উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে হড়পা বানে বিপর্যয়। ছবি: পিটিআই।
পাকিস্তানে প্রবল বৃষ্টি এবং ধসে বহু বাড়ি ভেসে গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৩৫০ জনের। সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, শনিবার নতুন করে শতাধিক দেহ উদ্ধার করা হয়েছে ধসের ধ্বংসস্তূপ থেকে। খাতায়কলমে মৃতের সংখ্যা এখন ৩৪৪। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকা প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত। খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের অনেক জেলা হড়পা বানে ভেসে গিয়েছে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরেও হড়পা বানে ভেসে গিয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। চলতি মরসুমে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হচ্ছে, দাবি সে দেশের আবহাওয়া দফতরের। পাকিস্তানের জাতীয় বিপর্যয় নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২ জুন থেকে এখনও পর্যন্ত দেশে বৃষ্টিজনিত কারণে মৃতের সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়েছে।
খাইবার পাখতুনখোয়ার বুনের জেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। এখনও অনেকে নিখোঁজ। কয়েকশো উদ্ধারকারী দিনরাত এক করে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। মূলত মেঘভাঙা বৃষ্টির কারণে হড়পা বান থেকে এই বিপর্যয়। শুক্রবার পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নেয়। বুনেরের পীরবাবা, মালিকপুরার মতো গ্রাম জলের তোড়ে তছনছ হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘কোথা থেকে বন্যার জল এল, আমরা জানি না। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব ভেসে গেল। অনেকে বাড়ি থেকে বেরোনোরই সময় পায়নি।’’ বুনেরের হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, মৃতদের অধিকাংশই শিশু এবং পুরুষ। কারণ, যে সময়ে বান এসেছে, তখন গ্রামের মহিলারা হয় কাঠ কাটতে, না হলে গরু চরাতে পাহাড়ে গিয়েছিলেন। স্থানীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের পরিসংখ্যান বলছে, শুধু চলতি সপ্তাহেই বৃষ্টিতে খাইবার পাখতুনখোয়া এবং গিলগিট-বালটিস্তানে ৩৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাকিস্তানি আধিকারিকেরা ইতিমধ্যে সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষকে বন্যাকবলিত এলাকা থেকে সরিয়েছেন। অনেক পর্যটকও পাহাড়ি এলাকায় আটকে পড়েছেন বলে খবর। তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
২০২২ সালে বর্ষার সবচেয়ে বিধ্বংসী মরসুম দেখেছিল পাকিস্তান। বন্যা এবং হড়পা বানে ১৭০০-র বেশি মানুষ মারা গিয়েছিলেন। কয়েকশো কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরেও মেঘভাঙা বৃষ্টির ফলে বিপর্যয় ঘটেছে। কিশ্তওয়াড়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৬০ জনের। এখনও অনেকে নিখোঁজ।