International Newss

ঘটনাবহুল জীবনের অবসান, ৯৪-এ প্রয়াত প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ (সিনিয়র)

রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর পরও নানা সময় শিরোনামে এসেছেন সিনিয়র বুশ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮ ১২:৪৪
Share:

রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর পরই নানা সময় শিরোনামে এসেছেন সিনিয়র বুশ। ছবি: এএফপি।

৯৪ বছরের অতুলনীয় জীবনের অবসান ঘটল। এ ভাবেই প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের মৃত্যুসংবাদ জানালেন তাঁর ছেলেমেয়েরা।

Advertisement

শুক্রবার মারা গেলেন জর্জ হারবার্ট ওয়াকার বুশ। ঠান্ডা যুদ্ধের শেষের দিকে রাষ্ট্রনেতা হিসাবে আমেরিকাকে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে থেকে টেনে তুলেছিলেন। গোটা বিশ্ব সে জন্যও তাঁকে মনে রাখবে। তবে তাঁর ছেলে আর এক প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ জানিয়েছেন, তাঁরা এক পিতাকে হারালেন। টুইটারে তিনি লিখেছেন, “জেব, নিল, মার্ভিন, ডোরো আর আমি দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, ৯৪ বছরের অনন্য সাধারণ জীবনের অবসান ঘটল। আমাদের বাবা মারা গেলেন।”

গত এপ্রিলেই মারা গিয়েছিলেন স্ত্রী বারবারা বুশ। ৭৩ বছরের দাম্পত্যজীবনের সেই সঙ্গীকে ‘দুনিয়ার প্রিয় নারী’ বলে উল্লেখ করেছিলেন জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ। এর পর কয়েক মাসের মধ্যেই চলে গেলেন তিনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪১তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে তুখোড় বিদেশনীতির জন্য পরিচিতি লাভ করেছিলেন বুশ।

Advertisement

(আজকের তারিখে গুরুত্বপূর্ণ কী কী ঘটেছিল অতীতে, তারই কয়েক ঝলক দেখতে ক্লিক করুন— ফিরে দেখা এই দিন।)

আটের দশকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হন সিনিয়র বুশ। ছবি: এএফপি।

গত শতকের আটের দশকে প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হওয়ার পর থেকেই ঘটনাবহুল ছিল তাঁর রাজনৈতিক জীবন। তা সে ১৯৮৯-এ তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়াই হোক বা এর বছর দুই পরে ইরাকি লৌহপুরুষ সাদ্দাম হুসেনকে পরাজিত করা। তবে এত কিছু সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট হিসাবে দ্বিতীয় বারের জন্য আমেরিকার সর্বোচ্চ পদে জিততে পারেননি প্রাক্তন সিআইএ প্রধান বুশ। ১৯৯২-তে দেশের বেহাল আর্থিক দশায় সময়ে তাঁকে হারিয়েই প্রেসিডেন্ট পদে এসেছিলেন বিল ক্লিনটন।

আরও পড়ুন: আর্জেন্টিনায় শি-র সঙ্গে বৈঠক মোদীর

১৯২৪ সালের ১২ জুন আমেরিকার ম্যাসাচুসেট্‌সের মিলটন শহরে জন্ম জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের। অভিজাত পরিবারের মধ্যে শুরু থেকেই রাজনৈতিক আবহ ছিল। বাবা প্রেসকট বুশ ছিলেন ব্যাঙ্কার। পরে যিনি কানেকটিকাটের সেনেটর হিসাবে মার্কিন কংগ্রেসেও নির্বাচিত হন। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রিলাভের আগেই মাত্র আঠারো বছরে মার্কিন নৌসেনায় যোগ দেন বুশ। এর পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেনানী হিসাবে দায়িত্ব সেরে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। এরই মধ্যে ১৯৪৫-এর বিয়ে করেন বারবার পিয়ার্সকে। তাঁদের ছ’সন্তান হয়। তবে শৈশবেই মারা যায় রবিন নামে এক সন্তান।

সস্ত্রীক সিনিয়র বুশ। ছবি: এএফপি।

ব্যাঙ্কার হিসাবে কর্মজীবন শুরু না করে এক সময় সকলকে অবাক করে পশ্চিম টেক্সাসে তেলের ব্যবসা শুরু করেন। তাতে সাফল্যও মেলে। ১৯৫৮-এর মধ্যে হিউস্টনে অফশোর ড্রিলিং সংস্থার প্রেসিডেন্ট হন তিনি। এর পর ছয়ের দশকে রাজনীতিতে যোগদান। স্থানীয় রিপাবলিকান পার্টির চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে দেশের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হন ১৯৮১-এ।

আরও পড়ুন: ক্ষুদে যাত্রীর নাম নিয়ে রসিকতা, ক্ষমা চাইল উড়ান কর্তৃপক্ষ

বিমান থেকে ঝাঁপিয়ে স্কাইডাইভিং। ছবি: এএফপি।

রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর পরও নানা সময় শিরোনামে এসেছেন সিনিয়র বুশ। নৌসেনার সেনানী থাকার সময় একটি শপথ নিয়েছিলেন। তা মেটাতে নিজের ৭৫, ৮০ এবং ৯০তম জন্মদিনে বিমান থেকে ঝাঁপ দিয়ে স্কাইডাইভিং করেছেন। আবার ২০০৪-এ সুনামিতে বিপন্ন মানুষদের অর্থসাহায্যে এগিয়ে এসেছেন। কখনও বা তাঁকে দেখা গিয়েছে ২০১০-এ হাইতির ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশেও দাঁড়াতে। জন অ্যাডামসের পর তিনিই হলেন দ্বিতীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট যাঁর ছেলেও প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। সিনিয়র বুশের মৃত্যুতে শোকগ্রস্ত সেই ছেলে জর্জ ডব্লিউ বুশ এ দিন লিখেছেন, “জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ এক অনন্য চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। বাবা হিসাবে সেরা ছিলেন তিনি।”

(সারাবিশ্বের সেরা সব খবরবাংলায় পড়তে চোখ রাখতে পড়ুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন