অভিযুক্ত স্টিভ স্টিফেন্স (বাঁ দিকে)। ডানদিকে পড়ে রয়েছে মৃত ব্যক্তির দেহ। ছবি: ফেসবুকের সৌজন্যে।
তখন সবে দুপুর গড়িয়েছে। ক্লিভল্যান্ডের রাস্তায় তখন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। ক্রিম রঙের একটি এসইউভি থেকে রাস্তায় নেমে এল ৬ ফুট ১ ইঞ্চির কৃষ্ণাঙ্গ চেহারা। পরনে নীল-কালো স্ট্রাইপ পোলো শার্ট আর জিন্স। একমুখ কাঁচা-পাকা দাড়ি আর টাক মাথার ওই মানুষটি যখন গাড়ি থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করেছেন, তখন তার বাঁ হাতে উঁচু করে ধরা মোবাইল। ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করছিল সে। রাস্তায় শপিং ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক প্রৌঢ়ের সঙ্গে কথাও বলল। সব কিছু ঠিকঠাকই চলছিল। আচমকাই পকেট থেকে বন্দুক বের করে ওই প্রৌঢ়ের মাথায় গুলি চালিয়ে দিল ওই ব্যক্তি। সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে মৃত্যু হয় ওই প্রৌঢ়ের। খুন করার পরেও মানুষটির ঠোঁটে হাসি। গোটা ঘটনাটিই সরাসরি সম্প্রচারিত হল ফেসবুকে। হাজার হাজার ভিউয়ারকে সাক্ষী রেখে ফেসবুক লাইভেই চলল হত্যালীলা। এই ঘটনার ভিডিও দেখে স্তম্ভিত গোটা বিশ্ব।
আরও পড়ুন: সিনেমা নয়, এ যেন সত্যিকারের ‘গজনি’
রবিবার মারাত্মক এই ঘটনাটি ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিভল্যান্ড শহরে। ফেসবুক লাইভ করে হত্যালীলা চালিয়েও ক্ষান্ত হয়নি ওই আততায়ী। কিছু ক্ষণ পর ফের ফেসবুক লাইভে এসে ওই দুষ্কৃতী জানাল, এখনও পর্যন্ত ১৩ জনকে খুন করেছে সে এবং আরও খুন করার ইচ্ছে আছে। সেই সময় যাঁরা ফেসবুকে নজর রাখছিলেন এই ভিডিও সম্প্রচারটি দেখে তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। খবর যায় পুলিশে।
দেখুন খুন করার পর স্টিভের ফেসবুক লাইভ
ক্লিভল্যান্ডের পুলিশ অফিসার ক্যালভিন উইলিয়ামস জানিয়েছেন, ওই অভিযুক্ত হল ৩৭ বছরের স্টিভ স্টিফেন্স। তাকে গ্রেফতারের জন্য ইতিমধ্যেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই পুলিশ তাদের ওয়েবসাইটে স্টিভের ছবি প্রকাশ করেছে। তার সম্পর্কে কোনও তথ্য পেলে তৎক্ষণাৎ পুলিশকে জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে। এরই সঙ্গে পুলিশ নিহত ব্যক্তিকেও সনাক্ত করেছে। তিনি ৭৪ বছরের রবার্ট গুডউইন। ফেসবুকে হত্যাকাণ্ডের সরাসরি সম্প্রচার এটাই প্রথম নয়। গত জুন মাসে শিকাগোর রাস্তায় এক ব্যক্তি নিজের ভিডিও সরাসরি সম্প্রচারের সময় গুলিতে নিহত হন। গত মার্চে এক ব্যক্তি ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করার সময় ১৬ বার গুলিবিদ্ধ হন।