france

Submarine: পিছন থেকে ছুরি মারা হয়েছে, দাবি ফ্রান্সের

পাঁচ বছর আগে ফরাসি সরকারের সঙ্গে করা ডুবোজাহাজ সংক্রান্ত চুক্তি ভেঙে সম্প্রতি আমেরিকা ও ব্রিটেনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

প্যারিস শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৮:২৭
Share:

ছবি সংগৃহীত।

ডুবোজাহাজ চুক্তি নিয়ে জট তো কাটলই না। উল্টে বিশ্বের বাকি তিন শক্তিধর দেশের সঙ্গে এ নিয়ে আপস না করারই সিদ্ধান্ত নিয়েছ ইমানুয়েল মাকরঁ-র সরকার। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত বাকি দেশগুলি অবশ্য কেউই এই বিবাদে জড়াতে চাইছে না। ফলে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া আর ব্রিটেনের বিরুদ্ধে কার্যত একাই রুখে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে ফ্রান্স।

Advertisement

পাঁচ বছর আগে ফরাসি সরকারের সঙ্গে করা ডুবোজাহাজ সংক্রান্ত চুক্তি ভেঙে সম্প্রতি আমেরিকা ও ব্রিটেনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ফ্রান্সের থেকে প্রথাগত ডুবোজাহাজ না কিনে আমেরিকার থেকে পরমাণু শক্তি চালিত ডুবোজাহাজ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কট মরিসনের সরকার। সেই চুক্তিতে রয়েছে ব্রিটেনও। প্রায় ৬ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের সেই চুক্তি ভঙ্গের পরেই নিজেদের ক্ষোভ গোপন রাখেনি ফরাসি সরকার। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে নিজেদের দূত সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাকরঁ। ব্রিটেন নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেননি তিনি। নিজে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখও খোলেননি এ নিয়ে। কিন্তু তাঁর সরকারেরই বিদেশমন্ত্রী জঁ ইভ লুদ্রিঁয়া সরাসরি বিষয়টিকে বিশ্বাসভঙ্গ এবং পিছন থেকে ছুরি মারার মতো বলে ব্যাখ্যা করেছেন।

আমেরিকার মতো দীর্ঘদিনের বন্ধুর সঙ্গে ফ্রান্সের এই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসার পরে খানিকটা স্তম্ভিত গোটা বিশ্ব। তবে জার্মানি-সহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাকি দেশগুলি এখন ফ্রান্সের থেকে নিজেদের দূরত্ব বজায় রেখে চলছে। জার্মান সরকার গোটা বিষয়টি নিয়ে অবগত জানিয়ে আর কোনও মন্তব্য করেনি। নিউ ইয়র্কে পাড়ি দেওয়ার আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন অবশ্য দাবি করেছেন, ফ্রান্সের সঙ্গে তাঁদের বন্ধুত্বে কোনওভাবেই চিড় ধরতে পারে না। যদিও সূত্রের খবর অনুসারে, ব্রিটিশ সরকারকেও এখন খুব একটা ভরসা করতে পারছে না ফ্রান্স।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে মাকরঁ-র সঙ্গে খুব দ্রুত কথা বলতে চেয়েছেন আমেরকিান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ফরাসি সরকারের তরফে এই খবরের সত্যতা স্বীকার করে জানানো হয়েছে, খুব শীঘ্রই ফোনে দুই রাষ্ট্রনেতার কথা হবে। তবে সেই কথার দিন ক্ষণ এখনও স্থির হয়নি। ফরাসি সরকারের মুখপাত্র অবশ্য এ-ও জানিয়েছেন, আমেরিকার থেকে গোটা বিষয়ের ব্যাখ্যা চাওয়া হবে।
সামনের সপ্তাহেই রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্ক যাচ্ছেন ফরাসি বিদেশমন্ত্রী। তবে, সুযোগ থাকলেও আমেরিকার বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে কোনওরকম বৈঠকে বসছেন না তিনি।

অস্ট্রেলিয়া এ দিকে নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড়। বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগও তারা মানতে নারাজ। প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের বক্তব্য, ফরাসি সরকারের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই সংশয়ে ছিলেন তাঁরা। সেটা ফ্রান্সকে জানানোও হয়েছিল বলে দাবি তাঁর। জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্যই তাঁরা আমেরিকার সঙ্গে চুক্তিতে রাজি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মরিসন। আজ আবার অস্ট্রেলিয়ার উপ প্রধানমন্ত্রী বারনাবি জয়েস জানিয়েছেন, ‘‘গোটা বিশ্বের কাছে ফ্রান্সের প্রতি অস্ট্রেলিয়ার ভালবাসা ও বন্ধুত্ব প্রমাণ করার কোনও দরকার নেই আমাদের। সকলেই জানেন, দুই বিশ্বযুদ্ধে ফ্রান্সকে রক্ষা করার জন্য আমাদের দেশের সেনারা প্রাণ পর্যন্ত দিয়েছেন।’’

এ দিকে, আমেরিকার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার এই ডুবোজাহাজ চুক্তি নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন। তাঁর কথা অনুসারে, ‘‘এই ধরনের চুক্তিতে প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় পরমাণু অস্ত্রের প্রতিযোগিতা শুরু হবে।’’ প্রায় একই সুরে ক্ষোভ জানিয়েছে চিনও। তাদের বক্তব্যও প্রায় এক। বিশেষজ্ঞদের অবশ্য ব্যাখ্যা, ওই এলাকায় চিনকে রুখতেই আমেরিকা ও ব্রিটেনের সঙ্গে জোট বাঁধার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন