশাসন তাঁকে আমেরিকায় ঢুকতেই দিত না।
ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির কড়া সমালোচনা করেছেন নাভরাতিলোভা।বলেছেন, ‘‘লোকজনকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কারণ তাঁরা ট্রাম্পের অ্যাজেন্ডার সঙ্গে একমত নন! এই সরকার অভিবাসীদের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে।’’
জন্মভূমি ত্যাগের সিদ্ধান্ত সহজ ছিল না। ১৯৭৫ সালের একটি সাক্ষাৎকারে নাভরাতিলোভা জানিয়েছিলেন, চেকোস্লোভাকিয়া ছেড়ে আসার কারণ একটাই। তিনি বিশ্বের এক নম্বর টেনিস তারকা হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর জন্মভূমিতে তখন তেমন পরিস্থিতি ছিল না। বাড়ি ছেড়ে, বাবা-মাকে ছেড়েই তাই অচেনা আমেরিকায় পাড়ি দিতে হয়েছিল তাঁকে। ৫০ বছর ধরে সেই আমেরিকাকে তিনি চিনেছেন। কিন্তু নাভরাতিলোভার আশঙ্কা, আমেরিকা আবার তাঁর কাছে অচেনা ঠেকছে। বিশ্বসেরা হওয়ার ইচ্ছা পূরণ হয়েছিল নাভরাতিলোভার। টানা ৩৩২ সপ্তাহ ধরে বিশ্ব টেনিসে মেয়েদের সিঙ্গেল্সে এক নম্বরে ছিলেন তিনি। ডাবল্সে তাঁর এক নম্বরে থাকার নজির টানা ২৩৭ সপ্তাহের। বিশ্বের সর্বকালের সেরা টেনিস তারকাদের মধ্যে অন্যতম হিসাবে এখনও নাভরাতিলোভার নাম করা হয়। ট্রাম্পের শাসনে সেই তিনিই হতাশ।