পরমাণু বোমার কাছে হাইড্রোজেন বোমা ‘দানব’!

পরমাণু বোমার নাম শুনলেই আমাদের পিলে চমকে যায়। বুক ধড়ফড় করে। কিন্তু, হাইড্রোজেন বোমা তার চেয়েও অনেক অনেক গুণ শক্তিশালী। তার ধ্বংসলীলা অনেক বেশি ভয়াবহ। কতটা, জেনে নিন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৬ ১৫:০২
Share:

পরমাণু বোমার নাম শুনলেই আমাদের পিলে চমকে যায়। বুক ধড়ফড় করে। কিন্তু, হাইড্রোজেন বোমা তার চেয়েও অনেক অনেক গুণ শক্তিশালী। তার ধ্বংসলীলা অনেক বেশি ভয়াবহ।

Advertisement

আজ থেকে সত্তর বছর আগে ১৯৪৫ সালের ৬ এবং ৯ অগস্টে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে ‘লিটল বয় ’ আর ‘ফ্যাট ম্যান’ নামে দু’টি পরমাণু বোমা ফেলেছিল আমেরিকা। যে প্রকল্পে ওই পরমাণু বোমার জন্ম হয়েছিল, তার নাম ছিল ‘ম্যানহাটন প্রোজেক্ট।’ যার নেতৃত্বে ছিলেন বিশিষ্ট পদার্থবিজ্ঞানী রবার্ট ওপেনহাইমার। সেই পরমাণু বোমার জেরে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে এখনও বংশানুক্রমে অন্ধত্ব, বধিরতা ও পঙ্গুত্বের মতো নানা ধরনের জটিল অসুখ হয়ে চলেছে।

হাইড্রোজেন বোমা তার চেয়েও অনেক বেশি শক্তিশালী। একটা বিস্ফোরণে একটা ছোট হাইড্রোজেন বোমা একটা বড় শহরকে কয়েক মুহূর্তের মধ্যে একেবারে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করতে পারে। করে দিতে পারে ধু ধু মরুভূমি।

Advertisement

আরও পডুন- হাইড্রোজেন বোমা ফাটাল উত্তর কোরিয়া

সঙ্কট আরও জটিল হল উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক পরীক্ষায়

দেখুন গ্যালারি - আণবিক দানবিক

পরমাণু বোমা আর হাইড্রোজেন বোমা- এই দু’টি শক্তিশালী বোমা বানানো হয় একেবারেই আলাদা দু’টি উপায়ে।

একটির নাম- ‘নিউক্লিয়ার ফিশন’। যে উপায়ে বানানো হয় তুলনায় কম শক্তিশালী পরমাণু বোমা। এই পদ্ধতিতে একটা ক্ষুদ্র পরমাণুকে দুই বা ততোধিক ক্ষুদ্রতর ও হাল্কা পরমাণুতে ভাঙা হয়। তার ফলে বেরিয়ে আসে প্রচুর পরিমাণে শক্তি।

আরেকটি পদ্ধতির নাম- ‘নিউক্লিয়ার ফিউশন’। যে উপায়ে বানানো হয় অনেক বেশি শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমা। এই পদ্ধতিতে দুই বা ততোধিক ক্ষুদ্র পরমাণুকে জুড়ে অনেক বড় ও ভারী পরমাণু বানানো হয়। এতে বেরিয়ে আসে আরও অনেক বেশি শক্তি। তাই হাইড্রোজেন বোমা হয় অনেক বেশি শক্তিশালী। যে হেতু এই পদ্ধতিতে দুই বা ততোধিক হাইড্রোজেন পরমাণুকে জোড়া হয়, তাই এর নাম- ‘হাইড্রোজেন বোমা’।

কোনটা বানানো বেশি কঠিন- পরমাণু বোমা নাকি হাইড্রোজেন বোমা?

এর উত্তরটা হল- হাইড্রোজেন বোমা। কেন কঠিন? কারণ, ‘নিউক্লিয়ার ফিউশন’-এর জন্য প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণ তাপমাত্রা। দশ লক্ষ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি। গবেষণাগারে্ও চট করে যে তাপমাত্রায় পৌঁছতে পারা যায় না। কঠিন জিনিসই তো বেশি কাজের হয়!

তবে ‘ফিশন’ ছাড়া ‘ফিউশন’ হয় না। এর মানে, ‘নিউক্লিয়ার ফিউশন’ পদ্ধতিতে হাইড্রোজেন বোমা বানানোর জন্য যে বিপুল তাপমাত্রার প্রয়োজন, তা ‘নিউক্লিয়ার ফিশন’-এর মাধ্যমে পরমাণু বোমা বানিয়েই জোগাড় করা হয়।

আবার খুব ছোট্ট হাইড্রোজেন বোমাও বানানো যায় বলে হাইড্রোজেন বোমাকে ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যেও পুরে ফেলা যায়। এর ফলে, কোনও এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েও হাইড্রোজেন বোমা সেখানে ফেলে দেওয়া যায়। এখনও পর্যন্ত কোনও দেশই যুদ্ধে হাইড্রোজেন বোমা ব্যবহার করেনি। হিরোশিমা, নাগাসাকি দেখেছিল অনেক কম ভয়াবহতা, পরমাণু বোমা পড়ার ফলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন