ইজ়রায়েলি পণবন্দি এভিয়েটর ডেভিড। ছবি: সমাজমাধ্যম।
শীর্ণকায় চেহারা। পাঁজরগুলি বেরিয়ে এসেছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে, অনাহারক্লিষ্ট শরীর। অশক্ত শরীরে হাতে ধরা একটি বেলচা। তা দিয়ে মাটি খুঁড়ে চলেছেন। দু’বার মাটি তুললেন। একটু থামলেন। কিছু বিড়বিড় করে বলে চললেন। আবার বেলচা দিয়ে মাটি তোলা শুরু করলেন। মাঝে মাঝে হাঁপিয়ে মাটিতে বসে পড়ছেন। একটি সুড়ঙ্গ। মেরেকেটে চওড়ায় তিন ফুট। উচ্চতায় ছয় ফুট। সেই সুড়ঙ্গেই শীর্ণকায় যুবককে দেখা গেল।
এমনই একটি ভিডিয়ো সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, ভিডিয়োটি হামাস প্রকাশ করেছে। সুড়ঙ্গে যে যুবককে দেখা যাচ্ছে, তিনি আর কেউ নন, প্যালেস্টাইনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হাতে বন্দি এক ইজ়রায়েলি যুবক। এই নিয়ে দ্বিতীয় পণবন্দির ভিডিয়ো প্রকাশ করল হামাস। যে ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর ইজ়রায়েলে প্রধানমন্ত্রীর নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে পণবন্দিদের পরিবার এবং আমজনতার মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। (যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)
জানা গিয়েছে, পণবন্দি ওই যুবকের নাম এভিয়েটর ডেভিড। হামাসের বানানো কোনও এক সুড়ঙ্গে তাঁকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। বেলচা দিয়ে মাটি খুঁড়তে খুঁড়তে ডেভিড বলছেন, ‘‘আমি এখন নিজের কবর খুঁড়ছি। প্রতি দিন একটু একটু করে দুর্বল হচ্ছি। মনে হচ্ছে এ বার কবরেই যেতে হবে। এটাই সেই কবর। সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। কবে মুক্তি পাব জানি না। কবে পরিবারের সঙ্গে ঘুমোত পারব জানি না।’’ তার পরই কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় ডেভিডকে। ইজ়রায়েল অবশ্য বলছে, কী ভাবে পণবন্দিদের অনাহারে রাখা হচ্ছে, তাঁদের পরিস্থিতি কেমন— এই দৃশ্য দেখিয়ে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের কৌশল নিচ্ছে হামাস।
হামাসের হাতে এখনও ৪৯ জন বন্দি। ডেভিড তাঁদের মধ্যে এক জন। ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দফতর জানিয়েছে, ডেভিডের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। পণবন্দিদের যাতে সশরীরে ফিরিয়ে আনা যায়, তার জন্য অনবরত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে এ কথাও জানানো হয়েছে। এর আগে আরও পণবন্দির অনাহারক্লিষ্ট চেহারার ছবি প্রকাশ্যে এনেছিল হামাস।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েলে হামলা চালায় হামাস। বহু ইজ়রায়েলি এবং বিদেশি নাগরিককে পণবন্দি করে তারা। সেই ঘটনার পর থেকে হামাসের সঙ্গে ইজ়রায়েলের সংঘর্ষ চলছে।