ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল চিত্র।
আমেরিকার মাটিতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের অবস্থানের মেয়াদ সীমিত করতে একটি নতুন বিধি আনতে চলেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার। সেই সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করা হবে বিদেশি সংবাদকর্মীদের অবস্থানের মেয়াদও। বৃহস্পতিবার মার্কিন ‘ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি’ (ডিএইচএস) এ কথা জানিয়েছে।
বিদেশি পড়ুয়ারা আমেরিকায় ‘এফ ভিসা’ নিয়ে যান। বিদেশি সাংবাদিকেরা যান ‘জে ভিসা’ নিয়ে। ১৯৭৮ সালের চালু বিধি অনুযায়ী ‘এফ ভিসা’ধারী বিদেশি শিক্ষার্থীরা ‘ডিউরেশন অব স্ট্যাটাস’ ভিত্তিতে আমেরিকায় থাকতে পারতেন। অর্থাৎ যত দিন তাঁদের নাম কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘পড়ুয়া’ হিসাবে নথিভুক্ত থাকবে, তত দিন তাঁরা আমেরিকায় থাকতে পারতেন। কিন্তু প্রস্তাবিত নতুন বিধি অনুযায়ী, বিদেশি শিক্ষার্থী এবং এক্সচেঞ্জ ভিজ়িটরেরা কেবল তাঁদের পাঠক্রমের মেয়াদ পর্যন্ত আমেরিকায় থাকতে পারবেন। এবং তা সর্বোচ্চ চার বছর! এর বেশি মেয়াদে থাকার বিষয়টি নির্দিষ্ট সময় অন্তর ডিএইচএসের অনুমোদনের উপর নির্ভর করবে।
ডিএইচএসের তরফে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘প্রশাসনিক শিথিলতার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই বিদেশি শিক্ষার্থী ও অন্য ভিসাধারীরা প্রায় অনির্দিষ্টকালের জন্য আমেরিকায় থাকার অনুমতি পেয়ে গিয়েছিলেন। এর ফলে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। মার্কিন করদাতাদের বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে। মার্কিন নাগরিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্রস্তাবিত নতুন বিধি এই বন্দোবস্তে ইতি টানবে এবং ভিসাধারীদের আমেরিকায় থাকার সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেবে।’’
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরেই ‘ইহুদি বিদ্বেষ’ এবং ‘কমিউনিজম’ ছড়ানোর অভিযোগ তুলে বিদেশি পড়ুয়াদের নিশানা করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছিলেন, ‘‘যে সব বিদেশি আমেরিকায় আসবেন, তাঁরা যে আমেরিকার নাগরিক, সংস্কৃতি, সরকার, প্রতিষ্ঠান কিংবা আদর্শের প্রতি শত্রুতাপূর্ণ মনোভাব পোষণ করেন না, তা নিশ্চিত করা হবে।’’ গত মে মাসে সমাজমাধ্যম সংক্রান্ত নতুন নির্দেশিকা জারি করার সময়েই বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রদান সাময়িক ভাবে স্থগিত রেখেছিল মার্কিন বিদেশ দফতর। ডিএইচএসের বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘‘আমাদের দেশে আসা সকলের সমাজমাধ্যমের প্রোফাইল আতশকাচের নীচে রেখে যাচাই করে দেখা হবে। পড়ুয়া হোক কিংবা এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের জন্য আবেদনকারী— সকলের সমাজমাধ্যমের পোস্ট পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে খতিয়ে দেখবেন মার্কিন কনস্যুলার অফিসারেরা।’’ এর পরে জুন মাসে সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলেও ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি বহাল রাখা হয়েছে।