Blizzard on Mt Everest

প্রবল তুষারঝড়ে এভারেস্টে আটকে পড়লেন হাজারেরও বেশি অভিযাত্রী! ৪৮ ঘণ্টা পর উদ্ধার

শুক্রবার রাত থেকে তুষারপাত এবং ভারী বৃষ্টি শুরু হয় এভারেস্টের কাংশুং সংলগ্ন অঞ্চলে। সঙ্গে প্রবল তুষারঝড়। সে সময় কাংশুঙের কর্মা উপত্যকায় ছিল হাজার হাজার অভিযাত্রীর ভিড়। কিন্তু আচমকা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে ৪,২০০ মিটার (১৩,৮০০ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত এই উপত্যকায় আটকে প়়ড়েন সকলেই।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৫ ১১:১৮
Share:

প্রবল তুষারঝড়ে এভারেস্টে আটকে পড়লেন অভিযাত্রীরা। ছবি: রয়টার্স।

প্রবল বৃষ্টি ও ধসে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। তার মাঝে এ বার বিপর্যয় দেখা দিল হিমালয়েও। গত দু’দিন ধরে টানা বৃষ্টি এবং তুষারঝ়ড়ের কারণে মাউন্ট এভারেস্টের পূর্বের তিব্বত সংলগ্ন এলাকায় আটকে পড়লেন হাজারখানেক অভিযাত্রী। ৪৮ ঘণ্টার চেষ্টায় উদ্ধার করা হল তাঁদের। যদিও সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৩৫০ জন অভিযাত্রীকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও, কয়েকশো অভিযাত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে। তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

Advertisement

শুক্রবার রাত থেকে তুষারপাত এবং ভারী বৃষ্টি শুরু হয় এভারেস্টের কাংশুং সংলগ্ন অঞ্চলে। সঙ্গে প্রবল তুষারঝড়। চিনে টানা আট দিন ছুটি থাকায় সে সময় কাংশুঙের কর্মা উপত্যকায় ছিল হাজার হাজার পর্যটক ও অভিযাত্রীর ভিড়। কিন্তু আচমকা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে ৪,২০০ মিটার (১৩,৮০০ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত এই উপত্যকায় আটকে পড়েন সকলেই। রবিবার পরিস্থিতির খানিক উন্নতি হওয়ায় উদ্ধারকাজ শুরু হয়। চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, রবিবার পর্যন্ত ৩৫০ জন ট্রেকারকে উদ্ধার করে কুদাংয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাকিদেরও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছেন স্থানীয় গ্রামবাসীরাও।

এমনই এক অভিযাত্রী চেন গেশুয়াংয়ের কথায়, ‘‘ওই অঞ্চলে তীব্র ঠান্ডায় বেশির ভাগেরই হাইপোথার্মিয়া হয়ে যাচ্ছিল। অথচ বছরের এই সময়ে এমন আবহাওয়া থাকার কথা নয়। আমাদের গাইডও বলছিলেন, এর আগে অক্টোবরে তিনি কখনও এমন আবহাওয়া দেখেননি। এবং এটি আচমকা ঘটে।’’ ১৮ জনের একটি ট্রেকিং দলের সদস্য ছিলেন চেন। রবিবার কুদাংয়ে পৌঁছেছেন তিনি। চেনেরই দলের আর এক ট্রেকার এরিক ওয়েন বলেন, ‘‘আমাদের কাছে মাত্র কয়েকটি তাঁবু ছিল। বাধ্য হয়ে এক একটি তাঁবুতে আমরা ১০ জনেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিই। কাল রাত থেকে ঘুমাতেও পারিনি। প্রবল তুষারপাত হচ্ছিল। অবস্থা এমনই ছিল যে প্রতি ১০ মিনিট অন্তর পালা করে করে তুষার পরিষ্কার করতে হচ্ছিল দলের সদস্যদের। নইলে তাঁবুগুলো ভেঙে পড়ত।’’ পর্যাপ্ত শীতের পোশাক পরে থাকা সত্ত্বেও ওই ট্রেকিং দলের অন্তত তিন জন হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন। আপাতত তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল।

Advertisement

প্রসঙ্গত, একই সময়ে প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গও। শনিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে সেখানে অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তিস্তা, তোর্সা, মহানন্দা-সহ সব নদীর জলস্তর বিপজ্জনক ভাবে বেড়ে গিয়েছে। কোথাও সেতু ভেঙে পড়েছে, কোথাও ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাড়ি-রাস্তাঘাট। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মিরিক এবং সুখিয়াপোখরিতে। মিরিকেই সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। উদ্ধারকাজে নেমেছে জাতীয় এবং রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং স্থানীয় পুলিশ। তবে সোমবার সকালে চিত্রটা খানিক বদলেছে। পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হওয়ায় ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছেন পর্যটকেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement