Jerusalem

Fart: পিছনে নাকি রোমান সেনার বাতকর্ম! জেরুজালেমে দাঙ্গায় মৃত ১০ হাজার

পবিত্র জেরুজালেমের মাটিতে ইহুদি-রোমান দাঙ্গায় প্রায় ১০ হাজার মানুষের মৃত্যুর নেপথ্য কারণ নাকি এক রোমান সেনার উস্কানিমূলক বাতকর্ম।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২১ ১৯:৫৪
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

যত্রতত্র বাতকর্ম করে নিজেকে এবং অন্যকে বিড়ম্বনায় ফেলার ঘটনা প্রত্যেকের জীবনেই একাধিক বার ঘটেছে। অন্যের বাঁকা নজর, ট্যারা সমালোচনায় বহু বার বিদ্ধ হতে হয়েছে। এত সব কিছুর পরেও গবেষণা জানায়, ঘন ঘন বাতকর্ম মানুষের সুস্থ এবং স্বাভাবিক শরীরের লক্ষণ। শুধু নিজেরই নয়, বাতকর্মে আশেপাশের সকলেরই উপকার হয়। বাতকর্মের সঙ্গে অল্প পরিমাণে যে হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস বার হয়, তার গন্ধ নাকি ক্যান্সার, স্ট্রোক, ডিমেনশিয়া, হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে সক্ষম। কিন্তু এই শারীরিক ক্রিয়া যে এক সময় হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠেছিল, এ আমাদের কল্পনার অতীত।

Advertisement

বাতকর্ম নিয়ে অজস্র মজার, মর্মান্তিক এবং ট্র্যাজিক ঘটনা ছড়িয়ে রয়েছে ইতিহাসের পাতায়। ইংল্যান্ডের রানি প্রথম এলিজাবেথকে সম্মান প্রদর্শনের সময় বাতকর্ম করে ‘অপরাধবোধে’ সাত বছর পালিয়ে বেড়াতে হয়েছিল ‘আর্ল অব অক্সফোর্ড’ এডওয়ার্ড ডি ভেয়ারকে। ৫৭০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে প্রকাশ্যে বাতকর্ম করে গদি হারাতে হয়েছিল মিশরের এক রাজাকে। তেমনই ৪৪ খ্রিস্টাব্দে পবিত্র জেরুজালেমের মাটিতে ইহুদি-রোমান দাঙ্গায় প্রায় ১০ হাজার মানুষের মৃত্যুর নেপথ্য কারণ হল এক রোমান সেনার উস্কানিমূলক বাতকর্ম। ইহুদি ইতিহাসবিদ ফ্লেভিয়াস জোসেফাসের লেখা ‘ওয়ার অব দ্য জিউস’ গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে সেই ঘটনার।

হেরোদিয়ান রাজবংশের শেষ রাজা হেরোদ অ্যাগ্রিপ্পার মৃত্যু পরবর্তী ঘটনা। সেই সময়ে ইহুদিদের ধর্মীয় উৎসব 'পাসওভার' বা ‘নিস্তার পর্ব’ চলছিল। জেরুজালেমের একটি ধর্মীয় স্থানে আয়োজিত ভোজন সমাবেশে সবে মাত্র দলে দলে আসতে শুরু করেছিলেন ইহুদিরা। এমন সময়ে ওই ধর্মীয় স্থানের ছাদে প্রহরায় থাকা এক রোমান নিরাপত্তারক্ষী হঠাৎই পশ্চাদ্দেশ উন্মুক্ত করে পিছন ঘুরে দাঁড়িয়ে পড়েন এবং সশব্দে বাতকর্ম করেন। কেউ কেউ বলেন, ওই রোমান সেনার ‘ইহুদি-বিদ্বেষ’ এই পর্যন্তই সীমিত থাকলে ইহুদিরা বিষয়টিকে স্রেফ মস্তিষ্ক বিকৃতি ভেবে এড়িয়ে যেতেন হয়তো। কিন্তু তাঁর ওই সশব্দ বাতকর্মের পরে সেই সেনা ইহুদিদের বিরুদ্ধে কটূক্তিও করতে থাকেন। এ হেন অভব্য আচরণ ইহুদিরা মেনে নিতে পারেননি। তাঁদের ধর্মের প্রতি অশ্রদ্ধা দেখে ওই নিরাপত্তারক্ষীকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করেন নীচে দাঁড়িয়ে থাকা ইহুদি জনতা। যার জেরে তুমুল সঙ্ঘর্ষ বাধে ইহুদি আর রোমান সেনার মধ্যে। খবর পৌঁছয় রোমান প্রোকিউরেটর কিউমানাসের কাছে। তাঁর নির্দেশেই কিছু ক্ষণের মধ্যে গোটা জেরুজালেম ঘিরে ফেলে রোমান সেনাবাহিনী। তাদের এক হাতে ঢাল, অন্য হাতে বল্লম। গায়ে ভারী বর্ম। মাথায় শিরস্ত্রাণ। অর্থাৎ সশস্ত্র যুদ্ধ ঘোষণা।

Advertisement

ধর্মীয় স্থান থেকে ইহুদিদের বিতাড়িত করার পর শুরু হয় নিধন যজ্ঞ। তবে গণহত্যার বিস্তারিত বর্ণনা দেননি জোসেফাস। শুধু লিখেছেন, সন্ধে নামার আগে গোটা জেরুজালেম শহর জুড়ে প্রায় ১০ হাজার মানুষের প্রাণ গিয়েছিল সেই দিন। প্রাণে বাঁচতে পালাতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মারা গিয়েছিলেন প্রচুর মানুষ।

যদিও এই কাহিনির সত্যতা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। তার অন্যতম কারণ, জোসেফাসের বই ছাড়া অন্য কোনও ঐতিহাসিক গ্রন্থে এই ঘটনার উল্লেখ নেই। আধুনিক ইতিহাসবিদদের একাংশের বক্তব্য, হতে পারে ঘটনাটি সত্য, কিন্তু মৃতের সংখ্যায় নির্ঘাৎ রং চড়িয়েছেন জোসেফাস!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন