হাফিজ সইদ।—ফাইল চিত্র।
নিষিদ্ধ তালিকা থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হবে না। কুখ্যাত পাকিস্তানি জঙ্গি হাফিজ সইদকে জানিয়ে দিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। ২৬/১১ মুম্বই হামলার চক্রী হাফিজ, পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তার জামাত-উদ-দাওয়া সংস্থাটিকেও নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ঘোষণা করা হয়েছে। তবে নিজের নামের উপর থেকে জঙ্গি তকমা ঝেড়ে ফেলতে চেয়েছিল হাফিজ সইদ। সেই মতো রাষ্ট্রপুঞ্জে আবেদন জানিয়েছিল। সম্প্রতি যা খারিজ হয়েছে। ভারত সরকার সূত্রে বৃহস্পতিবার বিষয়টি সামনে এল।
সূত্রের খবর, পাকিস্তানে গৃহবন্দি থাকাকালীন ২০১৭ সালে লাহৌরের মির্জা অ্যান্ড মির্জা আইনি সংস্থার মাধ্যমে রাষ্ট্রপুঞ্জের দ্বারস্থ হয়েছিল হাফিজ সইদ। তার গায়ের উপর আন্তর্জাতিক জঙ্গি হিসাবে যে তকমা সেঁটে দেওয়া হয়েছে, তা হঠানোর আর্জি জানিয়েছিল। রাষ্ট্রপুঞ্জে এই ধরনের আবেদন খতিয়ে দেখার দায়িত্ব নিরপেক্ষ জনপ্রতিনিধি ড্যানিয়েল কিপফার ফাসিয়াতি-র। হাফিজ সইদের আবেদনটিও পর্যালোচনা করে দেখার দায়িত্ব পান তিনি। হাফিজের বিরুদ্ধে ভারতের দেওয়া সমস্ত নথিপত্র খতিয়ে দেখেন তিনি। যার পর চলতি সপ্তাহের শুরুতে হাফিজের আইনজীবী হায়দর রসুল মির্জাকেতিনি রাষ্ট্রপুঞ্জের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে। ড্যানিয়েল জানান, ‘‘হাফিজের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া গেল না। আগের মতোই নিষিদ্ধ তালিকায় নাম নথিভুক্ত থাকবে তার।’’তবে আরও আগেই এই সিদ্ধান্ত নিতে পারত রাষ্ট্রপুঞ্জ। হাফিজের আবেদন জমা পড়ার ছ’মাসের মধ্যেই। কিন্তু মাঝখানে নিরপেক্ষ জনপ্রতিনিধির বদল ঘটে। তাই সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগল।
পাকিস্তানে বসে দীর্ঘদিন ধরে ভারতের বিরুদ্ধে নাশকতায় মদত দিয়ে আসছে হাফিজ সইদ। ২৬/১১ মুম্বই হামলার মূল চক্রীও সে, যাতে ১৬৬ জন মানুষ প্রাণ হারান। তার জেরে ২০০৮ সালের ১০ ডিসেম্বর তাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। সেই সময় ভারতের পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের তরফেও সমর্থন মিলেছিল। এ বারও হাফিজের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিরোধিতা করে তারা। তবে সন্ত্রাসমুক্ত নয়া পাকিস্তান গড়ার ডাক দিয়ে যে ইমরান খান ইসলামাবাদের মসনদ দখল করেছেন, সেই ইমরান সরকারের তরফে হাফিজের আবেদনের কোনওরকম বিরোধিতা করা হয়নি বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ফের প্রকাশ্যে পাকিস্তানের দ্বিচারিতা, জঙ্গি শীর্ষনেতাই এ বার ইমরানের দলে
আরও পড়ুন: সল্টলেকে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ, শিক্ষক-পুলিশ ধস্তাধস্তিতে উত্তেজনা
তবে হাফিজের আবেদন খারিজ হওয়ায়, এ বার রাষ্ট্রপুঞ্জে মাসুদ আজহারকে নিয়ে ভারতের অবস্থান আরও দৃঢ় হতে পারে বলে জল্পনা বিশেষজ্ঞ মহলের। পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ চাঁই তথা পাঠানকোট এবং হালফিলের পুলওয়ামা জঙ্গি হামলার মূল চক্রী মৌলানা মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ করতে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে আসছে ভারত। কিন্তু পাকিস্তানের মদতে বারবার তাতে বাগড়া দিয়েছ চিন। ফেব্রুয়ারি মাসে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় হামলার পর ফের তার বিরুদ্ধে নতুন করে আবেদন জমা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ফ্রান্স।
(আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, আন্তর্জাতিক চুক্তি, আন্তর্জাতিক বিরোধ, আন্তর্জাতিক সংঘর্ষ- সব গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।)