International

বিদ্রোহে জেরবার পাক, স্বাধীন সিন্ধুদেশের দাবিতে বিশাল সমাবেশ করাচিতে

ইসালামাবাদের কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দাবানলের মতো ছড়াচ্ছে পাকিস্তানে। পাশতুন এবং উপজাতি অধ্যুষিত উত্তর-পশ্চিমাংশে বিদ্রোহ তো অনেক দিন ধরেই ছিল। ইসলামাবাদের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে ক্ষোভে এখন উত্তাল পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং গিলগিট-বাল্টিস্তানও।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৯:৩৪
Share:

স্বাধীন সিন্ধুদেশের দাবিতে করাচিতে সোমবার এই বিশাল সমাবেশ হয়েছে।

ইসালামাবাদের কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দাবানলের মতো ছড়াচ্ছে পাকিস্তানে। পাশতুন এবং উপজাতি অধ্যুষিত উত্তর-পশ্চিমাংশে বিদ্রোহ তো অনেক দিন ধরেই ছিল। ইসলামাবাদের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে ক্ষোভে এখন উত্তাল পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং গিলগিট-বাল্টিস্তানও। স্বাধীন হওয়ার জন্য মরিয়া লড়াই শুরু করেছে বালুচিস্তান। তার মধ্যেই নওয়াজ শরিফদের আরও বিপদে ফেলে স্বাধীন ‘সিন্ধুদেশ’ গঠনের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠল সিন্ধ প্রদেশ। করাচির বুকে বিশাল সমাবেশ থেকে স্বাধীনতার ডাক দিলেন বিক্ষোভকারীরা।

Advertisement

জেরবার অবস্থা নওয়াজ শরিফের। গত সোমবার সিন্ধে স্বাধীনতার দাবিতে যে বিশাল সমাবেশ হয়েছে, তাতে পাক প্রধানমন্ত্রীর ঘুম উড়ে যেতে বাধ্য। সিন্ধের রাজধানী করাচির বুকে লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশ থেকে প্রকাশ্যে ‘আজাদি’র স্লোগান উঠেছে। সিন্ধের বিশাল উর্দুভাষী জনগোষ্ঠীকে ‘মুহাজির’ আখ্যা দিয়ে যে ভাবে দশকের পর দশক একঘরে করে রাখা হয়েছে পাকিস্তানে, তাতে ক্ষোভ অনেক দিন ধরেই ছিল। বালুচিস্তান, ওয়াজিরিস্তান, খাইবার-পাখতুনখোয়া এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়তেই ইসলামাবাদের কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে সিন্ধি জনগোষ্ঠীও।

শুধু পাকিস্তানের কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে নয়, পাকিস্তানের মধ্যে যে চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর তৈরি হয়েছে, তার বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্বাধীনতাকামী সিন্ধিরা। এর আগে বালোচ নেতারাও ওই করিডরের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। বালোচদের আপত্তি অগ্রাহ্য করে বালুচিস্তানের মধ্যে দিয়ে রাস্তা বানানোর কোনও অধিকার চিনের নেই বলে বলোচ নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। পাকিস্তানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চিন বালুচিস্তানে গণহত্যা চালাচ্ছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেছেন। সোমবার অর্থাৎ ২৯ অগস্টই বালোচরা লন্ডনের চিনা দূতাবাসের বাইরে প্রবল বিক্ষোভ দেখান। সেই বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন সিন্ধিরাও। সিন্ধের মধ্যে দিয়ে রাস্তা বানানোর অধিকারও চিনের নেই বলে বিক্ষোভকারীরা সেই সমাবেশে হুঁশিয়ারি দেন। লন্ডনে সেই বালোচ-সিন্ধি যৌথ বিক্ষোভে চিন-পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ধিক্কার তো শোনা গিয়েছেই। তার সঙ্গে শোনা গিয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর জয়ধ্বনি। বিক্ষোভকারীদের বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘মোদীজি তুম কদম বঢ়াও, হাম তুমহারে সাথ হ্যায়।’’ সেই একই দিনে স্বাধীন ‘সিন্ধুদেশ’-এর দাবিতে সমাবেশ হয়েছে করাচিতে।

Advertisement

স্বাধীনতার দাবি পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রান্তে যে ভাবে দাবানলের মতো ছড়াচ্ছে, তা মানতে হলে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে পাকিস্তান। বিক্ষোভ শুধু বালুচিস্তান বা সিন্ধুদেশে নয়। খাইবার-পাখতুনখোয়া, ওয়াজিরিস্তান এবং উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের বিশাল অংশ আফগানিস্তানের অংশ হতে চাইছে। পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং গিলগিট-বাল্টিস্তানেও পাকিস্তান বিরোধী ক্ষোভ প্রবল। শুধুমাত্র পঞ্জাব ছাড়া আর কোনও প্রদেশ এখন ইসলামাবাদের কর্তৃত্ব মানতে নারাজ। ফলে প্রবল সমস্যায় নওয়াজ শরিফের সরকার।

আরও পড়ুন: পরস্পরের জন্য সেনা ঘাঁটি খুলে দিল ভারত-আমেরিকা, চিন্তায় বেজিং

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন