International News

বয়কটের মধ্যেই পাক প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছাবার্তা মোদীর! টুইট ইমরানের

যা জানাই যেত না যদি না পাক প্রধানমন্ত্রী তাঁর টুইটে প্রধানমন্ত্রী মোদীর পাঠানো শুভেচ্ছা-বার্তার কথা জানাতেন! কারণ, টুইট-প্রেমী মোদী সেই বার্তা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেননি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৯ ১২:৫৭
Share:

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস

পুলওয়ামা কাণ্ড ও বালাকোটে বোমাবর্ষণের পর লোকসভা ভোটের মুখে প্রকাশ্যে পা বাড়ালেন না। গোপনে হাত বাড়ালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ইসলামাবাদের দিকে! শুক্রবার দিল্লি ও ইসলামাবাদে পাকিস্তানের জাতীয় দিবস পালনের যাবতীয় অনুষ্ঠান বয়কট করল ভারত। রটনা, সংবাদমাধ্যমকেও টেলিফোন করে পাক অনুষ্ঠান বয়কট করতে বলা হয়। আর তারই মধ্যে নাকি পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে তাঁর দেশের জাতীয় দিবস পালনের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়ে বার্তা পাঠিয়ে দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। যা জানাই যেত না যদি না পাক প্রধানমন্ত্রী তাঁর টুইটে প্রধানমন্ত্রী মোদীর পাঠানো শুভেচ্ছা-বার্তার কথা জানাতেন! কারণ, টুইট-প্রেমী মোদী সেই বার্তা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেননি। পরে তা নিয়ে সমালোচনায় সরব হন কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতৃত্ব।

Advertisement

গোপনে হলেও, আঞ্চলিক শান্তি ও সুস্থিতি রক্ষায় শুভেচ্ছা-বার্তার মাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাড়ানো হাত ধরতে যে তাঁর কোনও দ্বিধা নেই, বিন্দুমাত্র দেরি না করে তাঁর টুইটে সে কথা বুঝিয়ে দিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। লিখলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মোদীর পাঠানো বার্তা পেয়েছি। জাতীয় দিবসে আমি পাক নাগরিকদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। গণতন্ত্র, শান্তি, সুস্থিতি ও উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে এই উপমহাদেশের মানুষকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে। এই অঞ্চলকে হিংসা ও সন্ত্রাসের পরিবেশ থেকে মুক্ত করতে।’’

Advertisement

প্রতি বছর ২৩ মার্চ দিনটিকে ‘জাতীয় দিবস’ হিসেবে পালন করে পাকিস্তান। এ বারও সেই অনুষ্ঠান হয়েছিল দিল্লিতে পাক হাইকমিশন ও ইসলামাবাদে। কিন্তু শুক্রবার দিল্লিতে পাক হাইকমিশনের অনুষ্ঠান বয়কট করে ভারত। কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তো বটেই, কোনও আমলাও যাননি সেই অনুষ্ঠানে। শোনা যায়, ফোন করে সংবাদমাধ্যমকেও ওই অনুষ্ঠানে যেতে বারণ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে।

কেন বয়কটের সিদ্ধান্ত?

কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়, জম্মু-কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন হুরিয়ত কনফারেন্স নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাই বয়কটের সিদ্ধান্ত।

সরকারি সূত্রে জানা যায়, দিল্লিতে পাক হাইকমিশনের ওই অনুষ্ঠানে ৩০ জন হুরিয়ত নেতাকে আমন্ত্রণ জানান হয়েছে। সংবাদমাধ্যমকে এক সরকারি কর্তা বলেন, ‘‘এটা পাকিস্তানের দ্বিচারিতা। আর তাই ভারতের তরফে কাউকেই ওই অনুষ্ঠানে পাঠানো হয়নি।’’

আরও পড়ুন- ভোটের মুখে ‘নরেন্দ্র মোদী’র মুক্তি নিয়ে সংশয়

আরও পড়ুন- ভোট মিটলেই সুসম্পর্ক: ইমরান​

বিষয়টি নিয়ে কোনও ধোঁয়াশা না রেখে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার গতকাল এক সাংবাদিক সম্মেলনে করে বলেন, ‘‘আমাদের অবস্থান জানা সত্ত্বেও পাকিস্তান হুরিয়ত নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আমরা এটাকে হালকা ভাবে নিচ্ছি না। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ভারতের কোনও প্রতিনিধি ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন না।’’ পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারও ইসলামাবাদের ওই অনুষ্ঠান বয়কট করেন।

হুরিয়তের বেশির ভাগ নেতাই এখন বন্দি অথবা আত্মগোপন করে রয়েছেন। গতকাল তাদের সামনের সারির কোনও নেতাকেই দেখা যায়নি অনুষ্ঠানে। মনে করা হচ্ছে, ধরপাকড়ের ভয়ে তাঁদের কেউ আসেননি। দিল্লিতে কাল মহম্মদ হাসান আন্টু নামে হুরিয়তের এক নেতাকে গ্রেফতার করে চাণক্যপুরী থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

সমালোচনায় সরব বিরোধীরা

ইমরানের টুইটের পরেই প্রধানমন্ত্রী মোদীর ‘দ্বিচারিতা’র সমালোচনায় সরব হন কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলের নেতারা। কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী টুইটে লেখেন, ‘‘জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে সরকারের এই দ্বিচারিতা আমাদের খুব একটা অবাক করেনি!’’

জম্মু-কাশ্মীরের ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা, প্রাক্তন মুখ্য়মন্ত্রী ওমর আবদুল্লা টুইটে কটাক্ষ করেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছে কোনটা নীতি আর কোনটা নীতি নয়, তা বোঝা দুষ্কর!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement