(বাঁ দিকে) শি জিনপিং এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
শুল্কযুদ্ধে আপাতত বিরতি টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকা এবং চিন। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার নাম না-করেই তাদের নিশানা করলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। মঙ্গলবার বেজিঙের একটি সম্মেলনে তিনি বলেন, “শুল্কযুদ্ধ বা বাণিজ্যযুদ্ধে কেউ জয়ী হবে না। একাধিপত্য দেখালে একঘরে হতে হবে।” মনে করা হচ্ছে শুল্ক নিয়ে মার্কিন ‘একাধিপত্যের’ দিকেই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন তিনি।
দফায় দফায় আলোচনার পরে আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে শুল্কযুদ্ধের মেঘ কাটতে শুরু করেছে। আপাতত ৯০ দিনের জন্য দু’পক্ষই একে অন্যের পণ্যের উপর শুল্কের হার ১১৫ শতাংশ কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত সপ্তাহে সুইৎজ়ারল্যান্ডের জেনেভায় বৈঠকে বসেছিলেন চিন এবং আমেরিকার প্রতিনিধিরা। জেনেভা বৈঠকের পরেই দু’দেশের শুল্কযুদ্ধে সাময়িক বিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শুল্কে আমেরিকা এবং চিনের তিন মাসের ‘যুদ্ধবিরতি’র সিদ্ধান্তের ফলে এখন চিনা বাজারে মার্কিন পণ্যের উপর ১০ শতাংশ এবং আমেরিকার বাজারে চিনা পণ্যের উপর ৩০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর থাকবে। বস্তুত, ট্রাম্প আমেরিকায় ক্ষমতায় আসার পরেই দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের উপর প্রভাব পড়তে শুরু করে। চিনের সঙ্গে সরাসরি শুল্কযুদ্ধে নেমে পড়েন ট্রাম্প।
শুরুটা হয়েছিল ব্যথা নিরাময়ের ওষুধ ফেন্টানাইলকে কেন্দ্র করে। ট্রাম্পের অভিযোগ ছিল, আমেরিকার বাজারে নিষিদ্ধ ওই ওষুধটি চিন থেকে তাঁদের দেশে প্রবেশ করছে। ওই সময়ে কানাডা, মেক্সিকো এবং চিনের উপর শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। পরে ভারত-সহ আরও বিভিন্ন দেশের উপর শুল্ক চাপান ট্রাম্প। শুল্ক বৃদ্ধি হয় চিনা পণ্যের উপরেও। শুল্কযুদ্ধে প্রত্যাঘাত করে বেজিংও। তারাও মার্কিন পণ্যে পাল্টা শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এই ভাবে দফায় দফায় একে অন্যের উপর শুল্ক বৃদ্ধি করতে থাকে। এই ভাবে দফায় দফায় একে অন্যের পণ্যে শুল্ক চাপাতে থাকায় শেষ পর্যন্ত আমেরিকার বাজারে চিনা পণ্যের উপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হয়। পাল্টা চিনা বাজারে মার্কিন পণ্যের উপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হয়।
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে শুল্কযুদ্ধ নিয়ে নাম-না করেই আমেরিকাকে বার্তা দিলেন জিনপিং। তিনি যখন এই কথা বলছেন, তখন দর্শকাসনে উপস্থিত ব্রাজ়িল, কলম্বিয়া, চিন-সহ লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানেরা।